হিমাচল প্রদেশের পার্বত্য এলাকার মধ্যে একটি উপত্যকা স্পিতি ভ্যালি। ছুটি কাটাতে অনেকেই ঘুরতে যান সেখানে। উপত্যকা থেকে তাকিয়ে থাকেন উঁচু উঁচু পর্বতচূড়ার দিকে। যার একেকটিতে এখনও মানুষের পা পড়েনি। তেমনই একটি চূড়ার মাথায় হঠাৎ দেখা গেল পতপত করে উড়ছে রামধনু পতাকা। যে পতাকা দ্বিমেরু লিঙ্গভাবনাকে খানখান করে দেয় বারবার। স্পিতি ভ্যালির ৬০০০ মিটার উঁচু ভার্জিন পিকে এভাবেই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের অধিকারের বার্তা ছড়িয়ে দিলেন সৌরভ কিট্টু তাঙ্ক।
পাঞ্জাবের সৌরভ ছোটবেলাতেই তার পরিবার থেকে পরিত্যক্ত হন। তাঁর একমাত্র ‘অপরাধ’ তিনি রূপান্তরকামী। এরপর বড়ো হন মঙ্গলমুখী ট্রান্সজেন্ডার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে। ছোট থেকেই অসম্ভব কোনো কিছু সম্ভব করে তুলতে চেয়েছিল সৌরভ। তেমনটাই জানিয়েছেন মঙ্গলমুখী অ্যাসোসিয়েশনের কর্ণধার কাজল মঙ্গলমুখী। আর সেই ইচ্ছা পূরণও হল এবার। পৃথিবীতে এই প্রথম কোনো নতুন চূড়ায় পা রাখলেন রূপান্তরকামী কোনো মানুষ। এভাবেই ধীরে ধীরে প্রতিটা ক্ষেত্রেই পুরুষ ও মহিলাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের এগিয়ে আসা শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
৬ অক্টোবর পর্বতের চূড়ায় পা রাখেন সৌরভ কিট্টু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মেঘা পারমার এবং শোবিতনাথ শর্মা। চূড়ায় উঠে দেখা যায় সেখানে উষ্ণতা -১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাস্তাও অত্যন্ত দুর্গম। তাছাড়া সঙ্গে নেই কোনো উপযুক্ত ম্যাপ। কিন্তু এসব কোনোকিছুই তাঁদের রাস্তায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। এভাবেই ধীরে ধীরে হিমালয়ের অন্যান্য চূড়াতেও অভিযানে বেরিয়ে পড়তে চান সৌরভ। তবে আপাতত দীর্ঘ যাত্রার শেষে তিনি ক্লান্ত। বিশ্রাম নিয়ে হয়তো আবার বেরিয়ে পড়বেন খুব শিগগিরি।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের বড়ো প্রাপ্তি; পরিচয় পেতে আর বাধ্যতামূলক নয় মেডিক্যাল পরীক্ষা