দেশ, রাজ্য বা জাতি হিসেবে তো বটেই, ব্যাক্তিগত ক্ষেত্রেও একজন মানুষের প্রয়োজন স্বাধীনতার। স্বাধীনতা মানে নিজের মতো করে বাঁচা, কারও শৃঙ্খলে নিজেকে না বেঁধে রাখা। কিন্তু ইতিহাস সব সময় সেই কথা বলে না। দাসত্বও মানব সভ্যতার ইতিহাসের এক দীর্ঘ কালো অধ্যায়। পৃথিবীর নানা দেশে দাস ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। এখনকার শক্তিশালী, ‘উন্নত’ দেশ আমেরিকাও তার ব্যতিক্রম ছিল না।
আমেরিকায় দাসত্বের ইতিহাস শুরু হয়েছিল ১৬১৯ সাল থেকে। সেই বছরেই প্রথমবার ২০ জন আফ্রিকানকে দাস হিসেবে আমেরিকায় নিয়ে আসা হয়। কালো চামড়াদের ওপর নিপীড়নের সেই শুরু। ১৭০০ সালে এসে সেই প্রথা আরও রমরমিয়ে বাড়ে। পাল্লা দিয়ে বাড়ে দাস আমদানির সংখ্যা। এমনও সময় এসেছে, যখন আফ্রিকা থেকে দুই লক্ষেরও বেশি মানুষকে দাস হিসেবে আমেরিকায় পাঠানো হয়েছে। মূলত তামাক, চিনি, বস্ত্র ইত্যাদি শিল্পে তাদের কাজে লাগানো হত। ঠিকমতো কাজ না করলেই, চলত মারধোর। কখনও কখনও মেরেও ফেলা হত তাদের।
আমেরিকা স্বাধীন হওয়ার পর, ১৮০৮ সালে দাস আমদানি-রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু ব্যবসা বন্ধ হয়নি। ১৮৬০ সালের জনগণনা অনুযায়ী, আমেরিকায় প্রায় চল্লিশ লাখের মতো দাস ‘বসবাস’ করতেন। ১৮৬১-৬৫ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের অন্যতম কারণ ছিল এই দাসপ্রথা। পরবর্তীকালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ২৪৬ বছরের অভিশপ্ত এই প্রথা থেকে মুক্ত হয় আমেরিকা।