ধরুন আপনি ঘন একটা জঙ্গল দিয়ে হাঁটছেন। ছমছমে পরিবেশ, থেকে থেকে ঝিঁঝিঁ ডেকে উঠছে। এমন সময় সামনে একটা ফাঁকা জায়গায় হড়কে যেতে যেতে সামলে নিলেন নিজেকে। টর্চের আলোয় দেখলেন, ফাঁকা জায়গাটা আসলে একটা হ্রদ। আর তাতে ভেসে আছে শয়ে শয়ে হাড়; মরা মানুষের হাড়!
উপরের বর্ণনাটা কোনও ভূতের গল্পের দৃশ্য হিসেবে ভাবতে ভালবাসি আমরা। বাস্তবে এই দৃশ্য কজন চান, সেটা আলাদা প্রশ্ন। কিন্তু ভারতে বাস্তবেই এইরকম একটি জায়গা আছে। উত্তরাখণ্ডের রূপকুণ্ড; যার আরেক নাম ‘স্কেলিটন লেক’। জলাশয়ের জলে, পাড়ে সব জায়গায় ছড়িয়ে আছে প্রায় ৮০০ জন মানুষের হাড়। শুধুমাত্র অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরাই নন, বহু ইতিহাসবিদ এবং প্রত্নতাত্ত্বিকেরও পছন্দের গন্তব্য হল এই রূপকুণ্ড।
বলা হয়, এই জায়গায় যে হাড়গুলি পাওয়া যায়, সেগুলি অত্যন্ত প্রাচীন। কিন্তু এক জায়গায়, একই সঙ্গে এতগুলো হাড়? প্রাথমিকভাবে ডিএনএ, রেডিও কার্বন ডেটিং রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছিল যে এরা দক্ষিণ এশিয়ার অধিবাসী ছিল। তাদের সম্ভাব্য আয়ুষ্কাল ধরা হচ্ছিল ৮০০ খ্রিস্টাব্দ। কোনো একটা বিশেষ কারণে, তারা প্রত্যেকে এখানে প্রায় একই সঙ্গে মারা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট একটু অন্য কথা বলছে। সেখানে বলা হচ্ছে, এই কঙ্কালগুলির মধ্যে বেশ কিছু অবশ্যই দক্ষিণ এশিয়ার অধিবাসীর। কিন্তু বেশ কিছু এমনও আছে, যারা তার বহু পরে মারা গিয়েছিল। ইতিহাস আর অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় যদি হন, তাহলে একবার যেতেই পারেন রূপকুণ্ড। তবে রাত হয়ে গেলে, টর্চ রাখতে ভুলবেন না!