গাছের সংখ্যা কমে আসছে দিনদিন। নগরায়ণের কারণে দিন দিন ইঁট-কাঠ-পাথরের জঙ্গলে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে সবুজ। সেইসঙ্গে দূষণ তো রয়েছেই। প্রকৃতির হাল ফেরাতে তাই এবার অভিনব পদক্ষেপ নিতে চলেছে নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (এনকেডিএ)। নিউটাউন অঞ্চলে এবার থেকে সমস্ত বহুতল বাড়িতেই বাধ্যতামূলকভাবে থাকতে হবে রুফ-টপ গার্ডেন এবং বৃষ্টির জল সংরক্ষণ পরিকাঠামো। আর কিছুদিনের মধ্যেই জারি হতে চলেছে এই নতুন নিয়ম।
গত বছর জুন মাসেই এনকেডিএ-র আলোচনায় উঠে এসেছিল এই প্রস্তাব। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছিল, যে কোনো নতুন বাড়ির নীল-নকশায় বাগানের পরিকাঠামো না থাকলে অনুমতি মিলবে না নির্মাণের। বিষয়টির তদারকি করতেও বিশেষ পর্যবেক্ষক দল গঠনের ব্যাপার প্রস্তাব উঠেছিল সেই আলোচনায়। তার ওপর নির্ভর করেই একটি খসড়া নিয়মাবলি তৈরি করেছিল এনকেডিএ। এবার সেই খসড়াতেই শিলমোহর পড়তে চলেছে সরকারের।
তবে নতুন নিয়মাবলির চূড়ান্ত খসড়া অনেকটাই আলাদা সেই প্রাথমিক নথির থেকে। বিগত মার্চ মাসে একটি উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠকে বেশ কিছু বদল আনা হয় প্রাথমিক পরিকল্পনায়। হাউসিং কমপ্লেক্সের ছাদে বাগান এবং বৃষ্টির জল সংরক্ষণ পরিকাঠামোর পাশাপাশি সংযোজন করা হয় আরও কয়েকটি শর্ত। জানানো হয়েছে প্রতিটি আবাসনের পার্কিং-স্লটে থাকতে হবে বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং পয়েন্ট। পাশাপাশি বর্জ্য জল পুনর্ব্যবহারের পরিশোধন প্ল্যান্টও স্থাপন করতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে। পাশাপাশি প্রতিটি আবাসনে সোলার প্যানেল এবং তাপ-প্রতিফলক রঙের ব্যবহার করতেও বলা হয়েছে নির্দেশিকায়।
কিন্তু আদৌ কি পরিবেশের হাল ফেরাতে সফল হবে এই উদ্যোগ? হ্যাঁ, সে ব্যাপারে সম্পূর্ণ আশাবাদী নিউটাউন কর্তৃপক্ষ। বছর কয়েক আগে নিউটাউনেই সিবি ব্লকের একটি মার্কেটের ছাদে তৈরি করা হয়েছিল বাগান। উদ্যোগ নিয়েছিল স্বয়ং এনকেডিএ-ই। সেই পাইলট প্রোজেক্ট একদিকে যেমন খানিকটা হলেও হাল ফিরিয়েছিল পরিবেশের, তেমনই অনুপ্রেরণা পেয়ে স্বেচ্ছায় ব্যক্তিগতভাবে এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন এলাকার সাধারণ মানুষ। নিজেদের উদ্যোগেই বাড়ির ছাদে বাগান নির্মাণ করেছিলেন তাঁরা। সাফল্য পাওয়ার পর এবার এই ব্যবস্থাকেই দূষণ নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে চলেছে এনকেডিএ।
আরও পড়ুন
কলকাতার বুকে পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের কোর্স, পারিশ্রমিক ১০টি সোনার মোহর!
ইতিমধ্যেই পরিবেশ সংক্রান্ত একাধিক উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ইন্ডিয়ান গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের থেকে ‘প্ল্যাটিনাম রেটেড গ্রিন সিটি সার্টিফিকেট’ আদায় করে নিয়েছে নিউটাউন। কোন পথে হাঁটলে প্রকৃতিকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব, তারই একটি আদর্শক রূপরেখা গঠন করে দিয়েছে কলকাতার পূর্বের এই অঞ্চল। এবার দেখার অন্যান্য শহরও এই পরিকল্পনাকেই মডেল করে নেয় কিনা…
আরও পড়ুন
প্রিন্স ডায়নার নামাঙ্কিত পুরস্কার পাচ্ছেন কলকাতার তরুণী
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কলকাতার বুকে ‘লেখক ব্যাঙ্ক’, তিন দশক আগে উদ্যোগ নিয়েছিলেন সন্দীপ দত্ত