“পাহাড়িয়া মধুপুর মেঠো ধূলিপথ / দিনশেষে বৈকালী মিষ্টি শপথ।” এই পর্ব শুরুর আগে কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘তিন পাহাড়ের স্বপ্ন’ মনে পড়ছে। সেদিন মোহনবাগান মাঠে যখন মারাদোনা এলেন, সপরিবারে আমাদের মধুপুর ঘুরতে যাওয়ার কথা। সন্ধ্যায় ট্রেন। টিভিতে কোনোরকমে 'মারাদোনা পর্ব' সেরে হাওড়ায় রওনা। ট্রেন ছাড়বে ছাড়বে করছে। প্রচণ্ড হাঁপাতে হাঁপাতে এক যুবক একই কম্পার্টমেন্টে চাপলেন। শীতেও ঘামছেন। আমাদেরই ঠিক বিপরীতে তাঁর সিট। লোকটি পরে আছেন মোহনবাগানের সবুজ-মেরুন জার্সি। জিজ্ঞেস করলাম, আপনি মোহনবাগান সমর্থক?
বললেন, ম্যায় মোহনবাগান কা সাপোর্টার হুঁ।
সত্যিই বলতে মোহনবাগান জার্সি গায়ে কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে হিন্দি ভাষায় উত্তর শুনে প্রথমটায় বেশ ভ্যাবাচ্যাকাই খেয়ে গিয়েছিলাম।
ততক্ষণে অবশ্য জেনে নিয়েছি তাঁর নাম সুনীল যাদব। মধুপুরেই নামবেন। থাকেন সিরসিয়া। আর সেদিনের সেই বিশেষ দিনে মোহনবাগানের জার্সি গায়ে সুনীল ভাইকে দেখে সহজেই অনুমান করে নিয়েছিলাম যে, তিনি অতদূর থেকে এসেছেন যখন, তখন মারাদোনাকেই দেখতে এসেছেন। তাই রাখঢাক না করে আমার ভাঙা হিন্দিতে প্রশ্নটা করেই ফেললাম, আপনে মারাদোনা কো ক্যায়সে দিখা?
আরও পড়ুন
একটি দীর্ঘশ্বাসের গল্প: মারাদোনা এবং কলকাতায় কিছু ভিজে যাওয়া চোখ
সুনীল ভাই বললেন, আরে দাদা বাংলাতেই বাত করুন। আমি বাংলা বুঝি।
আরও পড়ুন
মেসিময় সান্ধ্যনগরী
আরও পড়ুন
মান্না পাঁচালি
সুনীল ভাই মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডার্বি দেখতে ঝাড়খণ্ডের সিরসিয়া থেকে দু-দু'বার কলকাতায় এসেছেন এর আগে। তাই কলকাতা তাঁর অপরিচিত শহর নয়। ওই দু'বারই যুবভারতীতে খেলা দেখেই ট্রেন ধরে পাততাড়ি গুটিয়েছিলেন। মোহনবাগান মাঠ দেখা হয়নি তাঁর। তবে মাসখানেক আগে যখন সুদূর ঝাড়খণ্ডে বসে খবর পেয়েছিলেন, কলকাতা আসছেন মারাদোনা এবং মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের মাঠেও তিনি ঢুকবেন, তখন থেকেই পায়ের তলায় সর্ষে― এই শহরে আসবেন আবার। এতে মারাদোনাকে তো দেখা হবেই, সঙ্গে মোহনবাগান ক্লাব তাঁবু একটু হলেও ঘুরে দেখা হবে। সবুজ-মেরুন মাঠটাও দেখে আসা যাবে।
আরও পড়ুন
আইনের ফাঁক গলে গোল
—তা কেমন দেখলেন মাঠ?
—একদম মখমল কী তরহা! হরে-ভরে বাগিছে কী তরহা। ইয়ে ময়দান হামারি মা কে সমান হ্যায়। মারাদোনা নে উস ময়দান পর কদম রখা... ম্যায়নে কাভি নেহি সোচা থা কি মুঝে অ্যায়সে দেখনে কা সৌভাগ্য প্রাপত্ হোগা। জব মোহনবাগান কে সাথ ভবানীপুর কী আন্ডার-১২ টিম মারাদোনা সে সলাহ লে রহি থি, তো বহত আচ্ছা থা।
ভাবছিলাম যে, এত কাছে থেকেও যেকোনো কারণেই হোক না কেন মোহনবাগান মাঠে মারাদোনাকে দেখতে যেতে পারিনি। অথচ খবরের কাগজ পড়ে যেদিন জেনেছিলাম, আর্জেন্টিনীয় কিংবদন্তি মোহনবাগান মাঠে আসবেন, কি আনন্দই না হয়েছিল! এশিয়ান প্রাচীনতম ক্লাবগুলির মধ্যে একটি আমাদের মোহনবাগান। তা সে এখন যতই তার নামের আগে কোম্পানি নামের ধুয়ো দিয়ে 'এটিকে' বসুক না কেন। যাই হোক, শতাব্দীপ্রাচীন আমাদের এই ক্লাবে বিকেল মোটামুটি তিনটে নাগাদ এসেছিলেন মারাদোনা। পরে জেনেছি, যখন তাঁর কলকাতা সফর চূড়ান্ত হয়েছিল, মারাদোনা বিশেষভাবে ফুটবল ক্লিনিকের জন্য একটি স্লট চেয়েছিলেন। যেখানে তিনি তরুণ ফুটবলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। বাচ্চাদের কাছে যা ছিল বিরাট এক সুযোগের মতো। খুদে ফুটবলাররা তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারবে মারাদোনার সামনে।
ট্রেনের সেই অভিজ্ঞতার কথায় আবার ফিরব। সুনীল ভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, মোহনবাগান মাঠের টিকিট কীভাবে জোগাড় করলেন?
বললেন— ম্যায় খবর লেকর আয়া থা। শ রুপিয়া কে টিকট ফ্রি ম্যায় বাঁটে জায়েগি। মেরা এক দোস্ত মোহনবাগান কা মেম্বার হ্যায়। দোস্ত নে সারি ভ্যাবস্থা কর দি।
এরপরেও কিন্তু থামেননি সুনীল ভাই। তিনি বলে চলেন, জাইসা কি ম্যায়নে আখবার মে পড়া, হামারে ক্লাব কে মহাসাচিভ অঞ্জন মিত্র নে কাহা, 'ইয়াহাঁ হার কিসি কা সপনা সাচ হো গয়া হ্যায়। বড়ে বাত ইয়ে হ্যায় কী মারাদোনা ৪৫ মিনিট ক্লাব মে বিতায়েঙ্গে।' করিব পন্দরা হাজার দর্শন কে সাথ মারাদোনা কো দেখানে কা আহসাস বহুত বড়া হোতা হ্যায়। মরতে দম তক ইয়াদ রাখুঙ্গা।
আমি ভাবলাম, মাত্র ১৫ হাজার দর্শক দেখে সুনীল ভাই এমন বলছেন! তা একদিন আগেই যুবভারতীতে তো মারাদোনাকে দেখতে লক্ষাধিক লোক হয়েছিল। উনি কি যাননি সেখানে?
—বেশাক গ্যায়া থা। লেকিন ভো যুবভারতী হ্যায় অউর ইয়ে মোহনবাগান গ্রাউন্ড। মুঝে আশা হে কি আপকো অন্তর কী ব্যাখ্যা করনে কী জরুরাত নেহি হ্যায়।
শুনে চোখ চিকচিক করে উঠল। আবেগ ভাঙল মা। রাত হচ্ছে দেখে চিকেন আর রুটি সাধল সে। সুনীল ভাই তো কিছুতেই খাবেন না। কিন্তু মোহনবাগান যখন কিছু মিলিয়ে দেয়, তা তো আর সহজে ছিন্ন হয় না।
খেতে খেতেও গুণগানই চলল― মারাদোনা হামারে লিয়ে ভগবান হ্যায়। অভি তক হামনে কেবল উনকে বারে ম্যায় শুনা হ্যায়। পর ইস বার আপনে আঁখো সে দেখনে সে বহুত আচ্ছা লাগ রহা হ্যায়।
এবার টাইমলাইনে চেপে সময়টাকে ২০০৮ থেকে ২০২২-এ নিয়ে আসি। এই তো ক’দিন আগে হাতে এল অবশেষ দাসের কবিতা সংগ্রহ। পাতা উল্টাতে উল্টাতে চোখে পড়ল― ‘মারাদোনা মারাদোনা / লাট্টুর গতি / আমাদের ইতিহাসে / ফুটবল পতি।’ জানেন, এই লাইনগুলো পড়ে ছোটবেলার মুকেশ খান্নার শক্তিমানের কথা মনে পড়েছিল― ওই যে, ‘লাট্টুর গতি’ থেকে। যখন ’৯৪, আমি এগারোয় পড়েছি। সেই বছরের দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আগের পর্বেই লিখেছি। তখন মারাদোনাকে কেবল আবেগের বশে টিভিতে দেখতে বসেছি। কিন্তু নতুন শতাব্দী পড়ার শুরুর বছরগুলোতে পাড়ায় সাইবার ক্যাফে গজিয়ে উঠতে লাগল। আমাদের রবিকাকা, যার এতদিন জেরক্সের দোকান ছিল, সে জেরক্সের ব্যবসা বাড়াতে দোকানে দু’টো কম্পিউটারও রাখে। টিএফটি মনিটর আর উইন্ডোজ নাইন্টিএইট ছিল তখন। মোটামুটি যতটা বেসিক জানতাম, তাতে করে কম্পিউটার অন, শাট ডাউন, রিস্টার্ট, গুগল সার্চ ইত্যাদি পারতাম। গুগল সার্চ করে যে ভিডিয়ো ক্লিপ পাওয়া যেত, তাতে মারাদোনার লাট্টুর গতি দেখতাম। মাঝেমাঝে কেবল টিভির দৌলতে কিছু চ্যানেলও সে-সময় পুরনো খেলা রিপিট টেলিকাস্ট করলে মারাদোনাকে দেখতাম। ডিফেন্ডারদের বলয়ে পায়ে বলে ভেলকি দেখিয়ে গোলাকার ঝটকায় ছুটে যাওয়া... আহা! মনে পড়ে, ২০০৬-০৭’এর পর ইউটিউব যখন বাম্পার জনপ্রিয় হল, তখন তো পোয়াবারো। রবিকাকার দোকানে একঘণ্টা ইন্টারনেট সার্চিংয়ের রেট ছিল ১০ টাকা। মারাদোনার ওই ‘লাট্টুর গতি’ ইউটিউবে দেখব বলেই রবিকাকার দোকান যেতাম। একঘণ্টা কখন যে পেরিয়ে যেত! তা এসব রঙিন অতীতের মধ্যেই তোলপাড়। ফুটবলের এই জাদুকর কলকাতা আসছেন যে... এ যেন অনেকটা রাখালের সেই গল্পটার মতো। বাঘ কিছুতেই জালে ধরা পড়ে না। ’৯৪-এর বিশ্বকাপের পর থেকেই মাঝেমধ্যেই গুঞ্জন শুনতাম― এই বুঝি মারাদোনা কলকাতা আসবেন, ম্যাচ খেলবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এই গুঞ্জন বাস্তবে রূপান্তর হওয়ার আগেই মারাদোনার ফুটবল কেরিয়ার শেষ। তাই পেলের মতো খেলোয়াড় হিসাবে তাঁর আর কলকাতা আসা হল না। তবে তিনি কলকাতা এসেছিলেন, প্রফেশনাল কেরিয়ার শেষ হওয়ার এগারো বছর পর। যদিও এসব এই ইন্টারনেট সর্বস্ব দুনিয়ায় কারো অজানা নয়। কিন্তু এরই মধ্যে এমন কিছু আছে, যা অজানা কিংবা না শোনা থাকতেই পারে। তেমনই এক না শোনা কথা শুনলাম, সেই সময়কার এক তরুণ ক্রীড়া সাংবাদিক শুভ্রাংশু রায়ের কাছে। তিনি কাজ করতেন এক প্রসিদ্ধ ইংরেজি ওয়েবসাইটে। তাবড় সংবাদপত্রগুলিতেও মারাদোনার আগমন হেতু ঘুণাক্ষরেও তখন একটা শব্দও লেখা হয়নি। এমন খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার তিনদিন আগে শুভ্রাংশুদা ওয়েবসাইটের মালিককে জানান, কলকাতায় আসছেন দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। চমকপ্রদ এই খবর শুনে মালিকের চক্ষু চড়কগাছ। তিনি তো বিশ্বাসই করতে চাননি। তা কীভাবে এমন হাতেগরম খবর পেয়েছিলেন ওই সাংবাদিক? তাঁর এক পরিচিত কর্মরত ছিলেন বিদেশ দপ্তরে। সেখানে জমা পড়ে একজনের ভিসার অনুমতিপত্র। এভাবেই কানাকানি, জানাজানি। খবর প্রকাশ হতেই হুলুস্থুল! তুমুল তোলপাড়। এক বহুল প্ৰচারিত বাংলা সংবাদপত্র তো হেডিংই করে ফেলল― ‘এশিয়ার মাটিতে প্রথমবার মারাদোনা’ টাইপের কিছু একটা। অথচ মাত্র তিন মাস আগেই চিন ঘুরে গিয়েছেন দিয়েগো। সুতরাং, উত্তাপটা বুঝতেই পারছেন নিশ্চয়ই। একেই হয়তো পরিভাষায় বলে উত্তেজনায় উথলাইয়া পতন।
সে যাই হোক, শুভ্রাংশুদাকে সুনীল ভাইয়ের কথা জানালাম। শুনে বললেন, হয়তো এসবের জন্য মারাদোনা সেদিন প্রেস কনফারেন্সে অমন অভিভূত হয়েছিলেন।
―প্রেস কনফারেন্সে ছিলে?
―আরে! না থাকলে বলব কেন তোকে?
―কী বলেছিলেন মারাদোনা?
―সে অদ্ভুত এক কথা। তিনি ভেবেছিলেন যে, আর কখনো অবাক হবেন না। কিন্তু কলকাতা এয়ারপোর্ট নামার পর তাঁর এই ধারণা বদলে যায়। প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন। আইটিসি সোনার বাংলায় উঠেছিলেন। এয়ারপোর্ট থেকে বাইপাস পথজুড়ে মানুষ আর মানুষ। এসব দেখে একদিন পর প্রেস কনফারেন্সে মারাদোনা বলেছিলেন, ‘আজ আমি বুঝতে পারছি আমার জন্য অবাক হওয়ার মতো এখনো কিছু আছে। ফুটবলের প্রতি এখানকার মানুষের আবেগকে আমি ভালোবাসি। আমি আবার ফিরে আসতে চাই’...”
হ্যাঁ, সুনীল ভাই সেদিন ছিলেন সোনার বাংলা হোটেলের ঠিক কাছেই। সবই তো রেলগাড়ির কামরায় জেনেছি। আমার যেতে না পারার কষ্ট লাঘবও হয়েছে এসব শুনে। কিন্তু সুনীল ভাইয়ের মতো শহর কিংবা রাজ্যের বাইরের এমন মানুষদের কাছে কিন্তু কিঞ্চিৎ ক্ষতও তৈরি হয়েছিল। মারাদোনার পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বাড়ি যাওয়ার আগে বেশ শোরগোল বাধে। অজানা কারণে মারাদোনার শহর সফরের দ্বিতীয় দিনে ক্যামেরাম্যান, মিডিয়া কর্মীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ ও দুষ্কৃতীরা। সকালের দিকে জ্যোতি বসুর সল্টলেকের বাড়ি আসার কথা ছিল মারাদোনার। এই অশান্তির জন্য তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। যাই হোক, দু‘জন তেতে-ই-তেতে― মুখোমুখি যখন, সংলাপ তো বাড়বেই। দোভাষীর সাহায্য নিয়েই মারাদোনার দীর্ঘায়ু কামনা করলেন জ্যোতি বসু। যদিও অশান্তির প্রভাব পড়েছিল। আমার কলিগ ক্রীড়া সাংবাদিক শুভ্রজ্যোতি ঘোষ জানালেন, জ্যোতি বসুর বাসভবনের সামনে তৈরি করা হয়েছিল এক মঞ্চ। তাতে উঠলেনই না মারাদোনা। তাঁর ভক্তদের সম্বোধন না করেই এলাকা ত্যাগ করলেন। আর সুনীল ভাই সেদিন বলেছিলেন, মুঝে উম্মিদ নেহি থে কী উস দিন অ্যায়সে হোগা... বড়া বুরা হুয়া। মানো সারি খুশিয়া ধুল ম্যায় মিল গ্যায়ে...
অভিমান করেই মহেশতলা যাননি সুনীল ভাই। ঠিক ছিল, মহেশতলা পুরসভার ৩১নং ওয়ার্ডের গুমোরজলায় নবনির্মিত আবাসনের পাশেই ফাঁকা জমিতে ফুটবল অ্যাকাডেমি তৈরি হবে। সেই লক্ষ্যেই মারাদোনাকে দিয়ে ওই ফুটবল অ্যাকাডেমির শিলান্যাস করানো হয়। যদিও ঠিক এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে, সুনীল ভাই না গিয়ে ভালোই করেছেন। কারণ, ফুটবল অ্যাকাডেমি আজও তৈরি হয়নি। এমনকী মহেশতলার সেদিনের অনুষ্ঠানে মারাদোনার যে পায়ের ছাপ নেওয়া হয়েছিল সিমেন্টের বেদির ওপর, যা বাঁধিয়ে রাখার কথা ছিল, তাও আজ উধাও। কালের নিয়মে পরিচয় হারিয়ে গিয়েছে সুনীল ভাইয়ের সঙ্গে। কখনো যদি এই গোলাকার পৃথিবীতে দেখা হয়ে যায় তাঁর সঙ্গে, এ-কথা বলতামই। যাক গে, জঞ্জাল সরিয়ে ময়লা পরিষ্কার তো করতেই হয়। একটা অমায়িক দেঁতো হাসি হেসে ট্রেনে খুব সুন্দর একটা কথা বলেছিলেন সুনীল ভাই। যা দিয়ে শেষ করব। ও হ্যাঁ, সুনীল ভাই আমার থেকে বয়সে প্রায় এক যুগ বড়। বাবা তাঁকে ‘সুনীল ভাই’ বলেই ডেকেছিল। আমার মুখ দিয়ে তাই ‘দাদা’র জায়গায় ‘ভাই’-ই পার্মানেন্ট হয়ে যায়। বলেছিলেন, ’৮৬ মে ম্যায়নে উনহে আম জনতা কে কানধোঁ পর উঠকর বিশ্ব কাপ ট্রফি কা জশন মানাতে দেখা থা। অউর ম্যায়নে যুবভারতী মে দেখা, মনচ্ পর মারাদোনা নে দর্শকাকো অভিবাদন কিয়া। আগার উনকে হাথ পর বিশ্ব কাপ দি যাতে তো ভি অ্যায়সা হি দিখতা।
মারাদোনাকে এমন কল্পনা করতে সত্যিই ভালো লেগেছিল। সেদিনের তাঁর পরা নীল জিনস আর ধূসর হাফ শার্টটিকেও বা আকাশি-সাদা কল্পনা করতে ক্ষতি কি!
Powered by Froala Editor