একুশ শতকের এই সময়ে অবিরত এসে চলেছে নিত্যনতুন প্রযুক্তি। আর এই প্রযুক্তির দৌড়ে টিকে থাকতে নিত্যনতুন গ্যাজেটের আমদানি হচ্ছে গৃহকোণে। স্মার্টফোনের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে একই প্রবণতা। বছর দুয়েক ব্যবহারের পরই তা স্থান পাচ্ছে বাতিলের তালিকায়। এবার পুনর্ব্যবহার বাড়াতে অভিনব এক পন্থা নিল সাউথ কোরিয়ার জনপ্রিয় মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা স্যামসাং। তাদের ব্যবহৃত স্মার্টফোনগুলি এবার নতুন চেহারায় ফিরবে বাজারে। ব্যবহৃত হবে চিকিৎসাক্ষেত্রে।
হ্যাঁ, ঠিকই শুনছে চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত হবে পুরনো স্মার্টফোন। আরও বিশেষভাবে বলতে গেলে চক্ষু-চিকিৎসার কাছে। ভারতের গ্রামীণ অঞ্চলে এবার চোখের রোগ নির্ণয়ের কাজ করবে গ্যালাক্সি সিরিজের ব্যবহৃত স্মার্টফোনগুলি। কিন্তু কীভাবে? স্যামসাং জানাচ্ছে, পুরনো স্মার্টফোনগুলির সঙ্গে বিশেষ লেন্সের সংযোগ করে তারা তৈরি করছে এক নতুন ডিভাইস। নাম ‘আইলাইক হ্যান্ডহোল্ড ফান্ডাস কানেক্ট’। মূলত, এই প্রক্রিয়ায় স্মার্টফোনের পুরনো অ্যালগরিদমকে মুছে দিয়ে নতুন একটি অ্যাপ্লিকেশন প্রতিস্থাপন করা হবে সেখানে। যা গ্লুকোমা, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, ছানি এবং ম্যাকুলার ক্ষয়ের মতো গুরুতর চক্ষুসমস্যাগুলিকে শনাক্ত করতে সক্ষম।
তবে এই প্রথম নয়। ২০১৭ সালেই স্যামসাং ‘গ্যালাক্সি আপসাইকেল’ নামাঙ্কিত এই উদ্যোগ নিয়েছিল। লক্ষ্য ছিল, বিশ্বের গ্রামীণ অঞ্চলে ফোনের পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া চিকিৎসা পরিষেবা। ২০১৮ সালে প্রথম ভিয়েতনামে স্যামসাং-এর তৈরি এই ডিভাইস প্রয়োগ করা হয় চোখের রোগ শনাক্তকরণের জন্য। উপকৃত হয়েছিলেন প্রায় ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। এবার সেই উদ্যোগ নেওয়া হতে চলেছে ভারত, মরক্কো এবং পাপুয়া নিউ গিনিতেও।
কিন্তু বাড়তি সুবিধা কী এই যন্ত্র ব্যবহারে? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চক্ষু পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশ আমদানির জন্য এককালীন খরচ হয় আকাশছোঁয়া। সেই খরচকেই সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসবে এই ডিভাইস। পাশাপাশি আকারেও ছোটো হওয়ায় এই যন্ত্র বহনযোগ্য। ফলত, প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে চক্ষুপরীক্ষা শিবির বা তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সহজেই স্থানান্তরিত করা যাবে যন্ত্রটিকে।
আরও পড়ুন
সূর্য-কে ‘নিয়ন্ত্রণ’ করবে মানুষ! পৃথিবী বাঁচাতে পরামর্শ বিজ্ঞানীদের
এখানেই শেষ নয়। চক্ষু পরীক্ষার পাশাপাশি ভবিষ্যতে ক্যানসার শনাক্তকরণ, পোর্টেবল কলপোস্কোপের স্ক্রিন হিসাবেও ব্যবহার করা হতে পারে স্মার্টফোন। আর তা ব্যাটারি চালিত হওয়ায়, স্থায়ী বিদ্যুতের উৎস না থাকলেও গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেওয়া যাবে চিকিৎসা পরিষেবা। অন্যদিকে স্মার্টফোনের এই পুনর্ব্যবহার ই-বর্জ্যের বাড়বাড়ন্তকেও আয়ত্তে আনবে অনেকটাই। রক্ষিত হবে পরিবেশের স্থায়িত্ব। সব মিলিয়ে স্যামসাং-এর এই উদ্যোগ বদলে দিতে চলেছে আগামী পৃথিবীকে…
আরও পড়ুন
‘মানুষ’ হয়ে উঠছে রোবটও! বিশেষ অ্যালগোরিদম তৈরি বিজ্ঞানীদের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মহেন্দ্রলালের বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানে হিন্দি-আগ্রাসন, নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক