আগ্নেয়গিরিতেই রান্না! অদ্ভুত দৃশ্যের সাক্ষী সৌদি আরব

ওভেন নেই। নেই কোনো বৈদ্যুতিক কুকারও। কিন্তু তা সত্ত্বেও বহাল তবিয়াতেই চলছে রান্না। তবে কি কাঁচা খাবার-দাবার গলার্ধকরণের ব্যবস্থা নাকি? এমন প্রশ্নই উঁকি দেবে যে কারোর মনে। আগুন ছাড়া রান্না হওয়া সম্ভব নাকি! হ্যাঁ, এবার এমনটাই করে দেখালেন সৌদি আরবের (Saudi Arabia) রন্ধনশিল্পীরা। কোনো কৃত্রিম আগুনের উৎস নয়, আগ্নেয়গিরির লাভাস্রোতই এখন তাঁদের কাছে ওভেন। আর এভাবেই চলছে আস্ত একটি রেস্তোরাঁ। বা বলা ভালো পপ-আপ ইভেন্ট (Pop Up Event)।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটির প্রফেসর রবার্ট ওয়াইসোকি এবং লন্ডন ভিত্তিক বোম্পাস অ্যান্ড পার স্টুডিও-র সৌজন্যে প্রকাশ্যে এসেছে এই অদ্ভুত দৃশ্য। দীর্ঘদিন ধরেই আগ্নেয়গিরি ও লাভাস্রোত নিয়ে কাজ করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যাপক রবার্ট ওয়াইসোকি। আর সেই গবেষণার কাজেই সম্প্রতি তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন সৌদি আরবের আল উলার শ্লাল ক্যানিয়নে। সেখানে গিয়েই এই অদ্ভুত দৃশ্যের সম্মুখীন হন তিনি। এমন অভিনব ও পরীক্ষামূলক উদ্যোগকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেননি তিনি। 

শ্লাল ক্যানিয়নের কাছেই রয়েছে একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরি। সংশ্লিষ্ট পপ-আপ ইভেন্টটি থেকে তার দূরত্ব বড়োজোর ২৫ মাইল। তবে আগ্নেয়গিরিতে বিধ্বংস কোনো বিস্ফোরণের সম্ভাবনা না থাকাও পশার জমিয়ে বসেছেন আরবের রন্ধনশিল্পীরা। আগ্নেয়গিরি থেকে প্রবাহিত ক্ষীণ লাভাস্রোতকেই সোজা চ্যানেল করে নিয়ে এসেছেন রান্নাঘরে। ক্ষীণ হলেও সেই স্রোতের তাপমাত্রা প্রায় দেড় হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে, রান্নার অসুবিধা হচ্ছে না বিন্দুমাত্র।

এই অভিনব অভিজ্ঞতা নিতে গেলে মাথাপিছু ১৮৬ মার্কিন ডলার খরচ করতে হবে পর্যটকদের। পরিবর্তনে বিফ ফিলেট থেকে শুরু করে রোস্টেড স্যালাড, বেকড সেলেরিয়াক, চকোলেট লাভা কেক, মকটেল সবকিছুই পাবেন ক্রেতারা। পাশাপাশি প্রতি টেবিলের ধারেও লাভাস্রোতের ওপর বসানো থাকছে চায়ের কেটলি। চাইলে ক্রেতা স্বচ্ছন্দে সেখান থেকে ঢেলে পান করতে পারেন ‘আগ্নেয় পানীয়’। 

ইতিমধ্যেই সৌদি আরবের এই পপ-আপ ইভেন্ট রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা অঞ্চলে। ভিড় জমাচ্ছেন দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও। পরবর্তীতে ভারত, চিন, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির জন্য অনলাইন পপ-আপ ইভেন্টের কথাও চিন্তা করছে সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁর কর্তৃপক্ষ। বলার অপেক্ষা থাকে না, প্রকৃতির ভয়াবহতাকেও যেন শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন সৌদি আরবের রন্ধনশিল্পীরা…

Powered by Froala Editor

Latest News See More