সময়ভ্রমণ – ১
সময় ব্যাপারটা যে নিশ্ছিদ্র কুটিল ব্যাপকতায় সাতিশয় গোলমেলে, সেটা জানাই ছিল। এমনকি হকিং সাহেব সময়ের ইতিহাস নিয়ে তাঁর বেস্টসেলার বইটা লিখে ফেলবার আগেও সময় নিয়ে বিস্তর কচকচানি হয়েছে। কিন্তু থাক। আসল কথাটা হল, আঙুলের ফাঁক দিয়ে মেলা ঝুরো বালি সাঁ সাঁ গুড়গুড় করতে করতে ঝরে পড়ে যাচ্ছে, যা ছিল তা এখন নেই, কী থাকবে তা কে-ই বা জানে, যা বলা-কওয়ার আছে, এইবেলা বলে ফেলতে হয়।
এ বাজারে অবলমোভের মতো কেউ থাকলে তাকে স্রেফ গুলি করা হত। বলে রাখা ভালো, অবলমোভ হচ্ছে উনিশ শতকের বিখ্যাত রুশ উপন্যাসের নামচরিত্র। গনচারভের লেখা এই উপন্যাসটা জুড়ে অবলমোভ শুধু ঘুমোয় আর ঘুমোয়। কিছু করে না, বাইরে যায় না, এমনকি বিছানা থেকেও নাবে না বড় একটা। ঘুম ভাঙলে ভাবে, কত কাজ পড়ে আছে, থাক, কাল করবো। সে কাল, হায়, আসে না। অবলমভের এক চাকর ছিল, মনিবের দেখাদেখি সেও ঘুমোতে থাকে। অবলমভের প্রচুর ভূসম্পত্তি ছিল, মানুষটিও ভালো ও সহৃদয়, কিন্তু ওই যে, ঘুম। ঠিক অবলমোভ কায়দায় নয়, কিন্তু এ দেশীয় জমিদারবর্গের কথা ভাবুন। জমি থেকে খাজনা আসছে, আর তা দিয়ে দেদার ফুর্তি। জুড়িগাড়ি, বাইজি, মদ এবং ঘুম। ঠেলে, ঠেসে ঘুম। জমিজমা ও ভূসম্পত্তি না থাকলে অবশ্য এহেন সময়হীন মহাঘুম সম্ভব হত না।