মহাভারতে রাজনীতি - ২৭
আগের পর্বে
দ্রোণ জানালেন নিষাদরা নিচু জাত, ম্লেচ্ছ। বেণ-এর উরু থেকে তাদের জন্ম। আহত একলব্য প্রশ্ন করলেন, দ্রোণ ব্রাহ্মণ হয়ে অস্ত্রশিক্ষা দিচ্ছেন কী করে? নিষাদ বালকের স্পর্ধা দেখে রেগে গেলেন দ্রোণ। তবে জানালেন, একলব্যকে শিষ্য করলে তাঁর চাকরি থাকবে না। হতাশ একলব্য অরণ্যে ফিরে এসে দ্রোণের মূর্তি তৈরি করলেন। তার সামনেই শুরু হল অস্ত্রশিক্ষা। একদিন শিক্ষার সময় একটি কুকুর অনেক্ষণ ধরে ডাকছিল। শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে একলব্য শব্দের উৎস লক্ষ্য করে সাতটি তীর ছুঁড়লেন। বিদ্ধ কুকুরটি ফিরে গেল প্রভুর কাছে, অর্থাৎ হস্তিনাপুরের যুবরাজদের কাছে। অরণ্যের মধ্যে অজ্ঞাত ব্যক্তির এমন ধনুর্বিদ্যার নমুনা দেখে তাঁরা অবাক হলেন। তারপর…
পাণ্ডবরা দেখলেন, একজন কৃষ্ণবর্ণ, ধূলিধুসরিত, কৃষ্ণজিনজটাধারী যুবক অনবরত বাণক্ষেপ করছে। যুধিষ্ঠির তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কে তুমি? কার লোক?
কৃষ্ণজিনজটাধারী একলব্য জবাব দিল, আমি নিষাদরাজ হিরণ্যধনুর পুত্র, দ্রোণাচার্যের শিষ্য এবং ধনুর্বেদশিক্ষা সম্পন্ন করেছি।
ভীম বললেন, তুমি কার লোক?
একলব্য উত্তর দিলেন, আমি আমার লোক।
আরও পড়ুন
কুকুরের চিৎকারে বিরক্ত একলব্য, নিক্ষেপ করলেন একসঙ্গে সাতটি তীর!
অর্জুন খুব বিস্মিত হলেন। গুরুদেব দ্রোণ তাহলে জঙ্গলের নিষাদদের সঙ্গে ষড় করছেন! এই কথা পিতামহ ভীষ্মের কানে তুলতে হবে। আচার্য তাদের জল আনতে বলে অশ্বত্থামাকে অনেক গুপ্তবিদ্যা শিখিয়েছেন তা অর্জুন বিলক্ষণ জানেন। এখন শত্রু পাঞ্চালরাজকে শায়েস্তা করার জন্য হস্তিনাকে ভরসা না করে আচার্য নিষাদদের শরণাপন্ন হয়েছেন। অর্জুন একলব্যকে শান্ত স্বরে জিজ্ঞাসা করলেন, আচার্য দ্রোণ এখানে আসেন না তুমি হস্তিনায় যাও শিক্ষা নিতে?
একলব্য জবাব দেয়, আমি একবার গিয়েছিলাম। তার পর থেকে দ্রোণাচার্য স্বয়ং এই বনের মধ্যে আমাকে সমগ্র ধনুর্বেদশাস্ত্র শিখিয়েছেন।
পাণ্ডব ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে বিদ্বান সহদেব বললেন, আমাদের মৃগয়া না করে হস্তিনায় ফিরে সব কথা পিতামহ ভীষ্মকে জানানো উচিত।
দ্রুতগামী রথ চলল হস্তিনানগরের দিকে।
আরও পড়ুন
ডাক পড়ল হস্তিনার রাজসভায়, দ্রোণের কাছে অস্ত্রশিক্ষা প্রার্থনা একলব্যের
হস্তিনায় পৌঁছে অর্জুন সোজা চলে গেলেন পিতামহ ভীষ্মের কাছে। পাণ্ডুর এই পুত্রটিকে পিতামহ অত্যন্ত স্নেহ করেন। অর্জুনের কাছে সব শুনে ভীষ্ম ডেকে পাঠালেন বিদুরকে।
বিদুর কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের পুত্র। তাঁর মা দাসী ও শূদ্রা। সেইজন্য বিদুরকে ক্ষত্তা বলা হয়। বর্ণবিচারে প্রজ্ঞাবান বিদুর পারশব—শবতুল্য, কিন্তু তাঁর বিচক্ষণতা ও কূটবুদ্ধি অপরিসীম। ভীষ্মের ডাকে বিদুর এসে সব শুনে দ্রোণাচার্যকে ডাকা সমীচীন মনে করলেন।
দ্রোণ এলেন, সব শুনলেন। তাঁর হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল ভয়ে। তিনি তোতলাতে তোতলাতে বললেন, বিশ্বাস করুন গাঙ্গেয়, আমি একলব্যকে কোনও প্রকার গুপ্ত বা প্রকাশ্য শিক্ষা দিইনি। আপনি যেমন বলেছিলেন, তেমন ভাবেই তাকে প্রত্যাখ্যান করেছি।
ভীষ্ম বললেন, তবে নিষাদপুত্র এই বিদ্যা কোথা থেকে শিখলো?
আরও পড়ুন
হস্তিনানগরীর উদ্দেশে রওয়ানা দিলেন একলব্য, বিচিত্র অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন পথে
দ্রোণ উত্তর দিলেন, বিশ্বাস করুন, আমি নিজেই এই বিদ্যা জানি না। কী করে শেখাবো?
অর্জুন বললেন, কিন্তু গুরুদেব, নিষাদপুত্র জানাল যে তার গুরু আপনি, আপনার একটি মূর্তির সামনে সে অস্ত্রশিক্ষা করে থাকে। আপনি অনুমতি না দিলে সে এই সাহস পায় কোথা থেকে!
দ্রোণ ক্ষণকাল চিন্তা করে জানালেন, এখন দেখছি সে বাহ্যত আমার শিষ্য না হলেও ফলত আমারই শিষ্য।
বিদুর এতক্ষণ চুপ করেছিলেন। তিনি এ বার মুখ খুললেন, এই ভাবে কথার খেলা খেললে চলবে না আচার্য!
আরও পড়ুন
দ্রোণাচার্যকে রাজকুমারদের অস্ত্রশিক্ষার ভার দিলেন ভীষ্ম, দ্বিধাগ্রস্ত দ্রোণ
অর্জুন ক্রোধবশত বলে বসলেন, হে আচার্য! একদা আলিঙ্গন করে প্রীতিপূর্বক আমাকে বলেছিলেন ‘আমার অন্য কোনও শিষ্য তোমার থেকে শ্রেষ্ঠ হবে না’। অথচ আজ? আপনার ‘বাহ্যত নয় কিন্তু ফলত’-শিষ্য আমার থেকে তো বটেই, সমস্ত বীর অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
দ্রোণ কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললেন, আমাকে একলব্যের কাছে নিয়ে যেতে পারবে?
অর্জুন জবাব দিলেন, পিতামহ আদেশ দিলে নিশ্চয় নিয়ে যাব।
ভীষ্ম অর্জুনসহ অন্যান্য পাণ্ডবদের চলে যেতে বললেন। দ্রোণাচার্য ও বিদুরকে নিয়ে তিনি একটি কক্ষে উপস্থিত হয়ে তার দ্বার রুদ্ধ করে দিলেন।
বিদুর ফিসফিস করে বললেন, হে আচার্য, আপনি যে নির্দোষ তা প্রমাণ করতে পারবেন?
দ্রোণ উত্তর দিলেন, বিশ্বাস করুন আমি একলব্যকে ধনুর্বেদশিক্ষা দিইনি।
ভীষ্ম বললেন, বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের প্রশ্ন এখানে তুলছেন না ক্ষত্তা, তিনি প্রমাণ চাইছেন।
দ্রোণ ভয় পেয়ে বললেন, একলব্যকে কোনও প্রকার শিক্ষা যে দিইনি তা আমি দেবতাদের নামে শপথ করে বলছি।
বিদুর হেসে ফেলে জানালেন, একলব্য বলছে আপনি তার গুরু আর আপনি বলছেন সে আপনার শিষ্য নয়। আচ্ছা এক কাজ করুন, আমরা যা বলব, তাই আপনি করতে পারবেন?
দ্রোণ প্রশ্ন করলেন, কী?
বিদুর বললেন, একলব্যকে হত্যা করতে হবে।
দ্রোণাচার্য ভীষণ ভয় পেয়ে গেলেন, না মানে হত্যা করব, মানে...
ভীষ্ম বললেন, ক্ষত্তা, খামোখা আচার্যকে ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলো না। হস্তিনাকে সুরক্ষিত রাখার দায় আমার। একলব্য বেঁচে থাকলেও সেই সুরক্ষা সম্ভব।
দ্রোণ যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন।
ভীষ্ম বলতে লাগলেন, আচার্য! আপনাকে ডানহাতি সেই তীরন্দাজের দক্ষিণ হস্তের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ কেটে আনতে হবে।
দ্রোণাচার্য অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে গেলেন। বিদুর ও ভীষ্ম হো হো করে হাসতে লাগলেন। প্রাতিকামী এসে দ্রোণের চোখেমুখে জল ছিটিয়ে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিল।
স্ত্রী কৃপী ও পুত্র অশ্বত্থামাকে সব কথা খুলে বললেন আচার্য।
কৃপী উপদেশ দিলেন, এই চাকরি আপনি ছেড়ে দিন ভর্তা।
অশ্বত্থামা বললেন, হে পিতা, সব কথা ধৃতরাষ্ট্র ও তাঁর পুত্রদের অবিলম্বে জানান। আপনার চাকরি চলে গেলে আমরা খাব কী?
ধৃতরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ পুত্র দুর্যোধন অশ্বত্থামার বিশেষ বন্ধু। দুর্যোধন নিজেকে যুবরাজ বলে ঘোষণা করেছেন কারণ তাঁর পিতা ধৃতরাষ্ট্র হস্তিনার রাজা। ধৃতরাষ্ট্র যেহেতু অন্ধ, তাই তাঁর অনুজ পাণ্ডু রাজা হওয়ার দাবিদার ছিলেন। কিন্তু তিনি রাজত্ব ছেড়ে বনে চলে যান এবং সেখানেই প্রয়াত হন। তাঁর পাঁচ ছেলে এখন হস্তিনার অর্ধেক দখল নিতে চাইছেন। দুর্যোধন তাঁদের কোনও অংশ দেবেন না বলে ঘোষণা করেছেন। পিতামহ ভীষ্ম এবং বিদুর সব সময় পাণ্ডবদের পক্ষে থাকেন। ভীষ্ম দ্রোণকে অস্ত্রগুরুর পদে বসিয়েছেন বটে, কিন্তু দুর্যোধন বাধা দিলে পিতামহ আচার্যকে সরাতে পারবেন না।
দ্রোণ পুত্রকে বললেন, এক্ষুণি কিছু বলার দরকার নেই। দেখি ঘটনা কোন দিকে যায়।
হঠাৎ রাজসভার দূত এসে দ্রোণকে জানাল, বাইরে দ্রুতগামী রথ প্রস্তুত। এক্ষুণি তিনি যেন প্রস্তুত হয়ে রথে উপবেশন করেন, মহামান্য ভীষ্ম এই আদেশ পাঠিয়েছেন।
দ্রোণাচার্য দূতের সঙ্গে বাড়ির বাইরে গিয়ে দেখেন, রথ প্রস্তুত। সারথি ছাড়া সেখানে বসে রয়েছেন অর্জুন।
রথ চলতে শুরু করল। গুরু-শিষ্য কারও মুখে কোনও কথা নেই। এই ভাবে সারা রাস্তা অতিক্রম করে তাঁরা একলব্যের কাছে পৌঁছলেন।
দ্রোণ দেখলেন, ধূলিধুসরদেহ, জটাধারী ও কৌপীনপরিধায়ী নিষাদ একলব্য একমনে ধনু ধারণ করে অনবরত বাণক্ষেপ করছে।
দ্রোণাচার্যকে আসতে দেখে অভিভূত একলব্য তাঁর কাছে গিয়ে চরণযুগল ধারণ করে মস্তক দ্বারা ভূতল স্পর্শ করল। দ্রোণাচার্য বাধা দিলেন না।
আচার্যকে পূজা করে একলব্য নিজেকে তাঁর শিষ্য বলে ঘোষণা করে কৃতাঞ্জলি হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।
দ্রোণ বললেন, হে বীর যদি তুমি আমারই শিষ্য হও তবে আমাকে সেই শিক্ষাদানের বেতন দাও।
একলব্য আনন্দিত হয়ে বলল, কী চান গুরুদেব, আদেশ করুন। হে বেদজ্ঞশ্রেষ্ঠ, গুরুকে অদেয় আমার কিছুই নেই।
দ্রোণাচার্য একটু থামলেন। বললেন, আমাকে শব্দহরণ বাণনিক্ষেপের পাঠ দাও।
অর্জুন অদূরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
একলব্য জিজ্ঞাসা করলেন, হে আচার্য কার উপর সেই শব্দহরণ বাণ নিক্ষেপ করে ওই বিদ্যা আপনার সামনে তুলে ধরব?
দ্রোণাচার্য বললেন, আমার উপর, যাতে আমি কোনও কিছু তোমার কাছে চাইতে না পারি। আমার অবস্থা যেন হয় সেই শিকারী কুকুরের মতো যার মুখে আড়াআড়িভাবে তুমি সপ্ততীর গেঁথে দিয়ে তার স্বরনিক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছিলে। পারবে ওই ভাবে আমার যাচনা বন্ধ করে দিতে?
একলব্য জবাব দেয়, না গুরুদেব আপনি অন্য বেতন চান।
“দেবে?”
“আমার অদেয় কিছুই নেই।”
দ্রোণ বললেন, তবে যে হাতে তুমি শর নিক্ষেপ করো সেই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠটি আমাকে উপহার দাও।
অদূরে দণ্ডায়মান অর্জুন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেন না।
একলব্য মৃদু হাসল। তার পর বলল, সত্যিই এটা কি গুরুদক্ষিণা না রাষ্ট্রপ্রণাম?
দ্রোণ জবাব দিলেন, কথার খেলা বা মারপ্যাঁচে যেও না, তুমি হলে হস্তিনার কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। তোমার ওই যে শর তার মধ্যে আছে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মন্ত্র। নিষাদ মানে শূদ্র হয়ে তুমি কেন অস্ত্রচালনা করছো? জানো না, শূদ্রদের কর্ম হল ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়-বৈশ্যদের সেবা করা?
একলব্য জানায় সে সব জানে। কিন্তু এই যে অরণ্য যেখানে রাজা হিরণ্যধনু ও নিষাদরা বাস করেন সেই এলাকা হস্তিনার অন্তর্ভুক্ত নয়।
অর্জুন জিজ্ঞাসা করেন, তবে কার?
একলব্য উত্তর দেয়, এই যে তামাম বনাঞ্চল সে সবের মালিক এখানকার অধিবাসী। আর আমার পিতা রাজা হিরণ্যধনু যদিও মগধের পরাক্রমশালী সম্রাট জরাসন্ধের অধীনে সেনানায়কের কাজ করেন, তবুও জরাসন্ধ আমাদের রাজা নন, আমরা স্বাধীন। সুতরাং দক্ষিণ বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ আপনাকে উপহার দেওয়ার আগে রাজা হিরণ্যধনুর অনুমতি নেওয়া আমার কর্তব্য।
দ্রোণ একই সঙ্গে নিরাশ ও ক্ষুব্ধ হন। ক্ষোভ প্রশমিত করে তিনি বলেন, তবে যে তুমি একটু আগে বললে, তোমার অদেয় কিছুই নেই?
একলব্য জবাব দেয়, স্বাধীনতা বিসর্জন দিতে বলছেন আপনি। পরাধীন মানুষের দেয় কিছুই থাকে না হে আচার্য।
দ্রোণাচার্য ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, তবে আমার ওই মৃন্ময় মূর্তি ভেঙে ফেল।
একলব্য বললেন, ওটা আপনার মূর্তি নয়, আমার গুরু দ্রোণাচার্যের প্রতীক, সে আপনার মতো অন্ধ রাষ্ট্রের ক্রীতদাস নয়। আপনারা আসুন।
হতবাক দ্রোণাচার্য ও অর্জুন হস্তিনায় ফিরে গেলেন।
কয়েক দিন পর একলব্যকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় অরণ্যে পাওয়া গেল। ঘুমের মধ্যে কারা যেন তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গভীর অরণ্যে ফেলে রেখে গেছে। একলব্যের দক্ষিণ বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠটি নেই। দুষ্কৃতীরা খুব যত্ন করে সেই আঙুল কেটে ভেষজ লতাপাতা দিয়ে বেঁধে দিয়ে চলে গিয়েছে। জঙ্গলে মধু ও কাঠ সংগ্রহ করতে যায় যারা তারাই খেয়াল করে একলব্যকে। তার মুখও বাঁধা ছিল।
হিরণ্যধনু হতবাক। কোনও নিষাদ এই কর্ম করতে পারে, এ কথা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। জাম্ববতী ও অঙ্গাগ্রণী অঝোর নয়নে কেঁদে চলেছে। নিষাদ পুরুষ ও রমণীরা সেদিন অরন্ধন করল ও উপবাসে থাকল। একলব্য বলল, আমি জানি কারা আমার আঙুল কেটে নিয়ে গিয়েছে।
হিরণ্যধনু বললেন, বল সেই দুরাত্মা কারা?
একলব্য জবাব দিলেন, হস্তিনার রাষ্ট্রপুরুষদের হুকুমে ভাড়াটে সৈনিকরা এই কর্ম করেছে।
অঙ্গা বলল, আমি আগেই বারণ করেছিলাম, পই পই করে বলেছিলাম হস্তিনায় না যেতে।
একলব্য বলে, শান্ত হও, আমার হাতের একটা আঙুল গিয়েছে, এখনও চারটে রয়েছে। তাছাড়া তর্জনী ও মধ্যমা দিয়েও আমি তীর ছুঁড়তে পারি। সমগ্র ধনুর্বিদ্যা আমার করায়ত্ত, করের একটি আঙুল হস্তিনা নিয়ে গেলেও অবশিষ্টরা রয়েছে।
হিরণ্যধনুর মুখ রাগে লাল হয়ে গেল। তিনি বললেন, আমি হস্তিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা করব।
Powered by Froala Editor