চলতি বছরেই একাধিকবার বন্দুকবাজের হামলার শিকার হয়েছে বিভিন্ন মার্কিন শহর। আরও বিশেষভাবে বলতে গেলে বিগত ৫ বছরে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে এই ধরনের আক্রমণের সংখ্যা। সাধারণ মানুষ তো বটেই, এহেন আকস্মিক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু পুলিশকর্মীও। এবার এই সমস্যার সমাধান করতেই মানুষের বদলে সশস্ত্র রোবট পুলিশদের মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিল সান ফ্রান্সিসকোর (San Francisco) নিরাপত্তা দপ্তর।
তবে এই প্রথম নয়। আজ থেকে এক দশক আগের কথা। ২০১০ সালেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত ‘কিলার রোবট’-খ্যাত (Killer Robot) এই ধরনের রোবট তৈরি করেছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। ২০১০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সান ফ্রান্সিসকোর পুলিশ বিভাগে সবমিলিয়ে ১২টি এইএবার এই সমস্যার সমাধান করতেই মানুষের বদলে সশস্ত্র রোবট পুলিশদের মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিল সান ফ্রান্সিসকোর নিরাপত্তা দপ্তর। ধরনের রোবট সরবরাহও করা হয়। তবে এখনও অবধি কেবলমাত্র একবারই ব্যবহৃত হয়েছিল এই রোবট।
২০১৬ সাল সেটা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাসে এক আতঙ্কবাদীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন এক শিশু-সহ দশ জন। যার মধ্যে ছিলেন ৫ পুলিশকর্মীও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাই বাধ্য হয়েই এই ‘রণক্ষেত্রে’ রোবট নামায় ডেলাস পুলিশ। হ্যাঁ, নির্ভুলভাবেই অপরাধীকে হত্যা করে রোবটটি। তবে রোবটের এই কীর্তি পরবর্তীতে তদন্তের কাজে খানিক সমস্যার কারণ হয়েও দাঁড়িয়েছিল।
সেখান থেকেই জন্ম নেয় বিতর্কের। অনেকেই এই রোবট ব্যবহারের প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছিলেন মানবাধিকার নিয়ে। জীবিত অবস্থায় কোনো অপরাধীকে ধরার ক্ষেত্রে কার্যকারী নয় এই যন্ত্র-মানব, উঠেছিল সেই অভিযোগও। তবে শেষ পর্যন্ত এবার পুলিশকর্মীদের প্রাণ বাঁচাতেই প্রযুক্তিকেই বেছে নিল সান ফ্রান্সিসকোর প্রশাসন। গত মঙ্গলবার পুলিশি অপরেশনে যন্ত্রমানবের ব্যবহার যৌক্তিক কিনা, তা নিয়েই বিশেষ বৈঠকে বসে সান ফ্রান্সিসকোর বোর্ড অফ সুপারভাইজার। সেখানেই ৮-৩ ভোটে জিতে যায় ‘রোবট-বাহিনী’। পেয়ে যায় অনুমোদন।
তবে রাস্তাঘাটে টহলদারি বা অন্যান্য কাজে সবসময় ব্যবহৃত করা হবে না এই রোবটগুলিকে। কেবলমাত্র বিশেষ পরিস্থিতি বা জরুরি অবস্থাতেই সেগুলি নামানো হবে ময়দানে। তাছাড়া আগামীদিনে বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজও করবে এই রোবটরাই। সবমিলিয়ে নিরাপত্তার দুনিয়ায় বড়ো বদল আসতে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তবে এইধরনের রোবটের ব্যবহার যুদ্ধক্ষেত্রেও শুরু হলে, ডেস্টোপিয়ান গল্পের প্রেক্ষাপট হয়ে উঠতে পারে পৃথিবী— রয়েছে সেই সম্ভাবনাও। কাজেই, সেই আশঙ্কা এড়াতে আন্তর্জাতিক নীতি প্রণয়নেরও প্রয়োজন আছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা…
Powered by Froala Editor