রাশিয়ার পূর্বদিকে ছোট্ট উপদ্বীপ কামচাটকা। প্রায় তিন লক্ষ মানুষের স্বাভাবিক বাস। তবে এই দ্বীপেরই একাংশজুড়ে অধিপত্য কায়েম রেখেছে অগ্নিদানবরা। সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। এখনও প্রতিনিয়তই চলছে তার অগ্নুৎপাত। ১৯৭৫-৭৬ সাল নাগাদ এই অঞ্চলেই ঘটে গিয়েছিল একটি ভয়াবহ অগ্নুৎপাতের ঘটনা। তবে ভয়াবহতাকে সরিয়ে রেখেই মানুষের মনে বিস্ময়ের সঞ্চার করল কামচাটকা। অগ্নুৎপাতের ফলে সৃষ্ট আগ্নেয় শিলা থেকে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা সন্ধান পেয়েছিলেন সম্পূর্ণ অজানা কিছু খনিজের। যা পৃথিবীর অন্য কোনো স্থানেই পাওয়া যায় না।
সম্প্রতি এই অঞ্চল থেকেই এমন আরও এক অজানা খনিজ খুঁজে পেলেন রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা। রীতিমতো অবাক করা বৈশিষ্ট্য এই খনিজের। করতে পারে আধান-পরিবহন। এই বৈশিষ্টের জন্য অনায়াসেই রিচার্জেবল ব্যাটারির ক্যাথোড হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে এই খনিজকে, এমনটাই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
সেন্ট পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রখ্যাত স্ফটিকবিদ এবং অধ্যাপক টমাস পেট্রোভের নাম অনুসারে এই খনিজের নামকরণ করা হয়েছে ‘পেট্রোভাইট’।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিস্টালোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক স্ট্যানিস্লাভ ফিলাটোভের নেতৃত্বে একটি গবেষণাদল প্রথম সন্ধান পান এই অনন্য খনিজের। প্রায় দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরেই ফিলাটভ কাজ করে আসছেন কামচাটকা অঞ্চলে। মূলত লাভা থেকে সৃষ্টি শিলার আনবিক গঠনই তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র।
সদ্য সন্ধান পাওয়া পেট্রোভাইট খনিজটির উজ্জ্বল নীল বর্ণের। মূলত ট্যাবিউলার স্ফটিকের সংযোজিত গ্লোবিউলার গঠন এটি। রাসায়নিক সংকেত Na10CaCu2(S04)8। পুরো স্ফটিক জুড়ে রয়েছে বহু সূক্ষ্ম নালীপথ। যার মধ্যে দিয়ে অনায়াসেই যাতায়াত করতে পারে একটি সোডিয়াম পরমাণু। এই বিশেষ গঠনই অনন্য করে তুলেহে পেট্রোভাইটকে। আর এর কারণেই ধাতু না হয়েও দিব্যি পরিবাহী হিসাবে কাজ করতে পারে এই খনিজ। আবিষ্কারের পর উচ্ছ্বসিত রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা। সেইসঙ্গে কামচাটকার উপকূলে আরও গভীর সন্ধান চলবে বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। কে বলতে পারে আগ্নেয়গিরির ‘ছাই’ উড়িয়ে দেখলে হয়তো পেলেও পাওয়া যেতে পারে ‘অমূল্য রতন’।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
এভারেস্টের শিখরেও মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ, গবেষণার ফলাফলে আতঙ্কিত বিজ্ঞানীরা