চার কিশোর-কিশোরী আর তাদের গ্রেট ডেন কুকুর, এই নিয়ে এওটি বাহিনী। অসংখ্য রহস্যের সমাধান করে চলেছে অবলীলায়। এমনই টানটান কাহিনিতে মজে থেকেছে অন্তত দুটি প্রজন্মের শিশুরা। সেই ইতিহাসের অধ্যায় শেষ হল গত বুধবার। ৮৭ বছর বয়সে মারা গেলেন ‘স্কুবি-ডু’-র সহসৃষ্টিকর্তা জো রুবি। যাঁর হাতের রেখায় ফুটে উঠেছে চার কিশোর-কিশোরীর চরিত্র, সেই অলৌকিক কুকুর আর অসংখ্য অপরাধের ঘটনা।
৩০ বছর বয়সের মধ্যেই অ্যানিমেশনের জগতে পাকাপাকিভাবে কাজ শুরু করেন জো রুবি। কিন্তু গতানুগতিক ধারার বাইরে বেরিয়ে নতুন কিছু করার কথা ভাবতেন সব সময়ই। আর তাই ১৯৬৯ সালে কেন স্পিয়ার্সের সঙ্গে শুরু করলেন ‘স্কুবি-ডু’-র কাজ। প্রথম দিকে অবশ্য কেউই ভাবেননি, এই একটি প্রোডাকশন এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। জো রুবির কথায়, একটা সিজন শেষ করা যাবে কিনা সে বিষয়েই সন্দেহ ছিল। কিন্তু টেলিভিশনে সম্প্রচার শুরু হলেই দেখা যায় সমস্ত আমেরিকার শিশুরা যেন গোগ্রাসে গিলছেন এই কাহিনি। কিছুদিনের মধ্যেই আন্তর্জাতিক সাফল্য পেল ‘স্কুবি-ডু’।
১৯৭৬ সালেই ‘স্কুবি-ডু’-র আসল প্রোডাকশন বন্ধ হয়ে গেলেও আরও অনেক অ্যানিমেশন নির্মাতাই নতুন করে নিয়ে এসেছেন সেই চার কিশোর কিশোরীকে। এমনকি ২০০২ সালে বড়ো পর্দাতেও মুক্তি পায় সেই কাহিনি। আর এসবের মধ্যেই বেঁচে থেকেছে জো রুবির সেই অন্য কিছু করার স্বপ্ন। তবে এছাড়াও ডাইনমাউট, ডগ-ওয়ান্ডার প্রভৃতি অনেক জনপ্রিয় অ্যানিমেশন সিরিজে কাজ করেছেন জো রুবি। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নতুন নতুন কাহিনি সৃষ্টি আর সেইসব কাহিনিকে ছবিতে ফুটিয়ে তুলতেন।
একুশ শতকের প্রথম দশকের শিশুদের কাছেও ‘স্কুবি-ডু’-র জনপ্রিয়তা কোথাও কম হয়নি। ওয়ার্নার ব্রো’স-এর প্রেসিফডেন্ট স্যাম রেজিস্টার তাই সার্থক কথাই বলেছেন। প্রতিটি শনিবার শিশুদের জন্য যত্ন দিয়ে গড়ে তুলেছেন জো রুবি। আজ সেই অ্যানিমেশন সময়ের স্রোতে হারিয়ে গিয়েছে। হারিয়ে গেলেন জো রুবিও। ২৬ আগস্ট ৮৭ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণেই মারা যান তিনি। সেইসঙ্গে শেষ হল একটি অধ্যায়। জো রুবির মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বড় হয়ে ওঠা সেইসব প্রজন্ম, যাদের স্মৃতিতে আজও অমলিন সেই চার কিশোর-কিশোরী আর অলৌকিক গ্রেট ডেন।
Powered by Froala Editor