লকডাউনে গোটা ভারতের সঙ্গে কলকাতাতেও সবাই ঘরবন্দি। নাকে-মুখে কোনোরকমে গুঁজে অফিসে ছোটা নেই। ব্যস্ততা নেই; ঘরে বসে একটু নিজের সঙ্গে, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো। মাঝে মাঝে একটু জিনিসপত্র মোছা, ঘর পরিষ্কার করা— সেসবও করছেন অনেকে। তার মধ্যেই যদি নিজের বাবার পুরনো কিছু জিনিস বেরিয়ে পড়ে? প্রায় গুপ্তধন পাওয়ার মতোই ব্যাপার, তাই না? এবার যদি বাবার নাম হয় সত্যজিৎ রায়, তবে?
ঠিক এই জিনিসটিই ঘটল ১/১ বিশপ লেফ্রয় রোডের বিখ্যাত বাড়িটিতে। আর এই খবরটাই সবার সামনে আনলেন সত্যজিতের পুত্র, পরিচালক সন্দীপ রায়। লকডাউনের জন্য সবার মতো তিনিও বাড়িতেই আছেন। ব্যস্ততা কম, তাই ঘরদোর পরিষ্কার করার কাজেও হাত লাগিয়েছেন। সেইসময় একটি লফট থেকে পাওয়া যায় এই মহামূল্য গুপ্তধন। সত্যজিৎ রায়ের নিজের তোলা ১০০টি ছবির নেগেটিভ, সিনেমার শুটিং ও অন্যান্য সময় তোলা আরও ১০০০টি ছবির নেগেটিভ পাওয়া গেছে এখানে। অপু ট্রিলজি, জলসাঘর-সহ বেশ কিছু সিনেমার এমন কিছু ছবি রয়েছে, যা এর আগে আমরা কেউ দেখিনি। বিখ্যাত ফটোগ্রাফার রঘুবীর সিং ও রঘু রাইয়ের তোলা অনেক বেশ কিছু ছবিও রয়েছে সেখানে।
এর পাশাপাশি রয়েছে ফ্রাঙ্ক কাপরা, আকিরা কুরোসাওয়া, রিচার্ড অ্যাটেনবরো প্রমুখ পরিচালকদের থেকে পাওয়া বেশ কিছু চিঠি ও টেলিগ্রাম। তবে সন্দীপ রায়ের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত ওই লফটের অর্ধেকটাই খোঁজা হয়েছে। সেখান থেকেই এই সম্পদ পাওয়া গেছে। বাকি অর্ধেকে আর কী কী লুকিয়ে আছে, সেটা তো সময়ই বলবে। আপাতত, সত্যজিৎ-প্রেমীরা টানটান উত্তেজনায়। সব ঠিক থাকলে আগামী বছর, সত্যজিৎ রায়ের জন্ম শতবর্ষে এই ছবি, চিঠি সবার জন্য প্রকাশ করা হবে।