ইংল্যান্ড-জুড়ে প্রদর্শিত হচ্ছে সত্যজিতের ৩৮টি সিনেমা, নেপথ্যে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট

কিছুদিন আগের কথা। সত্যজিতের (Satyajit Ray) জন্মশতবর্ষে বিশেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছিল কান চলচ্চিত্র উৎসব। প্রদর্শিত হয়েছিল বাঙালি পরিচালকের কালজয়ী সিনেমা ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’। তাছাড়াও আরব, সাংহাই-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও দেখানো হয়েছিল সত্যজিতের নানান ছবি। এবার সত্যজিতের জন্মশতবর্ষকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে বড়ো উদযাপনের আয়োজন হতে চলেছে লন্ডনে। একটি-দুটি নয়, ব্রিটেনের বিভিন্ন সিনেমাহলে সত্যজিৎ রায়ের তৈরি ৩৮ ছবিই দেখাতে চলেছে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট (British Film Institute)।

গত ২০২০ সালের কথা। সত্যজিতের জন্মশতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে বিশেষ পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিল বিএফআই। ঠিক ছিল ২০২১ সালের ২ মে থেকেই শুরু হবে এই উৎসব। তবে মহামারীর কারণে শেষ পর্যন্ত এই চলচ্চিত্র উৎসবকে স্থগিত রাখতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ। এক বছর পিছিয়ে দেওয়া হয় উৎসবের সূচি। 

গত ৫ জুলাই থেকেই শুরু হয়েছে বিএফআই-এর এই বিশেষ উৎসব— ‘সত্যজিৎ রায় : দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অফ দ্য ফিল্ম’। উৎসবের সূচনা হয়েছে অপু ট্রিলজির প্রথম সিনেমা ‘পথের পাঁচালী’ দিয়ে। ১৯৫৬ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল এই ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র। ‘সেরা মানব দলিল’ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছিল সত্যজিতের এই ছবিকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্রিটেনে সমালোচকদের কাছে সেভাবে সমাদর পায়নি ‘পথের পাঁচালী’। হয়তো ঔপনিবেশিক মনোভাবই তার অন্যতম কারণ। এবার সেই পাপস্খলন করতে চলেছে বিএফআই। এমনটাই জানাচ্ছেন উৎসবের মূল পরিকল্পক জাস্টিন জনসন স্বয়ং।

‘পথের পাঁচালী’-র পর কালানুক্রমে প্রদর্শিত হবে সত্যজিতের প্রতিটি সিনেমাই। শুধু বদলে যাবে প্রেক্ষাগৃহ। বিগত এক বছর ধরেই বিভিন্নভাবে ঐতিহাসিক ছবিগুলির প্রিন্ট সংগ্রহ করেছে বিএফআই কর্তৃপক্ষ। তবে খুব কিছু সহজ ছিল না সেই কাজ। অ্যাকাডেমি ফিল্ম আর্কাইভের সঙ্গে জুটি বেঁধে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে ৩৫ মিলিমিটার ফিল্ম। তাছাড়াও ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র সংরক্ষণাগারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সত্যজিতের তিনটি সিনেমাকে ফোর-কে রেসোলিউশনের চেহারা দিয়েছে বিএফআই। 

আরও পড়ুন
Cannes-এর দরজা ঠেলে: সত্যজিৎ-জাদুতে আবারও মুগ্ধ আন্তর্জাতিক দর্শক

চলচ্চিত্র ছাড়াও বেশ কয়েকটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। সেগুলির সবগুলির সংরক্ষণ সম্ভব না হলেও, ‘টু’, ‘সিকিম’-সহ কয়েকটি তথ্যচিত্রের প্রিন্ট সংগ্রহ করেছে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট। দেখানো হবে সেগুলিও। পাশাপাশি সত্যজিৎ স্মরণে বক্তৃতা দিতে লন্ডনে হাজির হবেন অপর্ণা সেন। সবমিলিয়ে এ এক বিপুল আয়োজন। ১৯৮৩ সালে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বিএফআই ফেলোশিপ’ প্রদান করা হয়েছিল সত্যজিৎকে। এবার আরও একবার সত্যজিৎকে ভিন্নভাবে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করল বিএফআই…

আরও পড়ুন
‘অপরাজিত’ সত্যজিৎ ও বাংলা চলচ্চিত্রের পদাবলী

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
একুশে ফেব্রুয়ারির সত্যজিৎ