“আগর ফেরদৌস বর রু এ জমিন অস্ত
হামিন অস্ত-ও, হামিন অস্ত-ও, হামিন অস্ত…!”
তাজমহলের মর্মর শ্বেতশুভ্র রূপ দেখে আমির খসরুর এই লাইন দুটিই মনে আসে অনেকের। শাহজাহানের সেই সৃষ্টি আজও কত লোককে মোহিত করে রেখেছে। এই গল্পও শাহজাহানের। তবে ইনি তাজমহল তৈরি করেননি। বরং তাঁর গ্রাম, তাঁর অঞ্চলকে সবুজে ভরিয়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশের শাহজাহান বিশ্বাসের এই কাহিনি অবশ্য শুরু হয়েছিল বিদেশ থেকে। ১৯৭৭ সালে স্কুল পাশ করার পর মালয়েশিয়ায় কাজ করতে চলে যান তিনি। দেড় বছর কাজ করেছিলেন সেখানে। আর সেখানেই তিনি দেখেন সবুজের সৌন্দর্য। পরিকল্পনা করে, সাজিয়ে মালয়েশিয়ায় গাছ লাগানো হয়েছিল। যেমন ছিল পরিবেশের পক্ষে ভালো, তেমনই ছিল দৃষ্টিনন্দন। এই ব্যাপারটাই মনে ধরে শাহজাহানের। বাংলাদেশে তাঁর নিজের কোউরি গ্রামেও যদি এরকমটা করা যায়!
যেমন ভাবা, তেমনই কাজ। গ্রামে চলে এসে নিজের জমিতে নার্সারি খুললেন তিনি। গোটা জমি সাজালেন মেহগনি, নারকেল, নিম-সহ গাছগাছালিতে। শুধু নিজের জমি নয়, পরবর্তীতে এই কাজ ছড়িয়ে দিলেন বাইরেও। স্কুল কলেজে, মসজিদে, রাস্তার ধারে সুন্দর করে লাগালেন গাছ। শুধু নিজেই করলেন না, আরও লোকজনকে উৎসাহিতও করলেন। এই নার্সারি থেকে তাঁদের সবারই আয় হতে লাগল। সেই সঙ্গে সবুজে সবুজে ছেয়ে যেতে লাগল হরিরামপুর উপজেলার এই গ্রামটি।
৫৭ বছরের শাহজাহান বিশ্বাস এখনও অবধি প্রায় ৬০ হাজারেরও বেশি গাছ লাগিয়েছেন। এখনও থেমে যাননি তিনি। তাজমহলের থেকে কি কম সুন্দর এই সবুজ দৃশ্য?