উনবিংশ শতকে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে সন্ধান পাওয়া যায় বেশ কিছু প্রাচীন জীবাশ্মের। আনুমানিক ২ কোটি বছর আগে তাদের জীবিত অস্তিত্ব ছিল পৃথিবীতে। ট্রায়াসিক যুগের শেষ দিকে জন্ম নেওয়া এই ডাইনোসরের প্রজাতিটির নাম থেকোদন্তোসোরাস। অনেকে আবার একে ব্রিস্টল ডাইনোসরও বলে থাকেন। তবে এতদিন প্রাণীটির সম্পর্কে খুব কম তথ্যই জানা গিয়েছে। আর তার কারণ, গবেষণার ব্যাপারে অত্যন্ত সাবধানী হতে হয়েছে। একটি নমুনা নষ্ট করে ফেলাও যে অপূরণীয় ক্ষতি। তবে ৩-ডি ইমেজিং এবং কম্পিউটার প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এবার সেই বাধা টপকে গেলেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটিতে অ্যান্টনিও বারেলের নেতৃত্বে একটি গবেষণা দল কাজ শুরু করেছেন। আর এই কাজের জন্য তাঁরা সাহায্য নিয়েছেন আধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তির। জীবাশ্মের নমুনাগুলি নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। তার বদলে তার ৩-ডি ছবি তুলে নিয়ে নতুন প্রতিকৃতি বানিয়ে নেওয়া যায়। আর এভাবেই এগিয়ে চলেছে গবেষণা। এমনকি জীবাশ্মে প্রাণীগুলির মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেলেও গবেষকরা কম্পিউটারের মাধ্যমে সেই মস্তিষ্কের চেহারা ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। আর এই প্রাণীটির চরিত্র বোঝার ক্ষেত্রে সেই মস্তিষ্কই সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে।
অ্যান্টনিও বারেল জানিয়েছেন, সমগোত্রের অন্যান্য ডাইনোসররা নিরামিষাশী হলেও থেকোদন্তোসোরাস সম্পূর্ণ নিরামিষাশী ছিল না। মাঝে মাঝে মাংস খাওয়ার প্রমাণ মিলেছে তাদের মস্তিষ্কে। পাশাপাশি অন্যান্য প্রাণীরা সবসময় চার পায়ে হাঁটলেও এরা প্রয়োজনে দুপায়ে দাঁড়াতে পারতো বলেই অনুমান গবেষকদের। আরও গভীর পর্যবেক্ষণের ফলে হয়তো আরও অবাক করা তথ্য উঠে আসতে পারে। পাশাপাশি জীবাশ্ম গবেষণায় এই নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারও যে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিল, সে-কথা বলাই বাহুল্য।
Powered by Froala Editor