দুর্ধর্ষ দুশমন - ৩
আগের পর্বে
রূপা পণ্ডিত। এই নামে তাঁর পরিচয় পুলিশের খাতায়। ছোটবেলায় আইনের যোগ্য বিচার পাননি রূপা পণ্ডিত। সেই সময়ই তাঁকে ডেকে নিয়েছিল চম্বলের বেহড়। তাঁকে নিজের বড়ছেলের জায়গা দিয়েছিল, পালন করেছিল মানসিং। নিখুঁত নিশানা আর পালিতপিতার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা তাঁকে মানসিং-এর কাছের মানুষ করে তুলেছিল। সেসময় গ্যাং-এ তাঁর সমতুল্য ছিলেন আরেক ডাকাত। লাখন সিং। মানসিং বুঝেছিলেন তাঁদের বন্ধুত্ব যেকোনো সময় পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে শত্রুতায়। তাই দলকে দু’ভাগে ভাগও করে দিয়েছিলেন মানসিং।
লাখন সিং আলাদা গ্যাং তৈরি করে নেন। আর রূপা মানসিং-এর সঙ্গে থেকে একের পর এক ডাকাতি করতে থাকেন। এর মধ্যে একটি মুঠভেরে(এনকাউন্টার) মানসিং-এর ছেলে তহসিলদার ঘায়েল হয়ে গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ সাক্ষী দেন। তহসিলদারকে বাঁচাতে মানসিং আর রূপা মিলে চম্বলে ধ্বংসলীলা চালু করে দেন। সেই প্রত্যেকটি সাক্ষী বা তার আত্মীয়দের খুন করা হতে থাকে যাদের সাক্ষীতে তহসিলদারের ফাঁসি হতে পারত।
আর তারপর এল সেই দিন। যেদিন মানসিং-এর গ্যাং কাছাকাছি নিজেদের ডেরায় ফেরার আগে বিশ্রাম নিচ্ছিল এক গাছতলায়, ঠিক সেই সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের মুঠভের শুরু হয়। পুলিশের এক জওয়ান গোবিন্দ সিং থাপার একটি গুলির মুখে পড়ে যান মানসিং। আহত মানসিং শেষবার রূপার দিকে তাকিয়েই শেষ নিঃশ্বাস ফেলেন। মানসিং-এর একনিষ্ঠ সেবক এবং অদম্য জেদি রূপা নিজের মুখিয়ার লাশকে সেখানে ছেড়ে যেতে চাননি। ১০০ কেজি ওজনের মানসিং-এর লাশ কাঁধে তুলে রূপা দু কিলোমিটার পর্যন্ত দৌড়ন কিন্তু কয়েকশো পুলিশের গুলি রূপার গ্যাং-এর উপর ভারী পড়ে। গ্যাং-এর লোকেরা বাধ্য হয়েই রূপাকে অনুরোধ করে যে মানসিং-এর লাশ সেখানেই রেখে এগিয়ে যেতে। শেষপর্যন্ত নিরাশ রূপা মানসিং-এর লাশ সেখানেই রেখে তার সামনে হাতজোড় করে হাঁটুগেড়ে বসে সকলের সামনে প্রতিজ্ঞা করেন যে তিনি এই খুনের বদলা নেবেন। চম্বলের সেই চিরাচরিত প্রবাদ - খুন কা বদলা খুন।