বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্মৃতি হারিয়ে ফেলা যেন আজকের সময়ের দস্তুর। ডাক্তারি পরিভাষায় এই রোগের নাম ডিমেনশিয়া। তবে কীভাবে এই রোগ মানুষের মস্তিষ্কে বাসা বাঁধা, তার সঠিক ধারণা আজও চিকিৎসকদের কাছে নেই। নিদ্রাল্পতার সঙ্গে এই রোগের সম্পর্কের কথা আলোচিত হলেও সেই সম্পর্ক ঠিক কেমন, তা জানা ছিল না। সম্প্রতি এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিলেন জার্মানির একদল স্নায়ুবিজ্ঞানী। নেচার কমিউনিকেশন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৫০-৬০ বছর বয়সে যেসমস্ত মানুষের ঘুমের সময় কমে যায়, ৭০ বছরের মধ্যেই তাঁদের ডিমেনশিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
বার্লিন শহরের ৮ হাজার মানুষকে ২৫ বছর ধরে পর্যবেক্ষণের মধ্যে রেখে অবশেষে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণার লক্ষই ছিল নিদ্রাল্পতার সঙ্গে ডিমেনশিয়ার সম্পর্ক স্থাপন করা। এই ২৫ বছর ধরে প্রত্যেকের ঘুমের সময়ের হিসাব রেখেছেন বিজ্ঞানীরা। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যেসমস্ত মানুষ দিনে ৭ ঘণ্টা ঘুমিয়েছেন তাঁদের মধ্যে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশ কম। অন্যদিকে যাঁরা ৫০-৬০ বছর বয়স থেকেই তার থেকে কম সময় ঘুমান, তাঁদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা অন্তত ৩০ শতাংশ বেশি।
ডিমেনশিয়া রোগীদের মধ্যে অনিদ্রার প্রবণতা অনেক সময়েই দেখা যায়। তবে এই ঘটনাকে ডিমেনশিয়ারই একটি উপসর্গ হিসাবে মনে করতেন অনেকে। সেই সম্ভাবনাও অবশ্য একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না স্নায়ুবিজ্ঞানীরা। কিন্তু স্মৃতি হারিয়ে যাওয়ার অন্তত ২০ বছর আগে তার উপসর্গ দেখা দেওয়া অনেকটাই অসম্ভব বলে মনে করছেন তাঁরা। অতএব এটি নিছক উপসর্গ নয়, রোগের কারণও বটে। এর মধ্যে সারা পৃথিবীজুড়েই কর্মব্যস্ত মানুষের জীবনে ঘুমের সময় কমে আসছে। এখন এই প্রবণতা যদি ডিমেনশিয়ার মতো রোগের কারণ হয়, তাহলে দুশ্চিন্তার কারণ অনেকটাই বেশি বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় না মস্তিষ্ক, প্রমাণ দিলেন গবেষকরা