রাজনৈতিক নেতা হবেন সংকীর্ণ ধর্মগুণের ঊর্ধ্বে, এমনই শিক্ষা দেয় মহাভারত

মহাভারতে রাজনীতি - ২

আগের পর্বে

মহাভারতে ‘ধর্ম’-র অর্থ ভিন্ন। রাজনীতি আর দণ্ডনীতির মধ্যেও রয়েছে ফারাক। দণ্ড মানেই কি শাস্তি? কী বলছে মহাভারত? এই দণ্ডনীতির সৃষ্টি করেছিলেন বাগদেবী সরস্বতী। কিন্তু বাগদেবী হিসাবেই তাঁর অধিষ্ঠান না শুরু থেকে। গঙ্গা, অগ্নি, সূর্য যেমন পূজিত হয়েছেন দেব-দেবী হিসাবে। তেমনই সরস্বতী নদী উর্বর করত দেশকে, দিত সমৃদ্ধি। তাই তটিনী পূজিত হতে লাগলেন জ্যোতির্ময়ী অধিষ্ঠাত্রী দেবী রূপে। বেদ সেই কথাই বলে। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে তিনি বদলে যান বাগদেবীতে। বদলে যান বাক্যের অধিষ্ঠাত্রীতে।

শব্দ নিয়ে রাজনীতি এবং রাজধর্ম অর্থাৎ দণ্ডনীতি বা রাজনীতি নিয়ে নীতিশাস্ত্রের কথা মহাভারতে নেহাত কম নেই। খুব সন্তর্পণে সে সব না পড়লে গুলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বা বলা যেতে পারে, আলোচনাগুলি এমন যে তার মধ্যেই গুলিয়ে দেওয়ার বীজ নিহিত আছে। এটাকে স্বাভাবিক বলে ধরে নিতে হবে। গুলিয়ে গেলে রাজনীতিরই সুবিধা। রাজধর্ম ও রাজনীতি কথা দুটোর অর্থ অভিন্ন হবে যদি এদের মধ্যেকার ধর্ম ও নীতি শব্দ দুটোর অর্থ অভিন্ন হয়। ধর্ম শব্দের অর্থ ধনপ্রাপ্তি এবং লোকস্থিতি, এই দ্বিতীয় অর্থটি হল মানবকল্যাণ। প্রথমটিও মানবের কল্যাণের নিমিত্ত। অপর পক্ষে নীতি শব্দটি এসেছে ‘নী’ নামক ধাতু থেকে যার অর্থ নিয়ে যাওয়া, একটি লক্ষ্যের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া। ‘নেতা’ শব্দটিরও ধাতু একই। ‘নেতা’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘নেতব্য’ থেকে। ‘নী’ নামক ধাতুর সঙ্গে ‘তব্য’ যোগ করে শব্দটি নিষ্পন্ন হয়েছে, যার অর্থ হল নেয়, প্রাপনীয়। সহজ করে বললে নায়ক, যূথপতিনেতা, বাহক, অগ্রণী, প্রভু। একটু বিশদে গিয়ে ভাবলে নেতার সঙ্গে রাজার তেমন তফাৎ চোখে পড়ে না; এই রাজা অবশ্য রাজসূয় যজ্ঞ করে নরপতি হয়েছেন, এমন নাও হতে পারে। এই নেতা কেমন হবেন, তা আমাদের প্রাচীন শাস্ত্রগুলি বিশদে ব্যাখ্যা করেছে। কিন্তু নেতা ধর্মহীন হবেন কী প্রকারে? ভারতীয় ঘরানায় ধর্ম বলতে যা বোঝায় তাতে নেতার ধর্মহীন হওয়া চলে না কারণ ‘ধর্ম’ শব্দটি সেখানে নৈতিকতার নামান্তর মাত্র।

অরাজকেষু রাষ্ট্রেষু ধর্ম্মো ন ব্যবতিষ্ঠতে। অরাজক রাষ্ট্রে পরস্পরের মধ্যে বিবাদ লেগে থাকে। এই পরস্পর কারা? যাদের লক্ষ্য অন্য, যাদের উপাস্য আলাদা এবং যারা ভিন্ন সম্প্রদায়ের। এমন পরিস্থিতি হলে লোকজন নিশ্চিন্তমনে সংস্কৃতিচর্চা করতে পারেন না। দস্যুরা এমন অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে নানা রকম উৎপাত করে মানুষের ধনপ্রাণকে অতিষ্ঠ করে তোলে। অতএব লোকসমাজকে অরাজক বা নেতৃত্বহীন রাখতে নেই। নেতা এসে সেই অবস্থা দূর করেন কিন্তু তিনি কি কোনও পক্ষ নেন? না। কারণ তিনি নিরপেক্ষ, তিনি নৈতিকতা নামক ধর্মের অনুসারী। 

সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে ক্লিক করুন

More From Author See More