বয়স হলে তো দৃষ্টিশক্তি ফিকে হয়ে আসবেই। এমনকি সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যাওয়াও অসম্ভব নয়। প্রতি বছর বার্ধক্যজনিত কারণে বহু মানুষ অন্ধ হয়ে যান। তবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে এই সমস্যার সমাধান আনতে চলেছেন চিকিৎসকরা। আর প্রাথমিক পরীক্ষায় কিছুটা সাফল্যও ধরা পড়েছে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বয়সের ফলে চোখ এবং অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর তার ফলেই আসে অন্ধত্ব। কিন্তু মস্তিষ্কের ভিজুয়াল কর্টেক্স অঞ্চলটি অধিকাংশক্ষেত্রেই সুস্থ থাকে। অতএব কৃত্রিম পদ্ধতিতে তার মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করা গেলে সেই বয়স্ক ব্যক্তি আবার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে পারেন। আর সেই চেষ্টাই করছেন বিজ্ঞানীরা।
মানুষের চোখ যে আসলে একধরনের ক্যামেরা, একথা আমরা প্রত্যেকেই জানি। এখন তেমনই কৃত্রিম কোনো ক্যামেরার ছবি যদি মস্তিষ্কে প্রবেশ করানো যায়, তাহলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। অবশ্য এই বাইপাস পদ্ধতিটি শুনতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে তেমন নয় একেবারেই। বিজ্ঞানীরা এর আগেও এমন চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সফল হননি। তবে বেলোর কলেজ অফ মেডিসিনের গবেষকরা একটি নতুন পদ্ধতি খুঁজে পেয়েছেন। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখিয়েছেন, আগের পরীক্ষায় ব্যবহৃত স্ট্যাটিক স্টিমুলেশন পদ্ধতিতেই গলদ ছিল। তার বদলে ডিনামিক স্টিমুলেশন ব্যবহার করলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। আর হাতেকলমে সেই প্রমাণও দিয়েছেন তাঁরা।
অবশ্য এখনও পর্যন্ত কেবলমাত্র দ্বিমাত্রিক অক্ষর শনাক্ত করতেই সফল হয়েছে এই স্টিমুলেশন পদ্ধতি। বাস্তবে মানুষের দেখা বিভিন্ন জটিল আকৃতির চেহারা শনাক্ত করার জন্য আরও উন্নত অ্যালগরিদম ব্যবহার করা প্রয়োজন। সেই চেষ্টাও করছেন তাঁরা। খুব তাড়াতাড়ি এই গবেষণায় সাফল্য আসতে চলেছে, মনে করছেন গবেষক মাইকেল ব্যুখাম্প। তবে তারপরেও সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষের মতো দৃষ্টিশক্তি হয়তো ফিরে আসবে না। কারণ মানুষের চোখের মতো উন্নত ক্যামেরা ইঞ্জিনিয়াররা এখনও তৈরি করতে পারেননি। তবে সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীনতার থেকে এই অনুন্নত দৃষ্টিশক্তি তো অনেক ভালো। আর এভাবেই হয়তো আগামী দিনে সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষের মতোই দৃষ্টিশক্তি এনে দেবে কৃত্রিম প্রযুক্তি। আপাতত সেই গবেষণার প্রাথমিক ধাপটি অতিক্রম করতে পেরেছেন গবেষকরা।
Powered by Froala Editor