বিশ্বজুড়েই শুরু হয়েছে ভ্যাকসিনেশন পর্ব। গত দু’সপ্তাহে কমেছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও। তবে এর মধ্যেও আশঙ্কার কথাই শোনালেন গবেষকরা। ব্রিটেনের কেন্ট অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত ভাইরাসের স্ট্রেন যথেষ্ট উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। এমনটাই জানালেন যুক্তরাজ্যের জেনেটিক প্রোগ্রামের প্রধান অধিকর্তা। বিশেষত এই স্ট্রেন ভ্যাকসিনের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকেও হ্রাস করতে পারে, বলেই আশঙ্কা করছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের জিনোমিক্স কনসোর্টিয়ামের ডিরেক্টর শ্যারন পিকক জানান, এতদিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্ত ভাইরাস স্ট্রেনটির বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কার্যকরী ছিল বলেই মনে করা হচ্ছিল। তবে সম্প্রতি ১.১.৭ ভ্যারিয়েন্টটি অভিযোজন করতে শুরু করেছে আবার। গত কয়েক সপ্তাহে ধরা পড়েছে তার রূপান্তর। যা টিকাকরণের কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এই অভিযোজিত ভাইরাসটিকে ‘ভেরিয়েন্ট অফ কনসার্ন’ হিসাবেই চিহ্নিত করছেন।
প্রাথমিকভাবে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমের ব্রিস্টলে প্রথমে চিহ্নিত করা গিয়েছিল কেন্ট ভ্যারিয়েন্টকে। তার প্রভাবও মূলত সীমাবদ্ধ ছিল ইংল্যান্ডের মধ্যেই। তবে এক্ষেত্রেও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন শ্যারন পিকক। অত্যন্ত সংক্রামক স্বভাবের জন্য শুধু ইংল্যান্ডই নয়, বরং সারা পৃথিবীতেই খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়বে এই ভাইরাস স্ট্রেন। আর তা নির্মূল করতে অন্ততপক্ষে আরও এক দশক লড়াই চালাতে হবে মহামারীর সঙ্গে।
এখনও পর্যন্ত মোট তিনটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট চিন্তার মধ্যে রেখেছে গবেষকদের। তার মধ্যে কেন্ট ছাড়াও রয়েছে ব্রাজিলের ভ্যারিয়েন্ট পি-১ এবং এবং সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট বি১.৩৫১। তবে এই তিনটির মধ্যে কেন্ট ভ্যারিয়েন্ট সবথেকে সংক্রামক হলেও, তার প্রভাবে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটাই কম।
পেরিয়ে গেছে এক বছরের বেশি সময়। এখনও পর্যন্ত প্রতিহত করা যায়নি করোনাভাইরাস মহামারীকে। প্রাণ গিয়েছে মোট ২৩.৩ লক্ষ মানুষের। ব্রিটিশ গবেষকদের এই নতুন তত্ত্ব সত্যি হলে, এই সংখ্যা ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা কল্পনাতীত। ফাইজার/বায়োটেক এবং অ্যাস্ট্রোজেনেকা এই দুটি ভ্যাকসিনই এতদিন হাতিয়ার ছিল ব্রিটিশ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে। তবে ভাইরাসের এই নতুন অভিযোজনের মোকাবিলা করতে বিকল্পের সন্ধানে নেমেছেন গবেষকরা…
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বয়স ১১৭, করোনাকে হারিয়ে ফিরে এলেন ইউরোপের প্রবীণতম মানুষ