পৃথিবীর গভীরতম অঞ্চল মারিয়ানা ট্রেঞ্চ থেকে শুরু করে উচ্চতম স্থান এভারেস্ট— দুর্গতম সমস্ত অঞ্চলেই পৌঁছে গেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। পরিবেশ দূষণ তো বটেই যা রীতিমতো প্রভাবিত করছে বাস্তুতন্ত্রকেও। এবার গবেষকদের দুশ্চিন্তাকে আরও বাড়িয়ে দিল সাম্প্রতিক আবিষ্কার। প্রথমবারের জন্য জীবিত মানুষের ফুসফুসের (Lungs) মধ্যে গবেষকরা খুঁজে পেলেন মাইক্রোপ্লাস্টিকের (Microplastics) অস্তিত্ব।
সাধারণত, ৫ মিলিমিটারের থেকে আকারে ছোটো প্লাস্টিকখণ্ডকেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের পর্যায়ে গণনা করেন গবেষকরা। ক্ষুদ্র এবং হালকা হওয়ায় সহজেই বায়ুবাহিত হয়ে এক স্থান থেকে অন্যত্র পৌঁছে যেতে পারে মাইক্রোপ্লাস্টিক। একইভাবে জলবাহিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে এই অণু-দূষক। অনেকক্ষেত্রে পরিস্রাবণ পদ্ধতিতেও তাকে জল থেকে পৃথক করা বেশ কষ্টসাধ্য।
বছর দুয়েক আগে মানবদেহে প্রথম মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব শনাক্ত করেছিলেন গবেষকরা। পাকস্থলি এবং গর্ভাশয়ে পাওয়া গিয়েছিল মাইক্রোপ্লাস্টিক। জলবাহিত হয়েই এই মাইক্রোপ্লাস্টিক পৌঁছেছে মানবদেহের অভ্যন্তরে, এমনটাই ধারণা হয়েছিল গবেষকদের। আপাতভাবে বিজ্ঞানীরা মনে করেছিলেন শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মাইক্রোপ্লাস্টিক ঢুকে পড়তে পারে না মানবদেহের ভেতর। এবার সেই ধারণাকেই ভুল প্রমাণ করল সাম্প্রতিক আবিষ্কার।
হাল ইয়র্ক মেডিক্যাল স্কুল এবং হাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পৃথক পৃথকভাবে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন ১৩টি ফুসফুস কলার নমুনার ওপর। যা সংগৃহীত হয়েছিল জীবিত মানুষের দেহ থেকেই। তার মধ্যে ১১টি ফুসফুসেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব লক্ষ করেছেন বিজ্ঞানীরা। সামান্য পরিমাণ ফুসফুস কোশের মধ্যেই মিলেছে প্রায় ৩৯টি মাইক্রোপ্লাস্টিক। যা যথেষ্ট চিন্তার কারণ বলেই অভিমত গবেষকদের। সম্প্রতি টোটাল এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি।
আরও পড়ুন
মানবদেহে কী কী প্রভাব ফেলে মাইক্রোপ্লাস্টিক? জানাল সাম্প্রতিক গবেষণা
গবেষকদের অনুমান, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষের ফুসফুসে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকার সম্ভাবনার কথাই যেন উস্কে দিচ্ছে এই আবিষ্কার। যা যথেষ্ট আশঙ্কাজনক তো বটেই। শ্বাসজনিত রোগ ছাড়াও, রক্তবাহিত হয়ে এই প্লাস্টিক হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে বলে আশঙ্কিত গবেষকরা…
আরও পড়ুন
শুধু সমুদ্রই নয়, মাইক্রোপ্লাস্টিকে ছেয়েছে মাটিও
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
চুম্বকের সাহায্যে মাইক্রোপ্লাস্টিক অপসারণ, নেপথ্যে আইরিশ যুবক