রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে একটি মানুষ। হাতে ধরা একটি প্ল্যাকার্ড। আর সেই প্ল্যাকার্ডের উপর শুধু পেনের আঁচড়ে আঁকা একটি হাসিমুখ। নেটিজেনদের ভাষায়, স্মাইলি। রোজ সারা পৃথিবী জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ যে ছবি একে অপরকে পাঠাচ্ছেন। অপরাধ এতটুকুই। আর তার জন্যই থানা-পুলিশ থেকে শুরু করে আদালত পর্যন্ত গড়াল বিষয়টি। সম্প্রতি সিঙ্গাপুর প্রশাসনের হাতে এমনই নিগ্রহের স্বীকার হলেন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার কর্মী জোলোভান হোয়্যাম।
প্ল্যাকার্ডে সাধারণ কিছু বক্তব্য নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা কোনো দেশেই অস্বাভাবিক নয়। একমাত্র দেশটির নাম সিঙ্গাপুর হলে অন্য কথা। এখানে যেকোনো বক্তব্য জনগণের সামনে রাখতে গেলে পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। জোলোভান অবশ্য বুদ্ধি করেই কোনো বক্তব্য রাখেননি। তিনি শুধু একটি স্মাইলি এঁকেছেন। তবে তার মধ্যে একটা বক্তব্য অবশ্যই ছিল।
সম্প্রতি একটি মার্কিন তেল কোম্পানির খননকার্যকে ঘিরে অসন্তোষ ছড়িয়েছে সিঙ্গাপুরে। ইতিমধ্যে দুই কিশোরী প্রতিবাদ করে সামাজিক মাধ্যমে বক্তব্য রাখায় পুলিশের নিগ্রহের মুখে পড়েছে। তাদের মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই কিশোরীদের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন জোলোভান। তাঁর কথায়, তিনি নিজে কোনো প্রতিবাদ করেননি। দুই কিশোরীর প্রতিবাদ দেখে নিজের খুশি ব্যক্ত করেছেন মাত্র। তবে সংকেতের আড়ালে থাকা এই বক্তব্য বুঝতে অসুবিধা হয়নি সিঙ্গাপুর পুলিশের। বিশেষ করে, মানুষটি যে জোলোভান হোয়্যাম। এর আগে একাধিকবার মানবাধিকার রক্ষার লড়াইতে নেমে জেলও খেটেছেন তিনি।
তবে জোলোভানকে গ্রেপ্তারের পরই সিঙ্গাপুর জুড়ে স্মাইলির ঝড় উঠেছে। রাস্তাঘাটে, সামাজিক মাধ্যমে স্মাইলিই এখন প্রতিবাদের নতুন ভাষা। এই ভাষাকে আটকাতে কি আবার কোনো আইন আনবে সরকার? নাকি এভাবেই ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবাদের ভাষা?
Powered by Froala Editor