সারা পৃথিবীর যেকোনো বদ্ধ জলাভূমিতেই দেখা যায় এই উদ্ভিদ। তবে গাছ নয়, আগাছা। ঠিক একটি ছুঁচের ডগার মতো আয়তন তার। তবে বিজ্ঞানীদের কাছে এই উদ্ভিদ এক আশ্চর্য জীব। কারণ এত দ্রুত বংশবিস্তারের ক্ষমতা পৃথিবীর আর কোনো বহুকোষী জীবের নেই। জলাভূমির মালিক বা পরিচারকদের কাছে তাই রীতিমতো বিরক্তির কারণ ওলফিয়া বা ডাকউইড। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা তার বংশবিস্তারের অদ্ভুত ক্ষমতার রহস্য ভেদ করলেন।
সম্প্রতি ‘জিনোম রিসার্চ’ পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে আমেরিকার সাল্ক ইনস্টিটিউটের গবেষকরা সেই কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। দেখিয়েছেন, অন্যান্য উদ্ভিদের চেয়ে ওলফিয়ার জিনের পার্থক্য ঠিক কতটা। গবেষণাপত্রের লেখক টোড মিশেলের কথায়, সম্প্রতি আবিষ্কার হওয়া বেশ কিছু পদ্ধতি ব্যবহার না করলে এই রহস্য ভেদ করা সম্ভব হত না। আর তার সঙ্গে যে কাজটি করেছেন তা হল, বহুকোষী প্রাণী ছাড়াও এককোষীদের সঙ্গেও মিলিয়ে দেখা হয়েছে ওলফিয়ার চরিত্র।
এই গবেষণার জন্য উদ্ভিদগুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করে নেওয়া হয়েছিল। একটি অংশকে সর্বক্ষণ আলোয় রাখা হয়েছিল, একটি অংশকে সর্বক্ষণ অন্ধকারে। আর অন্য অংশটিকে দিনের ১২ ঘণ্টা আলোয় রাখা হয়েছে আর বাকি ১২ ঘণ্টা অন্ধকারে। দেখা গিয়েছে ওলফিয়ার ৫০ শতাংশ জিনের রেপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে আলোর কোনো ভূমিকা নেই। ঠিক যেমন ইস্টের জিন আলো এবং অন্ধকার দুই পরিস্থিতিতেও রেপ্লিকেট করতে পারে। ওলফিয়ার ক্ষেত্রেও তাই। আর এই কারণেই অন্যান্য বহুকোষী জীবের চেয়ে ওলফিয়ার বংশবিস্তার ক্ষমতা বেশি। সাধারণত প্রত্যেক জীবের কোষ বিভাজন হয় দিনের আলোতে। ওলফিয়া অন্ধকারেও কোষ বিভাজন করতে পারে।
সাল্ক ইনস্টিটিউটের এই গবেষণা আগামী দিনে জিন গবেষণার ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেইসঙ্গে পরিষ্কার জলাশয়ে এই আগাছার বংশবিস্তার আটকানোর কোনো রাস্তাও হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে।
Powered by Froala Editor