আমার সুরগুলি পায় চরণ, আমি পাইনে তোমারে

শঙ্কর সরণি - ২১
আগের পর্বে

১৯১৯ সালে বর্তমান বাংলাদেশের যশোরে জন্ম অমলার। বাবা অক্ষয় নন্দী ছিলেন পেশায় স্বর্ণব্যবসায়ী। তবে অরবিন্দর শিষ্য মানুষটি ছিলেন আদ্যন্ত আধুনিক। আর তা প্রকাশ পেত সংসারের মধ্যেই। অমলার যখন ১১ বছর বয়স, তখন বিয়ের জন্য রূপ নিয়ে গঞ্জনা শুনতে হবে, এমনটা চাননি অক্ষয়। তাই মেয়েকে নিয়ে বিলেত পাড়ি দিলেন। সেখানে গ্রেভাঁ, লুভ সহ ৯৯টি মিউজিয়াম ঘুরলেন অমলা। প্যারিসে শিখলেন ফরাসি ভাষাও। এই সময় কলোনিয়াল এক্সপোজিশনে স্টল দিলেন অক্ষয় নন্দী। সেখানেই নিয়তা-নিয়কার হাতে তাঁর নৃত্যশিক্ষার শুরু। অমলার নাচের প্রশংসা করেছিলেন খোদ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মসিঁয়ে ডুমার। নিয়তা বলেছিলেন, ঈশ্বর অমলাকে নাচের জন্যই গড়েছেন। আর শিখিয়েছিলেন নিজের মনের মধ্যে সবসময় আনন্দ ধরে রাখতে। একদিন এই এক্সপোজিশনেই বিভিন্ন স্টলে ঘুরতে ঘুরতে অমলার আলাপ হল উদয় শঙ্করের সঙ্গে। তারপর...

অক্ষয় নন্দীর সঙ্গে পূর্ব পরিচয় ছিল উদয়শঙ্করের। উদয়শঙ্করের নাম আগে বার কয়েক শুনেছেন অমলা। ভেবেছিলেন মস্ত মানুষ, বিদেশে থাকেন, খুব বৃদ্ধ কেউ হবেন বোধহয়। কিন্তু চোখের সামনে সুভদ্র, সৌম্যকান্তি ওই মানুষটিকে দেখে ভালো লাগল তাঁর। অক্ষয় নন্দীই এগিয়ে এসে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন সকলকে। পরের দিন নিজেদের বাড়িতে অক্ষয় আর অমলাকে নিমন্ত্রণ করলেন উদয়। জানালেন, বাড়িতে রয়েছেন তাঁর মা। তাঁরা এলে, খুশি হবেন তিনি। পরের দিন সকন্যা অক্ষয় পৌঁছলেন প্যারিসে শঙ্কর নিবাসে।

রু দ্য পারির বাড়িতে পৌঁছে অবাক হয়ে গেলেন অমলা। মনে হল, যেন দেশেই আছেন। বাড়ির যুবকেরা সবাই খদ্দরের পাজামা-পাঞ্জাবি পরে খেলছেন বাড়ির বাগানে। শুধু তাঁরই বয়সী রবিশঙ্কর পাজামা, খেলা আর নিজেকে সামলাতে হয়ে পড়ছে তাল-বেতাল। সমস্ত বাড়ি সেজে আছে যথাসম্ভব দেশীয় হাবভাবে। বইয়ের তাক জুড়ে রয়েছে বাংলা বই, সমকালীন সাময়িক পত্র-পত্রিকা। এমনকি ১৩৩৮এর কার্তিক-অগ্রহায়ণের ‘প্রবাসী’ও। এই সময়ের ভ্রমণ-বৃত্তান্ত নিয়ে যেখানে রয়েছে অক্ষয় নন্দীর সাম্প্রতিক লেখাটিও। ভেসে আসছে হেঁসেলের সুগন্ধ। বাঙালি রান্নার সুবাস, সে তো শুধু রান্নার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে না। বাঙালির চিরদিনের পছন্দের পদ, মায়ের হাতের পদ। গার্হস্থ্যের সেই গাঢ় স্নেহবাৎসল্য থেকে বহুদিন বহুদূরে রয়েছে এই বালিকা। হেমাঙ্গিনী যখন তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন অকৃপণ মমতায়, অশ্রুসজল হয়ে উঠল অমলার হৃদয়।

অমলা সেদিন পরেছিলেন ফ্রক। হেমাঙ্গিনী তাঁকে পরিয়ে দিলেন নিজের একখানা ঢাকাই শাড়ি। পিঠ-ছড়ানো হাঁটু ছোঁওয়া চুল তাঁর। অমলার একার পক্ষে আঁচড়ে ওঠা সম্ভব হত না কোনোদিন। ভিনদেশে সেই দায়িত্ব, স্বযাচিত আনন্দে পালন করতেন অক্ষয় নন্দী। পরম যত্নে সেই চুলে আজ খোঁপা বেঁধে দিলেন হেমাঙ্গিনী। তারপর বললেন, একটা গান শোনাবে? সকলে রয়েছে, কী গাইবেন ভাবছেন অমলা। তারপর গাইলেন। কিন্তু কেন যে সেই গানই গাইলেন সেদিন, নিজের কাছেই সে জিজ্ঞাসা ছিল চিরদিন। গাইলেন, ‘দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ওপারে,/ আমার সুরগুলি পায় চরণ, আমি পাইনে তোমারে’। 

এই সময় নিজের একটি অনুষ্ঠানে উদয়শঙ্কর আমন্ত্রণ জানালেন অমলা আর অক্ষয় নন্দীকে। অস্ত্রপূজা আর শিবনৃত্য মূলত পরিবেশিত হয়েছিল সেইদিন। ইতিমধ্যে নিয়তার কাছে নাচ শিখেছেন অমলা। নাচ দেখেছেন, অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন নিজেও। তবু কী অভূতপূর্ব এক আলোড়ন যেন সেইদিন আবিষ্ট করল তাঁকে। এক অপরিচিত অনুভূতি। সত্তার প্রতিটি অণু-পরমাণুতে সাড়া দিয়ে, যেন তাকে করে তুলতে চায় বাঙ্ময়। উদয়শঙ্করকে তিনি দেখেছেন, কিন্তু স্টেজে তাঁকে দেখা, সে দেখা অতুলনীয় অপার্থিবতায় তাঁকে পাওয়া। যেন এক অনন্ত বিভা, বিচ্ছুরণে লগ্ন হয়ে থাকা কোনো দেবদূত।  

আরও পড়ুন
ঈশ্বর তোমাকে নৃত্যের জন্যই গড়েছেন

প্যারিসে হেমাঙ্গিনী, অ্যালিস বোনার ও অমলা।

 

আরও পড়ুন
নৃত্য সেদিন পেরিয়ে গেল মঞ্চের সীমা

এগজিবিশন শেষ হয়েছে, অক্ষয় ঠিক করলেন অমলাকে নিয়ে এবার ঘুরে দেখাবেন ইউরোপের শিল্পকেন্দ্রগুলি। ইতিমধ্যে অমলার নাচ দেখেছেন উদয়, যাওয়ার বেলা বাধা দিলেন অক্ষয়কে। জানালেন, তাঁর দল এবার নৃত্যকলা প্রদর্শনের জন্য ঘুরবে সমস্ত ইউরোপ। সেই দলে যদি অমলা যুক্ত হয় তবে ভালো লাগবে তাঁর। অমলার নাচ তিনি দেখেছেন। শিখলে ভালো নৃত্যশিল্পী হওয়ার সমস্ত সম্ভবনা রয়েছে অমলার মধ্যে। দ্বিধায় পড়লেন অক্ষয়। একটি কন্যাসন্তানের জন্য চিরআকাঙ্ক্ষা এতদিন অপূরণীয় হয়ে ছিল হেমাঙ্গিনীর মনের মধ্যে। এই স্বল্প কয়েকদিনেই অমলাকে ছায়ার মতো কাছটিতে পেয়ে পূর্ণ হয়েছে সেই সাধ। অক্ষয়কে তিনি বললেন, অমলা আমার কাছে থাক, ফিরিয়ে যখন দেব অমলাকেই দেব। অনুমতি চেয়ে অক্ষয় পত্র লিখলেন স্ত্রীকে। অনুমতি এল। অমলা রইলেন হেমাঙ্গিনীর কাছে।

আরও পড়ুন
উদয় প্যারিসে ফিরছেন তাঁর নিজের তৈরি দল নিয়ে

ধীরে ধীরে শুরু হল নাচের তালিম। আর শুরু হল এক অন্যতর জীবনযাত্রা। চিরদিনের জন্য যা অমলার কাছে হয়ে রইল অমূল্য, অনন্য। এই সময়ই ঘটল সেই আশ্চর্য ঘটনা। নিজের নানা রকম কাজ-কর্ম থেকে সাময়িক বিরতি নিয়ে এই সংসারে এলেন স্বয়ং গৃহকর্তা। শ্যামশঙ্কর। একত্র হলেন সম্পূর্ণ পরিবার। এতদিন সন্তানরা কখনো নিরবিচ্ছিন্নভাবে দেখেননি তাঁদের পিতাকে। ঘর-সংসারের খাপটির মধ্যে লগ্ন হয়ে-থাকা গৃহকর্তার কল্পনাটিওয তাঁদের পক্ষে ছিল দুঃসাধ্য। হয়তো খুব সামান্য, হয়তো গতানুগতিক ধরনে নয়, তবু অষ্টপ্রহর এই প্রথম তাঁরা চেয়ে দেখলেন, সংসারের মধ্যে ওই সংসার ছাপিয়ে- ওঠা মানুষটিকে। জীবন তার বহমানতায় সব বাঁকে যুক্তির অনিবার্যতাকে মান্য করতে করতে বয় না।

আরও পড়ুন
মাইহারে অসম্পূর্ণ রইল তিমিরবরণের শিক্ষা

স্রোতেরও আছে নিজস্ব পরম্পরা। যুক্তি আর অযুক্তি, প্রেম আর অপ্রেম, ক্রোধ আর অভিমান সব মিশে গিয়ে কখনও-কখনও হয়ে ওঠে ধূসর। সেই ধূসরতাও আরেক রকম সত্য। তার মধ্যে সমস্ত অতীত জেগে থাকে বিনিদ্র। তার মধ্যেই মুহূর্ত খুঁজে নিতে চায় যা চির অপ্রাপণীয়।

চিরদিন সংসারের ঘেরো আবর্ত থেকে নিজেকে তফাতে রাখতে চেয়েছিলেন শ্যামশঙ্কর। রেখেও তো ছিলেন। ঘরকন্নার যোজন দূরে ছিল তাঁর সাকিন-ঠিকানা। সেই নির্লিপ্তি তাঁর নিজস্ব পছন্দ, নির্বাচন। মেনে নিয়েছিলেন হেমাঙ্গিনী। সম্পর্কে, উভয়ের সম্মতিবিহীন যে আধিপত্য বিস্তার তা অসুন্দর। জানতেন হেমাঙ্গিনী। কিন্তু জীবনের শেষপ্রান্তে এই দাম্পত্যে বিধাতা ঘনিয়ে তুললেন কী অপূর্ব কৌতুক। লন্ডনে রয়্যাল আর্ট কলেজে পড়াকালীন পিতা-পুত্র দাঁড়ালেন পারস্পরিক আনন্দময় নির্ভরতায়। আর সেইসব দিনগুলিতেই শ্যামশঙ্করের জীবনের সমস্ত ধারা বইতে থাকল উল্টো খাতে। এই প্রথম তাঁকে অধিকার করল বাৎসল্য। প্রবলভাবে পেয়ে বসল সন্ততির কাছে ফিরতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। এক অজানা অনুরাগ যেন আকস্মিক নোঙর ফেলে বসল ঠিক সংসারের মাঝখানটিতে।     

উদয়শঙ্করের পিতা শ্যামশঙ্কর।

 

রবিশঙ্করকে তখন ভর্তি করা হয়েছে প্যারিসের একটি স্কুলে। সারাদিন নাচ, হেমাঙ্গিনীর সঙ্গে ঘরের কাজ আর রবির সঙ্গে খেলাধূলায় হু-হু করে দিন কেটে যায় অমলার। কখনও পাশবালিশ নিয়ে রবির সঙ্গে নাচছেন ‘ব্লু ড্যনিউব’। কখনও হেমাঙ্গিনীকে পড়ে শোনাচ্ছেন কৃত্তিবাসী রামায়ণ। কিন্তু দুপুর হলেই, রবি আর অমলাকে একসঙ্গে নিয়ে পড়তে বসাতেন শ্যামশঙ্কর। চট করে এই বইখানা পড়ো দেখি। অথবা, অমুক বিষয়ে একটা রচনা লিখে ফেলো তো। নিজে পড়াশোনা ভালোবাসতেন বলেই, সে অনুরাগ যে মানুষভেদে হতেও পারে তরতম, একথা তিনি মনেও আনতে পারতেন না। রবিশঙ্করের তখন এগারো আর অমলার বারো। ফলে এই গণ্ডিবদ্ধ পৃথিবীর ওই পারে ওই বালক-বালিকার দায়-দায়িত্ব কর্তব্য-কর্ম বিষয়গুলি ছিল তাঁর ধারণারও বাইরে। সেই হেতু সেসব বন্দোবস্তও এই ক্ষুদ্র মানব-মানবীকেই করতে হত সাধ্যমতো। হেমাঙ্গিনী নিজের ফরাসি পরিচারিকাসহ, হয়তো সবে ফিরেছেন বাজার থেকে। বাজার থেকে এসেছে বিস্তর চেরি। এবার সেগুলোকে নিয়ে দফায়-দফায় কাজ। রবি বুঝলে এই সুযোগ। দরজার বাইরে থেকে জোর হাঁক, অমলা মা ডাকছেন। শ্যামশঙ্কর চিরদিনের সংসার-নির্বোধ। তিনি ব্যস্ত হয়ে বলতেন, তাই তো, আচ্ছা যাও যাও।

একলা থাকলে হেমাঙ্গিনী গান গাইতেন আপন মনে। শুধু রবিশঙ্করই নন, অমলাও জানিয়েছিলেন, কী অব্যর্থ ছিল তাঁর সুর আর তালজ্ঞান। শিখতে হয়নি, গান বাসা বেঁধে ছিল তাঁর মর্মে। যেখান থেকে যা শুনতেন যেন তাঁর গলায় এসে বসত পিঁড়ি পেতে। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত হোক অথবা যাত্রার গান, তাঁর মধ্যে ছিল এক তন্নিষ্ঠ শ্রোতা। যাত্রার একটা গান খুব গাইতেন, ‘ধীরে বালিকা ধীরে চলো ধীরে, ঊর্মিক্ষোভিত যৌবনস্রোতনীরে’। একদিন অমলা আর রবি গেছেন মন্টে কার্লোতে। হাঁটতে-হাঁটতে কখন চলে গিয়েছেন এক্কেবারে সমুদ্রের ধারে। এদিকে হঠাৎ জোয়ার লেগে পায়ের কাছে আছড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ। ভয় পেয়ে, জুতো জোড়া হাতে নিয়ে তাঁরা উঠতে চাইলেন পাহাড়ের দিকে। কিন্তু উঠবেন কোথায়, রোদে যে তেতে রয়েছে পাথর। এদিকে ঢেউ উঠছে ফুলে, আর ওর মধ্যেই পড়িমরি করে ফিরতে, ভয়ের মধ্যেও হাসতে-হাসতে তাঁরা ধরেছেন গান। ‘ধীরে বালিকা ধীরে চলো ধীরে, ঊর্মিক্ষোভিত যৌবনস্রোতনীরে’। কে জানে সেসব গানের কী মানে? অর্থানুষঙ্গে নয়, শব্দানুষঙ্গে জীবনে গান জুড়েছে নির্মল শৈশব।

অমলাশঙ্কর ও রবিশঙ্কর: পরিণত বয়সেও ছিল শৈশব সম্পর্কের রেশ।

 

হেমাঙ্গিনীর আর একটা গান নিয়ে, আছে ভারি মজার এক গল্প। কখনও হাতের কাজ সারতে-সারতে আনমনে গাইতেন, ‘বসন্ত চলিয়া গেলে শুকাবে গোলাপরাশি, পাখি না গাহিবে গান’, তারপর শুধু সুরটুকু গুনগুন করে শেষ করতেন ‘তরুশিরে বসি’। আর ঘর ফাটিয়ে হেসে উঠতেন রবি আর অমলা। সম্পূর্ণ পঙক্তিটা এইরকম, ‘বসন্ত চলিয়া গেলে শুকাবে গোলাপরাশি, পাখি না গাহিবে গান, শ্যাম, তরুশিরে বসি’। ‘শ্যাম’ তাঁর স্বামীর নাম, তাই গানে অনুচ্চারিত থাকত ওই অংশটুকু। স্বামীর নাম মুখে আনতেন না তৎকালীন স্ত্রীরা। এই সংস্কারকে ছাড়তে পারেনি তিনি। আবার স্বামীর প্রতি অভিমানে সিঁদুরকে স্বীকার করতে চায়নি তাঁর মন, একথাও গোপন করেননি তিনি। এই অযুত অযুক্তির আশ্চর্য লীলাকে বুঝতে চাওয়াই তো আকারা জীবনকে স্পর্শ করতে চাওয়া। মাঝে মাঝে হেমাঙ্গিনীর প্রতি ছদ্ম-উপদ্রবে রবি আর অমলা গলা ছেড়ে দিতেন, ‘বসন্ত চলিয়া গেলে শুকাবে গোলাপরাশি, পাখি না গাহিবে গান’। তারপর অনেকখানি গলা খাঁকারি দিয়ে সমস্বরে সুর ধরতেন, ‘তরুশিরে বসি’। অতীতের ঘন জমাট বাঁধা প্রগাঢ় সব ব্যথা-বেদনা,  এইসব ক্ষণিক মুহূর্তে ভেসে যেত নির্ভার।

একই বাড়িতে,  নিজেদের সন্তানদের চারপাশে নিয়ে আছেন হেমাঙ্গিনী আর শ্যামশঙ্কর। কিন্তু তাঁদের দাম্পত্য ছিল নির্বাক। একই বাড়িতে একই সংসারে হেমাঙ্গিনী যেন নিজেকে রেখেছিলেন স্বামীর থেকে এক অলঙ্ঘনীয় ব্যবধানে। ওই দূরবর্তী অবস্থান থেকেই স্বামীর পছন্দ-অপছন্দ, ভালোলাগা-মন্দলাগা বুঝে নিতেন নির্ভুলভাবে। তাঁর প্রতি যত্নে আর কর্তব্যে হেমাঙ্গিনীর এতটুকু অবহেলা কেউ দেখেনি কখনও। স্বামীর প্রতি স্ত্রীর ভূমিকাটি পালন করেছেন নিঃশর্তে। কিন্তু স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অবসরমতো হৃদয় কর্তব্য পালনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন নিঃশব্দে।

Powered by Froala Editor