আগামী বছর থেকে সিকিমের (Sikkim) কোথাও আর পাওয়া যাবে না মিনারেল ওয়াটারের (Mineral Water) বোতল। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিএস তামাং। তাঁর কথায়, প্রাকৃতিক কারণেই সিকিমে পাণীয় জলের অভাব নেই। পৃথিবীর খুব কম জায়গাতেই এমন সুযোগ পাওয়া যায়। প্রকৃতির এই আশীর্বাদকে অমান্য করে ক্রমাগত প্লাস্টিকের বোতলে বন্দি মিনারেল ওয়াটার ব্যবহার করে গেলে একদিন প্রকৃতিও মুখ ফিরিয়ে নেবে। আর তাই পরিবেশ বাঁচানোর স্বার্থেই এই উদ্যোগ নিয়েছে সিকিম সরকার।
রাস্তাঘাটে হঠাৎ তেষ্টা পেলে এক বোতল কিনে নিতে অভ্যস্ত সকলেই। কিন্তু জল শেষ হয়ে গেলে সেই বোতলের কী হয়? রাস্তাঘাটে স্তূপের মতো জমা হয় সেই আবর্জনা। পরিবেশকে কুৎসিত করে তোলে, বিষাক্তও করে। তাই যে কোনো রকমের প্লাস্টিক সামগ্রী, যা কেবল একবার ব্যবহার করা যায়, সেই সবই নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটছে সিকিম সরকার। আর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই প্রথমে মিনারেল ওয়াটারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল।
এর আগেই অবশ্য রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে মিনারেল ওয়াটার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে উত্তর সিকিমের বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র লাচেনও। মিনারেল ওয়াটারের বদলে সেখানে সরকারিভাবে রাস্তায় রাস্তায় জল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে সেই উদ্যোগে সাফল্যও মিলেছে। আর এরপরেই রাজ্যজুড়ে মিনারেল ওয়াটার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২ অক্টোবর গান্ধীজয়ন্তীর দিন এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই মাস থেকেই আর পাইকারি দরে কোথাও মিনারেল ওয়াটার কিনতে পাওয়া যাবে না। কিন্তু যে সমস্ত খুচরো বিক্রেতা ইতিমধ্যে জলের বোতল কিনে রেখেছেন, তাঁদের ব্যবসা যাতে কোনোভাবে মার না খায়, সেদিকেও নজর রেখেছে সরকার। তাই ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত খুচরো ব্যবসা করা যাবে। তবে আগামী জানুয়ারি মাস থেকে কোনোরকম মিনারেল ওয়াটারের বোতল ব্যবহার করা যাবে না।
এর আগেও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিকিম সরকার। রাজ্যের সমস্ত কৃষিজমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সিকিমের সমস্ত কৃষিজমিই তাই এখন অর্গ্যানিক ফার্মল্যান্ড। সেইসঙ্গে মিনারেল ওয়াটার নিষিদ্ধ করার মধ্যে দিয়ে আবারও একবার দৃষ্টান্ত তৈরি করল সিকিম।
Powered by Froala Editor