সামুদ্রিক খননে বাড়ছে পরিবেশদূষণ, জাতিসংঘের দরবারে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র

আয়তন মাত্র ২১ বর্গ কিলোমিটার। অর্থাৎ, কলকাতারও প্রায় এক দশমাংশ। নাউরু (Nauru)। অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রটিই এবার সরব হল মহাসাগরীয় খনন নিয়ে। শুধু স্থলভাগেই নয়, পৃথিবীর সমুদ্রে গর্ভে সঞ্চিত রত্নভাণ্ডারের খনন শুরু হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। বিভিন্ন মূল্যবান বিরল ধাতুর খনিক আকরিক থেকে শুরু করে জীবাশ্ম জ্বালানির খোঁজে সমুদ্রগর্ভে খনন চালাচ্ছে প্রথম বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলি। পরিসংখ্যান বলছে, আগামী এক দশকের মধ্যেই চারগুণ বৃদ্ধি পাবে এই খননের মাত্রা। অথচ, সামুদ্রিক খনন (Sea Mining) নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট নিয়মাবলী নেই আন্তর্জাতিক সংগঠনের। এই ঘটনার প্রতিবাদেই জাতিসংঘের শাখা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সিবেড অথোরিটিকে বিশেষ চিঠি পাঠাল দ্বীপরাষ্ট্রটি। 

১৮৭০-এর দশকে গবেষণা ও অধ্যয়নের বিষয় হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল সমুদ্রবিদ্যা। তারপর থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তার পরিধি। সামুদ্রিক দূষণ এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের অস্তিত্বের সম্পর্কেও হয়েছে বহু গবেষণা। কিন্তু সমুদ্রগর্ভে খননকার্যজনিত দূষণ নিয়ে সেইভাবে কোনো বিশেষ গবেষণা বা হেলদোল দেখা যায়নি কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যেই। এমনকি সামুদ্রিক খননের সময় কোনো বিপর্যয় বা দুর্ঘটনা ঘটলে কীভাবে তার প্রতিকার করা হবে, সে ব্যাপারেও কোনো নির্দেশাবলী নেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। 

সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সামুদ্রিক খনন যে আবশ্যিক, তা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই নাউরুর। এমনকি নাউরুর সামুদ্রিক অঞ্চল লিজ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন খননকার্য শুরু করেছিল ২০১৯ সালেই। তবে এই খননকার্যের জন্য কী ধরনের পরিবেশগত ক্ষতি হতে পারে বা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অজানা মানুষের কাছে। এমনটাই অভিমত নাউরু রাষ্ট্রপতির। আর সেই কারণেই বিশেষ নিয়মাবলী এবং শর্তাবলী তৈরির জন্য জাতিসংঘের দ্বারস্থ হয়েছে রাষ্ট্রটি। 

এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছেও পৃথকভাবে দ্বারস্থ হয়েছিল নাউরু। খননকার্যজনিত দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও দিয়েছিল আমেরিকা ও ইউরোপীয় আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। তবে বিশ্বব্যাপী স্থায়ী প্রবিধান লিখিত হোক, বর্তমানে এটাই দাবি ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রটির। উল্লেখ্য, নাউরুর এই আবেদন গৃহীত হয়েছে জাতিসংঘের দরবারে। তা সম্পূর্ণ পর্যালোচনার পরই বিশেষ বিধিনিষেধ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সিবেড অথোরিটি। ২০২৩ সালের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে বিশেষ টাস্ক ফোর্সকে। এখন দেখার, কত দ্রুত এই আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন করে জাতিসংঘ…

আরও পড়ুন
পরিবেশ ও বিদ্যুৎ বাঁচাতে সৌরশক্তি-চালিত এসি, পথ দেখাচ্ছেন দিল্লির বিজ্ঞানী

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
সুপারি পাতা থেকে পরিবেশবান্ধব বাসন, দিনবদলের স্বপ্ন ‘দৃষ্টিহীন’ ভারতীয়ের

More From Author See More