বিশ্বের নানা অজানা রহস্য এখনও বিজ্ঞানীদের চিন্তার বিষয়। কতটুকুই বা আর জানতে পেরেছেন তাঁরা! ব্রহ্মাণ্ড তৈরি যেসব উপাদান দিয়ে, তার ৮৫ শতাংশই তো বিজ্ঞানীদের অজানা। তবু তাদের অস্তিত্ব আছে বলেই বিশ্বাস। নাহলে যে ব্রহ্মাণ্ডের প্রসারণ থেকে শুরু করে অনেক ঘটনারই কোনো ব্যাখ্যা মেলে না। বিজ্ঞানীরা এইসব পদার্থের নাম দিয়েছেন 'ডার্ক ম্যাটার' বা কৃষ্ণবস্তু। এইসব পদার্থদের আলো বা অন্য কোনো তড়িৎ-চুম্বকীয় শক্তির সাহায্যে শনাক্ত করা যায় না। তাই এই নাম। নামেও যেমন, তেমনই সমস্ত জ্ঞানের আলোকের ধরা ছোঁয়ার বাইরে এইসব পদার্থ। এককথায়, বিজ্ঞানীরা এদের সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
আরও পড়ুন
যে বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণা ধরে এগিয়েছিলেন স্টিফেন হকিং
তবে ডার্ক ম্যাটার সৃষ্টির জন্য দায়ী কণাটির সন্ধান সম্ভবত বিজ্ঞানীরা পেয়ে গেছেন। অন্তত গবেষণাপত্রে তেমনটাই দাবি করেছেন ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী মিখেইল বাশকানভ এবং দানিয়েল ওয়াট। অন্যান্য মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতোই তাঁরাও খুঁজছিলেন মহাবিশ্বের সৃষ্টির রহস্য। আর বিশ্বের ৮৫ শতাংশ পদার্থই যেহেতু ডার্ক ম্যাটার, তাই তাদের উৎসের ব্যাখ্যা দিতে না পারলে কোনো তত্ত্বই ঠিক দাঁড়ায় না। বাশকানভ এবং ওয়াট একটা তত্ত্ব অবশ্য প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। ডি-স্টার নামের বিশেষ এক ধরনের কণার কথা তাঁরা বলেছেন, যা থেকে এইসব ডার্ক ম্যাটার তৈরি। পরমাণুর নিউক্লিয়াসের প্রোটন বা নিউট্রন তৈরি হয় যে কোয়ার্ক কণা থেকে, সেই কণাই তৈরি করে ডি-স্টার। তবে নিউট্রন বা প্রোটন তৈরি করতে ছ'টার মধ্যে তিনটে কোয়ার্ক লাগে। ডি-স্টার তৈরি করতে কিন্তু ছ'টি কোয়ার্ক কণাই কাজে লাগে। আর এই জটিল গঠনের ক্রিয়াকলাপ বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন বোস-আইনস্টাইন সংখ্যায়নের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন
এই প্রথম দুটি পরমাণুর সংযুক্তিকরণ ধরা পড়ল ক্যামেরায়, উচ্ছ্বসিত বিজ্ঞানীরা
দুই বিজ্ঞানীর এই নতুন তত্ত্ব আপাতত ভ্রুণাবস্থায় আছে। তবে আরো গভীরে গবেষণা করে খুব শিগগিরি তাঁদের তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন বলেই আশাবাদী তাঁরা। তবে বিজ্ঞানীদের সামনে রহস্য যে প্রচুর। টাইম-ট্রাভেল, টেলি-পোর্টেশন হোক বা প্যারালাল ইউনিভার্সের রহস্য; ডার্ক ম্যাটারের রহস্য উদঘাটিত হলে অনেক কিছুরই ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব হবে।