ব্রাজিল— ফুটবলের দেশ; সাম্বার জাদুছোঁয়ায় যেখানে উঠে আসে অনেক স্বপ্নের গল্প। অবশ্য এখন সেসব সরিয়ে অন্য একটি ব্যাপারে শিরোনামে রয়েছে লাতিন আমেরিকার এই দেশটি। করোনা ভাইরাস। গোটা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। সুস্থ হচ্ছে বটে, কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যাও থামছে না। যত দিন যাচ্ছে, আক্রমণ বেড়েই চলেছে। কিন্তু সেসব থোড়াই কেয়ার প্রশাসনের! এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সমস্তকিছু স্বাভাবিক করে দেওয়ার পথে হাঁটতে শুরু করল প্রেসিডেন্ট জর বলসোনারোর সরকার। অবশ্য তাঁর নিজের দেহেও করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। তার মধ্যেই সাও পাওলোর সমস্ত দোকান, বাজার খুলে দেওয়া হল।
এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ব্রাজিলে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। ৬৫ হাজারের ওপর মানুষ মারা গেছেন করোনায়। দাফন করার মতোও জায়গা নেই একেক জায়গায়। অনেকে সুস্থও হয়েছেন, কিন্তু সংক্রমণ কমার কোনো লক্ষণ এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। এদিকে ব্রাজিল প্রশাসনের একের পর এক সিদ্ধান্ত সেই বিপদকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হল সাও পাওলো’কে স্বাভাবিক করা। ব্রাজিলের সবচেয়ে বড়ো শহরের বাজার, দোকান সমস্ত কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে সোমবার থেকে। আর তারপর থেকেই ভিড় উপচে পড়েছে রাস্তায়। অনেকে মাস্ক না পরেই বেরিয়ে পড়ছেন। এই না পরার সংখ্যাটা আক্ষরিক অর্থেই অনেক! সেই অবস্থার সঙ্গে করোনার পরিসংখ্যানকে মেলানো যাবে না কোনোমতে।
এমনিতে করোনা পরিস্থিতিকে খুব একটা আমল দিতে নারাজ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জর বলসোনারো। বহু আগে থেকেই তিনি বলে আসছেন, এটা একটা সামান্য ফ্লু। এতে কিচ্ছু হবে না। আর এই মনোভাবের জন্যই লকডাউন শুরু করতে দেরি হয়েছিল। তাও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে শুরু করতে ‘বাধ্য’ হয়েছিলেন তিনি। গত মাসে লকডাউন উঠিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছিলেন। সেইদিকেই কি ক্রমশ এগোচ্ছে ব্রাজিল? সাও পাওলো’র চিত্র সেরকমটাই বলছে। সেটা হলে আবারও নতুন করে বাড়তে শুরু করবে করোনা, এমনটাই আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। কিন্তু সেসব আমল দেওয়ার পক্ষপাতী নন বলসোনারো। এদিকে তিনিও সেই ‘সামান্য ফ্লু’-এর সংক্রমণে পড়েছেন। প্রেসিডেন্টের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। আপাতত কোয়ারান্টাইনে আছেন তিনি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সেই দিকেই চোখ রেখেছেন ব্রাজিলবাসী।
Powered by Froala Editor