২০২০ সালেই জাপানে অলিম্পিকের আয়োজন প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার আগেই এসে পড়ল অতিমারী করোনা। তবে এই অতিমারী শুরুর আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে জার্মানির স্টুয়াটগার্টে অনুষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে কালিনারি অলিম্পিক। হ্যাঁ, কালিনারি অর্থাৎ রন্ধনশিল্প। আর তার উপরেই অলিম্পিকের আয়োজন। ১৯০০ সাল থেকেই প্রতি ৪ বছর অন্তর এই প্রতিযোগিতা চলে আসছে। প্রথমে প্রদর্শনী হিসাবে শুরু হলেও ক্রমশ একাধিক প্রতিযোগিতা শুরু হয়। তবে ভারতের অনেকেই এই প্রতিযোগিতার কথা জানেন না। অথচ এই ২০২০ সালে ভারতেই এসেছে ৪টি রৌপ্যপদক। প্রতিনিধি অবশ্য একজনই। ১৬ বছরের সেই কিশোরের নাম যশবন্ত কুমার উমাশঙ্কর।
যশবন্তের এই ব্যতিক্রমী চিন্তার পিছনে সবচেয়ে বড়ো ভূমিকা অবশ্য তার বাবার। উমাশঙ্কর ধর্মপাল পেশায় শেফ। যশবন্ত ছোট থেকেই দেখে আসছে, বাবা কীভাবে নানা সবজি, ফল, চকোলেট দিয়ে নকশা তৈরি করেন। অথবা কীভাবে সুন্দর করে পরিবেশন করেন খাবার। এইসব দেখেই তার আকর্ষণ তৈরি হয়। আর উমাশঙ্করও কোনোদিন ছেলের ইচ্ছায় বাধা দেননি। এরপর দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার ঠিক আগেই এসে যায় কালিনারি অলিম্পিকের প্রতিযোগিতা। সেখানেও ছেলের অংশগ্রহণের বিষয়ে সবরকম সাহায্য করেছেন উমাশঙ্কর। অবশ্য এর মধ্যেও একটা দুঃখ থেকে গিয়েছে তাঁর। যশবন্ত এই আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে ভারতের একমাত্র প্রতিনিধি হিসাবে হাজির থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য পাননি তিনি।
মোট চারটি বিভাগে প্রতিদ্বন্দিতা করেছে যশবন্ত। এর মধ্যে দুটি বিভাগে নির্দিষ্ট সময়ের সঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে ফল এবং সবজির উপর খোদাই করে শিল্পাঙ্কন করতে হয়েছে। অপর দুটি বিভাগে অবশ্য সময়ের চাপ ছিল না। কিন্তু সেখানে দেখা হয়েছে প্রতিযোগীর মৌলিকত্ব। আর এই চারটি বিভাগেই জুড়িদের বিচারে দ্বিতীয় স্থানে ছিল যশবন্ত। সম্প্রতি দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেও ভালো ফল করেছে যশবন্ত। তবে যশবন্তের ইচ্ছা, সেও বাবার মতো শেফ হবে। তবে এখনও অনেকটাই শেখা বাকি। খাবারের মধ্যেও যে সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে, তাকেই হাজির করতে হবে সকলের সামনে।
Powered by Froala Editor