প্রায় ২২০ বছর আগে কর্নওয়ালের একটি খনি থেকে উত্তোলিত হয়েছিল খনিজ। অথচ দীর্ঘ দুই শতক ধরে তার আসল পরিচয় আন্দাজ করতে পারেনি মানুষ। সম্প্রতি মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আশ্চর্য সেই খনিজের বিশ্লেষণ করতে গিয়েই চাঞ্চল্যকর তথ্য আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা। জানালেন, পূর্ব-পরিচিত সকল খনিজের থেকেই একেবারে আলাদা নতুন একটি খনিজ প্রজাতি এটি।
দীর্ঘদিন ধরেই উজ্জ্বল সবুজ বর্ণের এই খনিজ স্ফটিকটিকে ভেবে আসা হয়েছিল একটি বিশেষ ধরণের লিরোকোনাইট। ধরা হত, আণবিক সজ্জার ভিন্নতার কারণে লিরোকোনাইটের নীল রঙের পরিবর্তে সবুজ রঙের হয় এটি। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে আসে একেবারে ভিন্ন রাসায়নিক গঠনে তৈরি এই নতুন খনিজটি। কর্নিশ ভাষায় কর্নওয়ালিশের প্রতিশব্দ ‘কারনাউ’-এর অনুকরণে এর নাম করা হয়েছে কারনোয়াইট।
উল্লেখ্য ২২০ বছর আগে উত্তোলিত খনিজটি এতদিন সংরক্ষিত ছিল ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে। সেখানকারই খনিজবিদ মাইক রুমসির নেতৃত্বে একটি দল খনিজটির অধ্যায়ন করার সময় এই আবিষ্কার করেন। তাঁদের এই গবেষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল মিনারোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। আন্তর্জাতিক এই সংস্থার পরবর্তী বছরের প্রকাশিতব্য পত্রিকায় ছাপা হবে বলে জানিয়েছে তারা।
জানা গেছে কর্নওয়ালের সেন্ট ডে অঞ্চলের হুইল গোরল্যান্ড খনি থেকে উত্তোলিত হয়েছিল এই খনিজটি। উল্লেখ্য, কর্নওয়াল পৃথিবীর অন্যতম খনিজ ভাণ্ডার। বহু মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য খনিজই আবিষ্কৃত হয়েছিল শুধুমাত্র কর্নওয়াল থেকে। খনিজের প্রাচুর্যের জন্য কর্নওয়ালকে হেরিটেজ সাইটের আখ্যাও দিয়েছে ইউনেস্কো। দিয়েছে জি.আই. ট্যাগও। তবে নতুন করে কারনোয়াইট উত্তোলন করার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। কারণ হুইল গোরল্যান্ড খনিটি বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ১০০ বছর আগে। সেখানে ১৭৯০-১৯০৯ সাল পর্যন্ত চলত খনিজ উত্তোলনের কাজ। বর্তমানে সে জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশাল বিশাল আবাসিক। কাজেই জাদুঘরে সংরক্ষিত অতি সামান্য পরিমাণের এই খনিজই সম্বল বিজ্ঞানীদের কাছে পরবর্তী গবেষণার জন্য!
Powered by Froala Editor