প্রতিটি ছায়াপথের কেন্দ্রেই স্বাভাবিক নিয়মে খুঁজে পাওয়া যায় একটি সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর। যা পারতপক্ষে নির্ধারণ করে সেই ছায়াপথের আকার এবং স্থান-কাল নিয়ামককে। তবে পৃথিবী থেকে ৩০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরের একটি ছায়াপথ দেখে প্রথমে তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। বিশালাকার সেই ছায়াপথের কেন্দ্রে নেই কোনো ব্ল্যাকহোল। সম্প্রতি সমাধান হল সেই রহস্যের। আর বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের জন্য খুঁজে পেলেন ভাসমান কৃষ্ণগহ্বর। যা চমকে দিয়েছে গোটা বিজ্ঞানীমহলকেই।
অ্যাবেল-২২৬১। মহাকাশের সবথেকে উজ্জ্বল গ্যালাক্সি ক্লাস্টার নামে খ্যাত এই ছায়াপথেই ঘটে গেছে এমন ঘটনা। পৃথিবী থেকে দূরত্ম এই ছায়াপথ বিস্তৃত প্রায় ১০ লক্ষেরও বেশি আলোকবর্ষ অঞ্চল জুড়ে। যার ব্যাস আকাশগঙ্গার ব্যাসের থেকে দশগুণ বড়। বেশ কয়েকবছর আগেই এই ছায়াপথ খুঁজে পাওয়া গেলেও, তার মধ্যের কৃষ্ণগহ্বর খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি হাব স্পেস টেলিস্কোপ এবং সুবার স্পেস টেলিস্কোপের তোলা বেশ কিছু ছবি চমকে দেয় বিজ্ঞানীদের।
আসলে এই দূরবর্তী ছায়াপথের কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুতে স্থির নেই সেখানকার সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলটি। বরং ছায়াপথের মধ্যেই ভেসে বেড়াচ্ছে সেটি। কেন্দ্র থেকে প্রায় ২০০০ আলোকবর্ষ দূরে থেকে প্রদক্ষিণ করে যাচ্ছে ছায়াপথের গ্যালাকটিক সেন্টারকে। আর ওজন? সূর্যের তুলনায় কয়েক লক্ষ কোটি বেশি।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় এতদিন পর হঠাৎ কীভাবে হাবলের চোখে পড়ল এই ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব? প্রধান গবেষক ডঃ মার্ক পোস্টম্যান জানান, সম্প্রতি একটি নক্ষত্রকে গিলে ফেলে এই ব্ল্যাকহোলটি। দৈত্যাকার তারাটির রহস্যজনক মিলিয়ে যাওয়া নিয়েই সংগ্রহ করা শুরু হয়েছিল মহাজাগতিক তথ্য। আর সেখান থেকেই প্রকাশ্যে আসে এই কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, বেশ কয়েক লক্ষ বছর আগে বড় মাত্রার কোনো বিস্ফোরণের সাক্ষী ছিল এই ছায়াপথটি। যার কারণে ছায়াপথের গ্যালাকটিক সেন্টার থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলটি। পরে তা অন্য আরেকটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তৈরি করে একটি শক্তিশালী বায়োনারি। যা ছায়াপথের গ্যালাকটিক সেন্টারকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করে চলেছে এখনও। সদ্য খুঁজে পাওয়া কৃষ্ণগহ্বরটির এক্স-রে চিত্রে দেখা যায় কেন্দ্রকের অংশটি ফাঁকা, বরং তার চারদিকে ঘনীভূত হয়ে রয়েছে ভর। যা পারতপক্ষে বিজ্ঞানীদের তত্ত্বকেই সমর্থন জানায়...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
দৈত্যাকার ব্ল্যাকহোলের দিকে ছুটে চলেছে পৃথিবী; ধ্বংসের পথে নীল গ্রহ?