অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশ বাঁচাতে স্কুল ধর্মঘটের ডাক ৫০ হাজার পড়ুয়ার

সারা পৃথিবীজুড়ে উঠছে পরিবেশ রক্ষার দাবি। আর এই লড়াইতে সর্বত্র পথ দেখাচ্ছে ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা। যাদের হাত দিয়ে তৈরি হবে আগামী প্রজন্ম। গ্রেটা থানবার্গের আন্দোলনের পর থেকে এদের ভূমিকা আরও বেশি করে চোখে পড়ছে। আর এবার পরিবেশ রক্ষার দাবিতে পথে নামল অস্ট্রেলিয়ার অন্তত ৫০ হাজার স্কুল পড়ুয়া। আন্দোলনের পোশাকি নাম ‘স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট’। প্রতিদিনের ক্লাস ছেড়ে প্রত্যেকেই নেমে পড়েছে রাস্তায়। কারোর হাতে প্ল্যাকার্ড বা পোস্টার, কেউ আবার গান ধরেছে গিটার বাজিয়ে।

কার্বন নিঃসরণের দিক দিয়ে পৃথিবীর প্রথম সারির দেশগুলির মধ্যে একটি অস্ট্রেলিয়া। আবার প্লাস্টিক দূষণে সমস্ত দেশকেই ছাপিয়ে গিয়েছে। তবু বারবার পরিবেশ আইনে সংশোধনী আনার কথা বলা হলেও তাতে কর্ণপাত করছে না অস্ট্রেলিয়া সরকার। এমনকি কিছুদিন আগে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জে বেশ কিছু দেশ কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার লক্ষমাত্রা ঘোষণা করলেও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সেই আলোচনাসভাই পরিত্যাগ করে উঠে আসেন। সব মিলিয়ে সরকারের উপর থেকে মানুষের আস্থা ক্রমশ কমেই আসছে। অন্যদিকে বদলে যাওয়া জলবায়ু আশঙ্কায় ফেলেছে সবাইকেই।

সরকারকে পরিবেশ নিয়ে ভাবনাচিন্তায় বাধ্য করতে এবার পথে নামল স্কুল পড়ুয়ারাই। তাঁদের দাবি, আগামী ১০ বছরের মধ্যে সমস্ত রকমের গ্যাস ও কয়লা উত্তোলক কেন্দ্র বন্ধ করতে হবে। আর নতুন করে তো কোনো খনি খনন করাই যাবে না। ভারতীয় পুঁজিপতি আদানি গোষ্ঠীর তেল উত্তোলন প্রকল্প বন্ধ করার দাবিও উঠেছে।

পাশাপাশি, দেশের সম্পূর্ণ বিদ্যুৎব্যবস্থাকে অচিরাচরিৎ শক্তি উৎসে পরিবর্তন করার কথাও বলছেন স্কুল পড়ুয়ারা। তাদের মতে, জীবনের এই সামান্য সময়ের মধ্যেই আবহাওয়ার বদলের যে অভিজ্ঞতা তারা দেখেছে, তাতে আগামীদিনে পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে চলেছে সেটা কল্পনা করা কঠিন নয়। পরবর্তী প্রজন্মের কথা তো অনেক দূরে, নিজেরাই হয়তো এই বদলে যাওয়া আবহাওয়ার সঙ্গে আর মানিয়ে নিতে পারবে না।

আরও পড়ুন
বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বহুগুণা; চিপকো আন্দোলনের নেতা সুন্দরলালের প্রয়াণে স্তব্ধ বাংলাও

১৯১০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার গড় উষ্ণতা বেড়েছে ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এর মধ্যেই একের পর এক দাবানল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠছে। তবুও আত্মবিশ্বাস হারায়নি ছোট্ট ছেলেমেয়েরা। তাদের বিশ্বাস, এখনও শেষ সুযোগ হারিয়ে যায়নি। আর তাদের এই আন্দোলন সরকারকে বাধ্য করবে পরিবেশ আইনে বদল আনতে। প্রযুক্তির সাহায্যেই মোকাবিলা করতে হবে প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাবকে।

আরও পড়ুন
নিজস্ব সঞ্চয় থেকেই ১০০ অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর ক্রয় ৯ বছরের পরিবেশকর্মীর

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
পরিবেশ বাঁচাতে ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষকের হাতিয়ার শিশুরাই