দুর্ধর্ষ দুশমন - ২৮
আগের পর্বে
বেহড়ে ক্রমশ বাড়ছিল পুলিশি নজরদারি। সেইসঙ্গে প্রাণের সংশয়ও। শেষ পর্যন্ত মাধো সিংয়ের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয় মোহরও। আত্মসমর্পণ করে জয়প্রকাশ নারায়ণের কাছে। বন্দি অবস্থায় জেলেও বজায় ছিল তাঁর দৌরাত্ম্য। এমনকি জেলের সুপারিটেন্ডেন্টকেও মার খেতে হয়েছে সেখানে। পরে কালিয়া সিনেয়ায় ব্যবহৃত হয়েছিল মোহরের বন্দিকালীন সময়ের এই ঘটনা। তবে ১৯৭২ সালে ডাকাতি ছাড়লেও খুন ছাড়েননি মোহর। ২০১২ সালে নিজের মেয়ে এবং স্ত্রীকে খুন করে ভাসিয়ে দেন সিন্ধ নদীতে। নিজে সে কথা স্বীকার করলেও প্রমাণ না থাকায় কিছুই করতে পারেনি পুলিশ। তারপর...
শুধু যে ডাকাত ছিলেন মোহর সিং, তা নয়। তিনি ছিলেন মেহগাঁও মিউনিসিপ্যালিটির দুবারের চেয়ারম্যান। ১৯৯৫-তে তিনি প্রথম রাজনীতিতে আসার কথা ভাবেন। সেই বছর বিজেপি-সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ান। শুধু দাঁড়ানোই নয় বিপুল ভোটে জয়ীও হন। ১৯৯৬ সালে যোগ দেন বিজেপিতে। সে-বছরই দ্বিতীয়বার ভোটে জিতে মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান হন। যেমন-তেমন চেয়ারম্যান নন, একেবারে সৎ চেয়ারম্যান। আজো তার চেয়ারম্যান হওয়ার সাক্ষ্য বহন করছে মেহেগাঁওয়ের জল-ট্যাঙ্ক। সেই যেখানে আমি বাস থেকে নেমেছিলাম। আজ মেহেগাঁওতে এত পাকা রাস্তা, নিকাশিব্যবস্থা, স্কুল-কলেজ। এই ঝকঝকে মেহেগাঁও শহর আগে এরকম ছিল না। আধুনিক মেহেগাঁওয়ের রূপকার এখন আমার সামনে বসে আছেন, প্রবাদপ্রতিম ডাকাত মোহর সিং। আজ নিজের এলাকার সকলের প্রিয় বাগীভাই। এই নামেই পরিচিত তিনি। এরমধ্যেই একটা ছেলে ছুটে এসে কী যেন কানে কানে বলে মোহরকে। মুহূর্তে চোখ দুটো লাল হয়ে ওঠে তাঁর। একবার আমার দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘অউর কুছ পুছনা হ্যায় তো জলদি বোলো, মুঝে জানা হ্যায়। ভোলু বন্দুক নিকালো। গোলি ডালো উসমে’। মোহরের বড়ো নাতি ভোলু।
আমি দ্রুত প্রশ্ন করতে শুরু করি। এর মধ্যে একটা ডবল-ব্যারেল বন্দুক নিয়ে আসে ভোলু। খাটিয়ায় বসে তাতে গুলি ভরার চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু ব্যর্থ হয়। শেষে তাকে ধমকে ওঠেন মোহর সিং। ‘বেহেনচোদ, বারহ সাল উমর হো গয়ী, আভি তক গোলি ডালনা তো দূর বন্দুক পকড়না নেহি আতা! বেশরম কাহিঁকা, কাঁহা সে প্যায়দা হো গয়া মেরে ভন্শ মে। আরে উস চুতিয়েকো থোড়া দিখা দে।’ খবর দিতে আসা ছেলেটার (মোহরের ছোটোছেলে) উদ্দেশে মোহর কথাগুলো বলেন।
তারপর খাটিয়া থেকে হয়ে উঠে দাঁড়ান পঁচাশি বছরের টানটান মোহর সিং। দেখে কে বলবে তখন, কিছুক্ষণ আগেই লাঠি নিয়ে হাঁটছিলেন মোহর! হাতের লাঠিটা ছুড়ে ফেলেন। আমাকে বললেন, ‘দশ মিনিটে ইন্টার্ভিউ শেষ করো, ফির মুঝে যানা হ্যায়’। পায়চারি করতে করতে আমার প্রশ্নের জবাব দিতে থাকেন অস্থির মোহর। এক সময় আমার দিকে হাত তুলে থামালেন। তারপর বললেন, ‘ব্যস হো গয়ী, বাদমে কভি আনা, তুমহারা টাইম খতম’ বলেই গেটের সামনে এসে দাঁড়ানো গাড়িতে গিয়ে উঠলেন। আর গাড়ি ছুটে চলল মোহর সিং-এর দুশমনের দিকে। আজ আর তার রক্ষে নেই।
কথপোকথনটা তো আগেই তুলে দিয়েছিলাম এই লেখায়। মোহরের গাড়ি ছুটে বেরিয়ে গেল চোখের সামনে দিয়ে। আমার আর কাজ নেই এখানে। কিন্তু বিশ্বাস করুন পাঠক আরও যেনো কয়েক ঘণ্টা এই মানুষটির সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করছিল আমার। কীভাবে আরও জানা যায় মোহরের ব্যাপারে, সেই উদ্দেশ্যে মোহর সিং-এর পাড়াতে হাঁটাহাঁটি শুরু করি, দু চারজনের সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু সকলেই যা বললেন তা আমার জানা। অগত্যা হাঁটতে হাঁটতে আবারো সেই বড়ো রাস্তায় এলাম। হাতে টাইম আছে, ভাবলাম এই বাজার এলাকায় একটু হাঁটি। যদি উড়তে উড়তে কোনো খবর কানে আসে। খিদেও পেয়েছে। আগের দুই ডাকাতের রাজকীয় আতিথেয়তা ছিল। কিন্তু এই ডাকাত তো এক গ্লাস জল ছাড়া কিছুই দেননি। ফলে খাবার দোকানের খোঁজ করি। হাঁটতে হাঁটতেই চোখে পড়ে মেহেগাঁও মিউনিসিপ্যালিটি। ঠিক তার পাশেই একটা প্রাইমারি স্কুল। বড়ো হোর্ডিংয়ে চোখে পড়ল প্রতিষ্ঠাতার নাম। ‘মাননীয় চেয়ারম্যান মোহর সিং’। স্কুলের উল্টোদিকেই একটা চায়ের দোকান। খাবার বলতে চারদিকে চপ, ব্রেড-পকোড়া, সামোসা। তাই চপ আর চা সহযোগে সামান্য পেটপুজো সেরে উঠে পরি। মিউনিসিপ্যালিটি গিয়ে লাভ নেই। আরো একটু হেঁটে এগোই। পেয়ে গেলাম আমার কাঙ্ক্ষিত জায়গা। মেহগাঁও পুলিশ স্টেশন।
ঢুকে পড়ি থানা চত্বরে। এদিক ওদিক দেখছি, এমন সময় একজন পুলিশ আমাকে এসে প্রশ্ন করে, কী চাই? তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন এসআই-এর ঘরে। এসআই রণবীর সিং যাদব। আলাপ হল। জিজ্ঞসা করলাম, কী অবস্থা এখন চম্বলের? এর আগে উত্তরপ্রদেশের যে ক-টা থানায় ঘুরেছি তারাও যা বলেছেন ইনিও তাই বললেন। চম্বল এখন ডাকাতশূন্য। ডাকাতির সমস্যা তারা মিটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু সেটা আধা-সত্যি। হ্যাঁ, চম্বলে এখন আগের মতো অত বড়ো গ্যাং নেই, এখন আর আগের মতো সেই আতঙ্কে ভোগে না চম্বল। উন্নত হয়েছে এখানকার রাস্তাঘাট। জেলায় জেলায় সিনেমা হল, শপিং মল, বড়ো বড়ো দোকানপাট হয়েছে। কিন্তু একেবারে ডাকাতশূন্য হয়নি চম্বল। তার প্রমাণ তো গতকাল রাতেই পেয়েছি। স্বয়ং এক ডাকাতের ডেরায় রাত কাটিয়েছি। বাবুলী আর গৌরি যাদব তাহলে কারা? হাসি এসআই-এর কথায়। হ্যাঁ, এখন যারা রয়েছে তারা বাগী নয়, এই সমস্ত গ্যাং রেজিস্টার্ড নয় পুলিশের খাতায়, ফলে পুলিশ এদের অস্তিত্ব স্বীকার করে না। কিন্তু আমার রিসার্চ অনুযায়ী চম্বলে এখনো গোটা কুড়ি ডাকাতদল অপারেট করে।
প্রশ্ন করি, পুরোনো ডাকাতদের সম্পর্কে কিছু জানা যাবে? যদি কোনো নথিপত্র থাকে সেগুলি আমার কাজে আসবে। আমি ছবি তুলে নেব। আমাকে একটু বসতে বলে কাকে যেন ফোন করেন রণবীরজী। তারপর ফোন নামিয়ে রেখে বলেন, আপনাকে একজন কনস্টেবল আমাদের মহাফেজখানায় নিয়ে যাবে। আপনি এত দূর থেকে এসেছেন। কিন্তু এমন কিছু লিখবেন না যাতে আমরা বিপদে পড়ি। বুঝতেই পারছেন সরকারি চাকরি। তাকে আশ্বস্ত করে সেখান থেকে খানিকটা দূরে যাই সেই কনস্টেবলের সঙ্গে। সঙ্গী কনস্টেবল আমাকে একটা রুম খুলে দেন। আলো জ্বলতেই দেখতে পাই লোহার র্যা কে থরে থরে ফাইল। না জানি কত বছর ধরে ধুলোয় ঢাকা পড়ে আছে সে-সব। চা জল কিছু লাগবে কিনা আমাকে প্রশ্ন করে সঙ্গী সেপাই। তাকে এক কাপ চা আর একটা ন্যাকড়া আনার কথা বলি। রুমালে মুখ ঢেকে আমি ধুলো ঘাঁটতে বসে পড়ি। আমার সামনে খুলে যেতে থাকে একের পর এক রোমহর্ষক কাহিনি। সেসব পড়তে পড়তে কখন সন্ধে হয়ে গেছে খেয়াল নেই। অগত্যা উঠে আসি ধুলো ঝেড়ে। বেরিয়ে পড়লাম থানা থেকে। আগামী কাল আমার গন্তব্য বিলাও। দস্যু সম্রাট বাগী দদ্দা মালখান সিংয়ের গ্রামের বাড়ি। তার আগে একটা কথা জানান দিই। এই লেখাটি লিখতে লিখতেই খবর পাই গত মার্চ মাসে লকডাউন চলাকালীন মারা গেছেন মোহর সিং, বয়স হয়েছিল ৯০ এর কাছাকাছি। একটা আফসোস থেকে গেছে, কারণ আমার পরের চম্বল সফরে এই মানুষটাকে আরও একটু কাল্টিভেট করার ইচ্ছে ছিল, একটা ডকুমেন্টারিও বানাব ভেবেছিলাম, সে আর হল না। কী আর করা যাবে।
বিলাও গ্রাম। ভিণ্ড জেলার অন্যান্য ছোটো গ্রামগুলিরই একটা। ভিণ্ড বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় পনেরো কিলোমিটার উজিয়ে পৌঁছোলাম বিলাওতে। সকাল সকাল বাসে চাপার পর, বাস আমাকে নামিয়ে দিল এই হাইওয়ের সামনে। রাস্তা পেরিয়ে উলটো দিকের একটা কাঁচা রাস্তা ধরে এগিয়ে চলি। রাস্তা বলতে শুধু গেরুয়া রঙের কাঁচা মাটির রাস্তা। হাঁটছি তো হাঁটছি। দু-পাশে বেহড় আর খেত। প্রচণ্ড জল তেষ্টা পেয়েছে। অথচ জলের সন্ধান নেই দূর দূর। প্রায় মিনিট পঁচিশ হেঁটেছি। মাঝে একটা বড়ো গাছতলায় দাঁড়িয়েছি বিশ্রাম নিতে। গ্রামে পৌঁছোতে আর কতদূর হাঁটতে হবে কে জানে। মাঝেমাঝে পাশ দিয়ে দু-একটা মোটর সাইকেল হুঁশহাঁশ করে বেড়িয়ে যাচ্ছে। তার একটাকে থামিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম, গ্রাম কতদূর? জবাব এসেছিল এই তো সামনেই। এভাবে দু-একজনকে জিজ্ঞসা করি, কতদূর? বারবারই উত্তর আসে সামনে। অথচ প্রায় তিরিশ-পঁয়ত্রিশ মিনিট হাঁটছি। তেষ্টায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে। একসময় বিরক্ত হয়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের একটা গান গাইতে শুরু করি, ‘কত দূর আর কত দূর, বলো মা’।
গ্রামের দিক থেকে বাইক আসছে, কিন্তু উলটো দিকে একটাও বাইক দেখতে পাচ্ছি না যে লিফট চাইব। শেষমেষ একজন দেহাতি মহিলাকে দেখতে পাই পাশের জঙ্গলে কাঠ কুড়োতে। তাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি, জল আছে কিনা। প্রথমে কথা বলতেই চায় না। অনেক কষ্টে বুঝিয়ে বলি, অনেক দূর থেকে আসছি, বিলাও যাব, তেষ্টা পেয়েছে একটু জল দিন। মহিলা আমাকে নিয়ে আসে একটা খেতের পেছনে, পাম্পহাউসের পেছনে। একটা চৌবাচ্চা মতো দেখিয়ে দেয়। চৌবাচ্চাটা অঢাকা। কাছে গিয়ে জলের চেহারা দেখে খাব কী, অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি মহিলার দিকে। কালো জলে শ্যাওলা জমেছে। থিকথিক করছে পোকায়। প্রশ্ন করি, এই জল খাব? মহিলা উত্তর দেয়, ‘হম তো এহি পিতে হ্যায়’। বলি, জল তো নোংরা। দেহাতি মহিলা বলেন, এখান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে একটা নলকা (কল) আছে, কিন্তু সেটা ঠাকুরদের। তারা নিচু জাত, তারা সেই কলে জল খেতে পারে না। খেতের মাঝে মাঝে এই ধরনের চৌবাচ্চা আছে। তারা সেখান থেকেই জল খান। আমাকে বললেন, ‘পিনা হ্যায় তো পিয়ো, নেহি তো জানে দো। বহোত কাম হ্যায় মেরা’। বলেই মাথায় কাঠকুটোর বোঝা নিয়ে হাঁটা শুরু করে। আমি আর কী করি, পেছনে পেছনে চলি। যেতে যেতেই জানতে পারি বিলাও যেতে গেলে এখনো অনেকটা চলতে হবে। মাঝে মাঝে বাইক যাওয়ার ফলে গেরুয়া রঙের ধুলো মাথা মুখ ভরে দিয়ে যাচ্ছে। জানতে পারি, এই গ্রামে গোটা ত্রিশেক ঘর এই মহিলাদের মতো নিচু জাতের মানুষের। আর বাকি সব ঠাকুর, জাঠ, গুজ্জর। এই মহিলারা থাকেন এক কোণে। যেদিন সকাল সকাল উঠতে পারেন, সেদিন পাশের গ্রামের কোনো কুঁয়োর সামনে গিয়ে দাঁড়ালে জল পাওয়া যায়। অন্যথায় সপ্তাহে একদিন তাঁরা পায়ে হেঁটে প্রায় তিরিশ-চল্লিশ কিমি দূরে, চম্বল নদী থেকে জল নিয়ে আসেন। সেই জলেই তিন-চারদিন তাঁদের চলে। অথচ গ্রামের প্রায় বেশিরভাগ বাড়িতেই কুয়ো দেখেছি। কী নিদারুণ বালাই এদের। মরে গেলেও কেউ একফোঁটা জল দেবে না। একমাত্র ওই ভোরবেলা যদি পাশের গ্রাম থেকে জল আনতে না পারে। এই আমার ভারতবর্ষ। এই একবিংশ শতাব্দীতে বসেও ঘরের কাছে জল থাকা সত্ত্বেও, শুধুমাত্র জাতপাতের কারণে খাবার জল জোগাড় করতে হাঁটতে হবে এতদূর। নইলে পোকা দুর্গন্ধে ভর্তি জলই সম্বল। কোথায় আমার ঝাঁ-চকচকে শহুরে সংস্কৃতি, মল কালচার, আর কোথায় আমার এই গ্রামীণ ভারতবর্ষ। প্রদীপের তলায় এত অন্ধকার।
জাতপাতের সমস্যা আমি পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো পিছিয়ে থাকা গ্রামেও দেখেছি। কিন্তু এতটা নয়। খাবার জলের জন্য খুনোখুনি পর্যন্ত হয়ে যাবে এখানে। যদি কেউ ভুল করেও কোনো উঁচু জাতের কুয়ো ছুঁয়ে ফেলেছে, বসবে খাপ পঞ্চায়েত। সমস্ত গ্রামের সামনে খাটিয়ায় হুঁকো বা গড়গড়া খেতে খেতে সরপঞ্চ বিধান দেবেন জমি কেড়ে নেওয়ার। হবে জরিমানা। দিতে না পারলে গ্রামের মাথারা ধর্ষণ করবে সেই নিচু জাতের মেয়েদের। তখন কিন্তু জাত যাবে না সমাজের উঁচুতলার মাথাদের। তারপর, একদিন ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে এদেরই কেউ হাতে তুলে নেবে বন্দুক। ঝাঁপিয়ে পড়ে আশ্রয় নেবে বেহড়ে। আর আমি মাত্র চল্লিশ মিনিট হেঁটে তৃষ্ণা সহ্য করতে না পেরে কাহিল। আর এই জীবন এদের রোজকার। মাথা নিচু হয়ে আসে আমার। কথা বেরোয় না মুখ থেকে। মনে হচ্ছে এক ছুটে পালিয়ে যাই এখান থেকে। পালাবার রাস্তা পেয়ে যাই। হাইওয়ের দিক থেকে একটা বাইক আসতে দেখে হাত নেড়ে থামাই। নিজের পরিচয় দিয়ে বলি একটু গ্রামের কাছাকাছি নামিয়ে দেবে? বাইশ-তেইশের একটা ছেলে। পেছনে উঠে বসতে বলে। বাইকের তোড়ে ধুলো ঢেকে দেয় পেছনে পড়ে থাকা নিচু জাতের সেই অন্ধকার। আমাকে এগিয়ে নিয়ে চলে আরো এক অন্ধকারের দিকে।
Powered by Froala Editor