‘হাসি ছাড়া একটা দিন মানে, সেটা পুরোই নষ্ট’। চ্যাপলিনের এই কিংবদন্তি মন্তব্যটির কথা কে না জানে। সত্যিই তো ‘হাহা-হিহি-হোহো’ ছাড়া আমাদের জীবন অচল। তবে হাসির সমস্ত ক্রেডিট একা হাতে নিয়ে নিতে পারে না মানুষ। হ্যাঁ, সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে এমনটাই। শুধু মানুষই নয়, আরও ৬৫টি প্রজাতির প্রাণীই অভ্যস্ত হাসিতে (Laughter)।
কিছুদিন আগেই বায়োঅ্যাকোয়াস্টিকস পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের গবেষক ও প্রাইমাটোলজিস্ট সাসা উইঙ্কলার এবং অধ্যাপক গ্রেগ ব্রায়ান্টই ডিকোড করেন হাসির রহস্যকে। তাঁদের মতে হাসি বিবর্তনেরই এক রহস্যময় অংশ। বিবর্তনের ধারায় হাসির জন্ম হয়েছিল খেলার অংশ হিসাবে। তা মূলত ইঙ্গিত দেয় সহযোগিতা বা বন্ধুত্বের। সেই জায়গাটাতেই বিশেষভাবে আলোকপাত করেন গবেষকরা। খেলার সময় প্রাণীদের মধ্যে মৌখিক আকৃতি এবং কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমেই নির্ধারণ করেন মানুষ ছাড়াও কোন কোনপ্রাণী হাসতে অভ্যস্ত।
তবে এমন চমকে দেওয়ার মতো ফলাফল হাতে পাবেন তাঁরা, তা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি গবেষকরা। এখনও পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৬৫টি প্রজাতির প্রাণী চিহ্নিত করতে পেরেছেন সাসা এবং গ্রেগ, যারা মানুষের মতোই হেসে ওঠে মনের আনন্দে। যার মধ্যে রয়েছে একাধিক বাঁদর বা এপ গোত্রীয় প্রাণী, কুকুর, শিয়াল, সীল, মঙ্গুস-সহ বিভিন্ন প্রাণী। তালিকায় রয়েছে প্যারাকিট এবং অস্ট্রেলিয়ান এবং ম্যাগপাই-সহ তিনটি পাখির প্রজাতিও।
গবেষকদের অনুমান আজ থেকে কয়েক মিলিয়ন বছর আগে গড়াতে শুরু করেছিল বিবর্তনের এই ‘হাস্যময়’ ধারা। শুরুর দিকে খেলার ছলে মাটিতে গড়াগড়ি খেয়ে, কখনও আবার নিছকই মারামারি করে আনন্দ প্রকাশ করত প্রাণীরা। এই ঘটনার সঙ্গে ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে থাকে প্রাণীদের কণ্ঠস্বরও। যার সাম্প্রতিকতম অধ্যায় হল ‘প্লে সিগন্যাল। আদতে যা হাসির মানব সংস্করণ। এতদিন পর্যন্ত মনে করা হত এপ গোত্রীয় প্রাণীরা ছাড়া হাসতে জানে না আর কোনো প্রাণীই। এবার মার্কিন গবেষণায় ভাঙল সেই ভুল…
আরও পড়ুন
হাজার পা-ওয়ালা প্রাণী! এই প্রথম মিলল হদিশ
Powered by Froala Editor