ধূধূ প্রান্তরে ধুলো ওড়াচ্ছেন একলা অশ্বারোহী। পেরিয়ে যাচ্ছেন গ্রাম, শহর, জনপদ। মাঝে মাঝে সরাইখানায় বিশ্রাম। তারপর তেজিয়ান বাহনের পিঠে আবার যাত্রা শুরু। এ যেন আজ থেকে দু'শো বছর আগেকার কোনো দৃশ্যকল্প। দু-চাকা চারচাকার আগে মানুষের আদিমতম বাহন অশ্ব। যুদ্ধবিগ্রহ থেকে সংবাদ সরবারাহ–সবক্ষেত্রেই এই চারপেয়ে প্রাণীটি অপরিহার্য। বর্তমানে ঘোড়ার বদলে এসেছে পেট্রল কিংবা বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন। তবুও আজও কেউ কেউ উঠে পড়েন ঘোড়ার পিঠে। আ্যডভেঞ্চারের নেশায়। যেমন স্কটিশ অভিনেতা লুই হল। তিনমাস ধরে ঘোড়ার পিঠে প্রায় গোটা ইউরোপ চষে ফেলেছেন তিনি। পাড়ি দিয়েছেন প্রায় ২৮,০০ কিলোমিটার।
এডিনবরার হল, তাঁর বাহন সাশাকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন ২৪ মার্চ, ইতালির সিয়েনা থেকে। তারপর টাস্কানি হয়ে, লাইগুরিয়ান পর্বতমালা বেয়ে ফরাসি বাস্ক প্রদেশে ঢুকে পড়া। সফর শেষ হওয়ার কথা স্পেনের কেপ ফিনিস্তেরে-তে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই।
তবে ঘোড়ার পিঠে হলের প্রথম সফর মোটেই এটি নয়। বছর দুই আগে, আফগান উদ্বাস্তুদের হয়ে ত্রাণ তোলার জন্য তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের কর্নওয়াল থেকে ডেভন। তাঁরই তৈরি দ্য বিগ হুফ নামক সমাজকল্যাণমূলক সংস্থা, এই উদ্যোগের আয়োজক।
ছোট থেকেই ঘোড়ার সঙ্গে ঘর করেছেন হল। তবে অশ্বারোহণের ভূত মাথায় চাপে বন্ধুর সঙ্গে মঙ্গোলিয়া বেড়াতে গিয়ে। তিনটি ঘোড়া কিনেছিলেন সেখানে। পরিচিত হয়েছিলেন অশ্বারোহী জীবনযাত্রার সঙ্গে। পেয়েছিলেন বল্গাহীন স্বাধীনতার স্বাদ। মঙ্গোলিয়া থেকে ফিরেই হল শুরু করেছিলেন, ‘দ্য বিগ হুফ’।
হলের এই লম্বা সফরগুলির পেছনে আরো একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। মূলত মানসিক অবসাদ সম্পর্কে সমাজের কাছে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়াটাই তাঁর লক্ষ্য। তবে তার পাশাপাশি, এই অ্যাডভেঞ্চারও কম চমকপ্রদ নয়, কী বলেন!
Powered by Froala Editor