গত বৃহস্পতিবারই হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। ক্রমশ হাঁটছিলেন সুস্থতার পথে। তবে হঠাৎ করেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হল তাঁর। প্রশান্ত ভট্টাচার্য (Prasanta Bhattacharya)। আশঙ্কাজনকভাবে রক্তে অক্সিজেন মাত্রা হ্রাস পাওয়ায় গতকাল হাসপাতালে ভর্তি করতে হল সত্তরের দশকের অন্যতম সঙ্গীতশিল্পীকে। বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রবীণ শিল্পী।
কিংবদন্তি শিল্পীর পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়, ইন্টারটিশিয়াল লাং ডিজিজ বা আইএলডিতে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছেই। সেইসঙ্গে, ফুসফুসেও ছড়িয়েছে সংক্রমণ।
রবীন্দ্রসঙ্গীত, যাত্রা, গণসঙ্গীত এবং লোকসঙ্গীত— বাংলার সংস্কৃতিজগতের একাধিক ক্ষেত্রেই একসময় শিল্পের ফুল ফুটিয়েছেন প্রশান্ত ভট্টাচার্য। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন এআইআর তথা অল ইন্ডিয়া রেডিও-তে। সর্বভারতীয় বেতারে তাঁর অনুষ্ঠান ‘অনুরোধের আসর’ ছিল সেসময়কার ট্রেডমার্ক। এমনকি জামশেদপুর এআইআর স্থাপনের পর প্রথম আমন্ত্রিত কণ্ঠশিল্পী হিসাবে সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন তিনি।
বাড়িতে সঙ্গীতচর্চার পরিবেশ তো ছিলই, পরবর্তীকালে সুচিত্রা মিত্র, পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ এবং স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের ভাইপো সোমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছেও সঙ্গীতের পাঠ নিয়েছেন প্রশান্ত ভট্টাচার্য। সত্তরের দশকের অস্থির সময়ে রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি তাঁর অবাধ যাতায়াত লেগে থাকত গণসঙ্গীতের দরবারেও। এপারের নকশাল বাড়ি আন্দোলন কিংবা ওপার বাংলার মুক্তিযুদ্ধ— দুই বাংলাতেই আগুন জ্বালিয়েছিল তাঁর প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর, সুর। সেসময় একাধিক সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজন করে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে অর্থ সাহায্যও তুলে দিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন
শুধু রাশিবিজ্ঞানই নয়, রবীন্দ্র-গবেষণাতেও সমান সাবলীল প্রশান্তচন্দ্র
শুধু গণসঙ্গীত কিংবা রবীন্দ্রচর্চাই নয়— তিনি যে বাংলার সংস্কৃতিজগতের মহীরুহ, তা বলার অপেক্ষা থাকে না। এমন একজন ব্যক্তিত্বের হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতিতে চিন্তিত শিল্পীমহল। প্রবীণ শিল্পীর দ্রুত আরোগ্য প্রার্থনা করছেন অনুরাগীরা…
আরও পড়ুন
প্রথম প্রেমিকের নামেই ভাইপোর নামকরণ; না-পেয়েও রবীন্দ্রনাথকে ভোলেননি নলিনী
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
রবীন্দ্রনাথের ভাইপোর কাছে শিখেছেন গান, মুক্তিযুদ্ধের সময় কনসার্টের আয়োজকও তিনিই