৫০০ বছর আগের ‘গন্ধবিচার’, সৌজন্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

জাদুঘরে গিয়ে দাঁড়ালে ইতিহাসের অসংখ্য সাক্ষের সামনে হারিয়ে যেতেই হয়। অসংখ্য ছবি ও ভাস্কর্য দেখে পিছিয়ে যেতে হয় কয়েক শতাব্দী। আমাদের ঘিরে ধরে ইতিহাসের রূপ আর রস। তবে গন্ধ নয়। আজ থেকে কয়েক শতাব্দী আগে পৃথিবীর গন্ধ কেমন ছিল, তা আমরা কেউ জানতে পারি না। তবে এবার সেটাও জানা সম্ভব হতে চলেছে। অন্তত এই উদ্দেশ্যে গবেষণা শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। আর এই গবেষণায় ব্যবহার করা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকেই।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন হরাইজন ২০২০ প্রকল্পের অধীনে এই গবেষণায় বরাদ্দ করা হয়েছে ২৮ লক্ষ ইউরো। গত অক্টোবরেই ইতিহাসের গন্ধ অনুসন্ধানের গবেষণায় কাজ শুরু করেছেন ইউসিএল, অ্যাঞ্জিলা রাসকিন ইউনিভার্সিটি এবং রয়্যাল নেদারল্যান্ডস অ্যাকাডেমির বিজ্ঞানীরা। কিন্তু কীভাবে সম্ভব হারিয়ে যাওয়া গন্ধ পুনরুদ্ধার করা? ইতিমধ্যে সেই পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর এখানে সাহায্য নেওয়া হবে প্রাচীন সাহিত্যের। ইউরোপের ১৭টি ভাষার প্রাচীন সাহিত্যে সেই সময়ের নানা বস্তুর গন্ধের যা বর্ণনা আছে, তা থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিপুল সাহিত্যভাণ্ডার থেকে গন্ধ বিষয়ক সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তবে এর পরের কাজটা হবে পরীক্ষাগারে হাতে কলমে। সেই সময়ের এক-একটি তেলের গন্ধ, নানা ধরণের পারফিউমের গন্ধ, সবই পুরনো বিবরণ থেকে বোঝার চেষ্টা করবেন বিজ্ঞানীরা। খুঁজে দেখা হবে, তাদের উপাদানের বিষয়ে কোনো তথ্য আছে কিনা। আর সেইসমস্ত গন্ধের রাসায়নিক চরিত্র বিশ্লেষণ করে তৈরি হবে নতুন ধরণের গন্ধী পদার্থ। ইউরোপের ৫০০ থেকে ১০০ বছরের পুরনো সাহিত্য থেকে এইসমস্ত রাসায়নিক গন্ধী পদার্থ তৈরি করা হবে। তারপর তার নমুনা রাখা হবে নানা জাদুঘরে। দর্শকরা শুঁকে দেখতে পারবেন ইতিহাসের গন্ধও।

ইতিহাস সংরক্ষণের কাজে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নানা উদ্যোগ আগেও অবাক করেছে। তবে এই নতুন প্রকল্প বিস্ময়ের সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে যায়। যদিও যে সমস্ত অঞ্চলে এত প্রাচীন সাহিত্যের নিদর্শন নেই, সেখানে কাজটা আদৌ সম্ভব নয়। তবে যতটুকু প্রাচীনতা আঘ্রাণ করা যায়, তাই তো বিস্ময়।

আরও পড়ুন
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে প্রাচীনতম বাইবেলের রহস্যোদ্ঘাটন

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
চাঁদের বুকে ১ লক্ষ নতুন গহ্বর খুঁজে পেল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চাঞ্চল্য বিজ্ঞানীমহলে