যৌনকর্মীরাও ‘কর্মরতা মহিলা’, ঘোষণার দাবি মানবাধিকার কমিশনের

ওঁদের জীবিকা ‘বে-আইনি’। কিন্তু ওঁরা কেউই অপরাধী নন। তবুও সমাজের স্বাভাবিক জীবন থেকে ওঁদের বাস বেশ খানিকটা দূরে। আজও আমরা যৌনকর্মীদের দিকে বাঁকা দৃষ্টিতে তাকাতেই অভ্যস্ত। তবে এই ব্যবস্থায় বদল আসা জরুরি। এবং সাম্প্রতিক মহামারী পরিস্থিতি সেই প্রয়োজনীয়তা আরও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বলেই মনে করছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কর্তারা।

সম্প্রতি কেন্দ্র সরকারকে লেখা একটা অনুদেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, যৌনকর্মীদেরও কর্মরত মহিলার সম্মান দিতে হবে। কোভিড পরিস্থিতিতে মহিলাদের অধিকার সংক্রান্ত অনুদেশের ১১ পাতার রিপোর্টে এই দাবি জানানো হয়। আসলে বর্তমান পরিস্থিতিতে বারবার দেখা গিয়েছে কীভাবে পেশাগত কারণে বারবার বৈষম্যের মুখে পড়েছেন যৌনকর্মীরা। সরকারের সাহায্যও তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। অনেক যৌনকর্মীর কাছে রেশন কার্ড বা পরিচয়পত্র পর্যন্ত নেই। এই পরিস্থিতি থেকে অসহায় মহিলাদের বাঁচাতে হলে উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই।

দেশে যৌনকর্মীদের যে ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যে বেঁচে থাকতে হয়, তার আভাস আন্দাজ করা কঠিন। এর মধ্যেই নানা সংগঠনের তরফ থেকে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হয়ে আসছিল সরকারের কাছে। দাবির সারবস্তু ছিল নানারকম। তবে মূল কথা হল, মানুষের মতো করে বাঁচার অধিকার দিতে হবে তাঁদেরও। এমনই ১৯টি সংগঠনের মিলিত উদ্যোগে তৈরি হয় মানবাধিকার কমিশনের বর্তমান খসড়াটি। এতদিন পর নিজেদের দাবি পূরণের সম্ভাবনায় খুশি যৌনকর্মীরাও। তবে এর মধ্যেও খানিকটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। যৌনকর্মীদের কর্মরতা মহিলার স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থই হল দেহ-ব্যবসাকে আইনি অনুমোদন দেওয়া। আর এর ফলে পক্ষান্তরে নারীপণ্যায়নের রাস্তাই তো প্রসস্ত হবে। আরও ফুলে ফেঁপে উঠবে দেহ-ব্যবসা। যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হচ্ছে তো?

Powered by Froala Editor

More From Author See More