খবরের কাগজে হোক বা ম্যাগাজিন, টিভি— নানা জায়গায় আমরা সিঙ্গল মাদারদের কাহিনি শুনতে পাই। শুধু বিখ্যাত লোকেরাই নন, আমাদের চারপাশেও এমন মানুষ রয়েছেন। কেবলই সিঙ্গল মাদার? সিঙ্গল ফাদারও তো রয়েছেন অনেকে। তবে শুধু মানুষই নন, বেশ কিছু জীবজন্তুও রয়েছে উদাহরণে। বাংলার জলময়ূর এমনই একটি সিঙ্গল ফাদারের জীবনের গল্প।
নামে ময়ূর হলেও, তার সঙ্গে কোনো মিল নেই এই পাখিটির। আকারেও তুলনায় বেশ ছোটো। জলেই এদের জীবন কাটে। বিশেষত, পদ্মপাতার ওপরেই এদের চলাফেরা। থাকার মধ্যে আছে একটা লম্বা বাহারের লেজ। আসল ময়ূরের মতো পেখম মেলে না ঠিকই, কিন্তু সেটাই তাকে করে তুলেছে জলময়ূর।
তবে এদের জীবনে স্ত্রী জলময়ূরের থেকে পুরুষ জলময়ূরের ভূমিকা অনেক বেশি থাকে। শুরু হয় সংসার বাঁধা দিয়ে। পুরুষ জলময়ূরের প্রতি আকৃষ্ট হলে স্ত্রী সেখানে যায়, সংসার পাতে। পদ্মপাতাতেই চলে তাদের জলজ জীবন। কিন্তু সেটা সাময়িক। চারটে ডিম পেড়েই চিরকালের মতো পুরুষটিকে ছেড়ে চলে যায় স্ত্রী জলময়ূর। আর আসে না…
তারপরের গল্প একটি সিঙ্গল ফাদারের গল্প। হ্যাঁ, পাখিদের সিঙ্গল ফাদার। ডিমে তা দেওয়া থেকে বাচ্চাদের বড় করা— সমস্তটাই একা করে পুরুষ জলময়ূরটি। টানা ২৬ দিন তা দেওয়ার পর সন্তানদের খাওয়ায় সে, আগলে রাখে। ওঁত পেতে থাকে অন্যান্য পাখিরাও। সেইসব সামলে, বড় হয় বাচ্চারা। তারপর তারাও চলে যায়।
এইভাবেই চলতে থাকে তাদের জীবন। গ্রাম বাংলায়, বিশেষ করে বাংলাদেশে এই পাখি দেখা যায়। তবে সংখ্যা কমছে জলময়ূরের। তাদের সংরক্ষণের কথা উঠছে নানা জায়গা থেকে।