আমেরিকার চাকরি ছেড়ে, ভারতে পরিবেশ রক্ষার ‘অন্যরকম’ লড়াই তরুণীর

তিনি এলেন। ছাড়লেন। বদল আনলেন। না, কোনও বিখ্যাত রাজনীতিবিদ নন। কথা হচ্ছে শ্রুতি আহুজার সম্পর্কে। তবে সমাজের বদল নয়, পরিবেশের সুরক্ষার জন্য জঞ্জাল থেকে এলপিজি গ্যাস তৈরি করছেন এই আমেরিকা ফেরত আন্ত্রেপেনিওর। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। শুধুমাত্র এই কাজ করার জন্য আমেরিকার আরামের চাকরি ছেড়েছেন তিনি।

রোজ বিপুল পরিমাণ জঞ্জাল তৈরি হয় ভারতে। যেগুলোর জায়গা হয় রাস্তার ধারের ময়লা ফেলার জায়গায়, নয়তো ওয়েস্ট ম্যানেজ সিস্টেমের জঞ্জালের পাহাড়ে। বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ যে হয় না, তা নয়। তবে সেই বর্জ্য পোড়ানোর ফলে যে বিপুল কার্বন ডাই অক্সাইড-সহ অন্যান্য নির্গত হয়, তার ফলে পরিবেশ এমনিই দূষিত হয়ে পড়ে। আর এই ব্যাপারটাই নজরে এসেছিল শ্রুতি আহুজার। আমেরিকায় কাজের সূত্রে যাওয়ার পর থেকেই এই চিন্তাটা তাঁর মাথায় ঘুরছিল। অবশ্য সেই চিন্তাই এখন একটা বড় আকার নেবে, তা কে জানত?

২০১০ সালে ভারতে ফিরে আসার পর, সে নিজের কোম্পানি শুরু করার পরিকল্পনা করতে থাকে। বিষয় সেই একটাই, বর্জ্যকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়। সেই আইডিয়া পাওয়া গেল পোলট্রি ফার্ম থেকে। তাঁর সেই গবেষণায় উঠে এল পোলট্রি থেকে উৎপন্ন হওয়া বর্জ্যের বিপুল পরিমাণের কথা। শ্রুতির গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি বছর ভারতে ২৩ মিলিয়ন টন পোলট্রির বর্জ্য তৈরি হয়। কিন্তু কোনওরকম প্রক্রিয়াকরণ হয় না সেগুলোর। সেখান থেকেই শুরু হল তাঁর পথ চলা। শুরু হল আহুজা ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের। সেই ২০১২ সাল থেকে শ্রুতি এবং তাঁর এই কোম্পানি জৈব বর্জ্য থেকে এলপিজি গ্যাস তৈরি করছেন। ১২ হাজার টন বর্জ্য পরিণত হচ্ছে ৬০০ টনেরও বেশি এলপিজিতে।

আমেরিকার সুখের চাকরির জীবন ছেড়ে, শুধুমাত্র পরিবেশ রক্ষার ব্রত নিয়ে ভারতে কাজ করে যাচ্ছেন শ্রুতি আহুজা। সেই ছোট্ট শুরুটা আজ অনেক বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। গোটা ভারতে ১৬টি বড় বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট চালান তিনি। নিউ ইয়র্কের বাফেলো ইউনিভার্সিটিতে পড়া মেয়েটির স্বপ্ন এখন সত্যি হওয়ার দিকে।