গোটা পৃথিবীতে এখনও স্বমহিমায় করোনা। নানা জায়গায় আরও জাঁকিয়ে বসছে সে। এরই মধ্যে বিজ্ঞানীদের নিরন্তর গবেষণা চলছে। ঠিক কী চরিত্র তার, কীভাবে রোখা যাবে তাদের— এসবেরই উত্তর খুঁজতে চাইছেন তাঁরা। এরই মধ্যে একধাপ এগোলেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা। সেখানকার করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করেন তাঁরা। এই গবেষণাই সেখানে আশা তৈরি করছে।
কোনো জীবের গঠন, তার চরিত্র-সহ যাবতীয় জিনিসের সুলুকসন্ধান পাওয়া যায় তার জিনে। সেই মর্মেই করোনা ভাইরাসেরও জিনোম সিকোয়েন্স তৈরির চেষ্টা চলতে থাকে বিশ্বজুড়ে। একবার যদি এটা সামনে চলে আসে, তাহলে একে রোধ করার দিকে অনেকটা এগোনো যাবে। কিন্তু এখানেই যাবতীয় সমস্যা। উহান থেকে যে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ শুরু হয়েছিল, তা এখন রূপ বদলাচ্ছে ক্রমশ। গোটা বিশ্বে একই রকম সিকোয়েন্সের করোনা ভাইরাস নেই। এত বৈচিত্র্যের জন্যই বিজ্ঞানীদের সমস্যা হচ্ছে। এমনিতেই করোনার জিনোম হল আরএনএ, তা বের করে গবেষণা করা অনেকটা জটিল। তার মধ্যে এতবার মিউটেশনের ফলে সেই জটিলতা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
তারই মধ্যে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। একইরকম প্রয়াস চলছিল বাংলাদেশের শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা ফাউন্ডেশনেও। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের যে ধরণটি পাওয়া যায়, তার ওপরেই গবেষণা করছিলেন তাঁরা। এবার সেই ভাইরাসটিরই জিনোম সিকোয়েন্সের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। অণুবিজ্ঞানী ডঃ সেঁজুতি সাহা ছিলেন এর মূল কাণ্ডারি। তাঁর সঙ্গে আরও সাতজন গবেষক এই কাজে নিযুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশে করোনার যে ধরণটি প্রভাব ফেলেছে, তার অস্তিত্ব রাশিয়া ও সৌদি আরবেও পাওয়া গেছে। এই জিনোম সিকোয়েন্স বের করার ফলে এই জাতীয় করোনা নিয়ে গবেষণার কাজও অনেকটা এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদী তাঁরা।
আপাতত জার্মানির সংস্থা গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটায় এই গবেষণাপত্র ও সিকোয়েন্সটি জমা দেওয়া হয়েছে। এখন শুধু স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষা।