যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স ইত্যাদি প্রথম বিশ্বের দেশগুলিতে খাতায় কলমে অধিকার মিলেছিল আগেই। পাশাপাশি সেখানকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিও বহু আগে থেকেই স্বাগত জানিয়েছিল সমলিঙ্গ বিবাহকে। তবে এক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল কিউবা। এবার সেখানেও দেখতে পাওয়া গেল সমকামী, উভকামীদের জন্য উদার মানসিকতা। কিউবার একটি গির্জা সম্প্রতি তাদের দরজা খুলে দিল সমলিঙ্গ বিবাহের জন্য।
ফিদেল কাস্ত্রো কিউবার নেতৃত্বে থাকাকালীন, শুরুর দিকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল ধর্মচর্চা। তবে ১৯৯২ সালে সেই সংবিধানে খানিক বদল আনা হয়। সাধারণকে দেওয়া হয় ধর্মীয় স্বাধীনতা। তারপর থেকে ক্যাথলিক গির্জা কিউবার সমাজ এবং শাসন ব্যবস্থার মধ্যে হয়ে ওঠে অন্যতম সেতু। কিন্তু ভ্যাটিকানের মতোই কিউবার ক্যাথলিক গির্জাগুলিতে সমকামিতাকে ‘পাপ’ বলেই মনে করা হত এতদিন। বিগত ভ্যাটিকান-ধর্মযাজকদের থেকে পোপ ফ্রান্সিস অনেকটাই মুক্তমনা হলেও, তার ছাপ সেইভাবে পড়েনি কিউবা-সহ পৃথিবীর অন্যান্য রক্ষণশীল মানসিকতার গির্জাগুলিতে।
২০১৫ সালে কিউবাতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম মেট্রোপলিটন কমিউনিটি চার্চ (এমসিসি)। বর্তমানে ছোট্ট দেশটিতে যার সংখ্যা ৩টি। মূল সংস্থা এমসিসি তৈরি হয়েছিল ১৯৬০-এর দশকে লস অ্যাঞ্জেলিসে। হয়ে উঠেছিল সমকামীদের আশ্রয়স্থল। পাশাপাশি বর্ণ, ধর্ম বৈষম্যের ক্ষেত্রেও সমাজকে উন্মুক্ত এক আকাশ দেওয়ার লক্ষ্য ছিল এই সংস্থার। তাদের নিয়মানুযায়ী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অংশ হতে গেলে শুধুমাত্র শর্ত ছিল ব্যাপটিজম। পরবর্তীকালে সেই শর্তকেও সরিয়ে নেয় তারা।
২০১৯ সালে কিউবাতে এমসিসি দাবি তুলেছিল গির্জাগুলিতে যাতে সমলিঙ্গ বিবাহের অধিকার দেওয়া হয় মানুষকে। কিন্তু সংবিধান সংশোধনের কাজ খানিকটা এগলেও শেষ অবধি তাতে শিলমোহর চাপায়নি হাভানা সরকার। এবার সেই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিরুদ্ধে গিয়েই সমকামীদের জন্য বিবাহের সুযোগ করে দিল কিউবার এমসিসি গির্জা। এমসিসি সম্প্রদায়ের ধর্মযাজক ইয়েভি ক্রুজ সম্প্রতি ঘোষণা করেন, রাষ্ট্রের লিখিত আইনে যাই থাকুক না কেন রক্ষণশীল মানসিকতায় আবদ্ধ থাকবে না ধর্মীয় ব্যবস্থা। আর তার জন্যই এই পদক্ষেপ তাঁদের। তবে এই যুগান্তকারী ঘোষণার পর ২০২১ সালেই নতুন করে আইন সংশোধনের কথা ভাববে সরকার, সে ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী কিউবার এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষেরা...
আরও পড়ুন
সমকামী সম্পর্ক বৈধ, ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পথে ভুটান
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
‘আইন, সমাজ সমলিঙ্গ বিবাহকে স্বীকৃতি দেয় না’, মন্তব্য কেন্দ্রের