‘কালাপানি’ আন্দামান— ২৬
আগের পর্বে
১৯১৩ সালে উল্লাসকরকে স্থানান্তরিত করা হয় মাদ্রাজ উন্মাদাগারে। মাঝেমধ্যেই হ্যালুসিনেশনে চলে যেতেন তিনি। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বজায় থাকত তাঁর বিপ্লবী মেজাজ। ১৯২০ সালে ‘রাজকীয় ক্ষমাপ্রদর্শন’-এ মুক্তি পাওয়ার পর পণ্ডিচেরি চলে যান উল্লাসকর। উদ্দেশ্য ছিল, ঋষি অরবিন্দকে বুঝিয়ে দেশোদ্ধারে ফেরানো। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর আর রাজনীতিতে অংশ নেননি তিনি। অন্যদিকে সেলুলার জেল থেকে ছাড়া পেলেও অনেক বিপ্লবীদেরই দেশে ফিরে দীর্ঘদিন হাজতবাস করতে হয়েছে ভারতে। তবে ১৯৩১ সালের পর পুনরায় রাজবন্দিদের জন্য খুলে যায় সেলুলার জেল। তারপর…
বহু প্রাচীন কাল থেকে আরবি মুসলমানদের একটা অংশ দক্ষিণ ভারতের মালাবার উপকূলে বসবাস করত। স্থানীয় মহিলাদের বিবাহ করে ওখানকার অধিবাসী হয়ে যায়। এরা ‘মোপলা’ নামে পরিচিত। এঁরা খিলাফত আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১ আগস্ট ১৯২১। এই সময়ে মালাবার উপকুলে দক্ষিণ দিকে মোপলা’রা ‘স্বরাজ’ ঘোষণা করে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে ব্রিটিশ প্রশাসনের সঙ্গে তাদের অশান্তি শুরু হয়। এদের মূল বিরোধ ছিল ‘রায়তি’ ব্যবস্থার জমিদারদের বিরুদ্ধে। এই মোপলা বিদ্রোহ ছিল মুলত কৃষক বিদ্রোহ। মোপলা কৃষকরা শোষিত হলেও ব্রিটিশ সরকার ছিল জমিদারদের পক্ষে। আলি মুসালিয়রের নেতৃত্বে মোপলা কৃষকরা অহিংস আন্দোলন শুরু করলে ব্রিটিশ সরকার একে সাম্প্রদায়িক রূপ দেবার চেষ্টা করে। অবশেষে ব্রিটিশ সরকার সেনাবাহিনীর সহায়তায় নৃশংসভাবে এই আন্দোলন দমন করেছিল। বিদ্রোহ দমন করে প্রচুর মোপলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯শে নভেম্বর ১৯২১ – একটি ট্রেনের ছোট কামরায় চারদিক বন্ধ করে শতাধিক মোপলা বন্দিকে মাদ্রাজের জেলে নিয়ে যাবার সময় অনেক বন্দি দমবন্ধ হয়ে মারা যান। এতজন বিদ্রোহীকে মাদ্রাজ জেলে রাখার জায়গা না হওয়াতে ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯২২-এর এক আদেশবলে ১১৩৩ জন মোপলা বিদ্রোহীদের মধ্যে ২৫৮ জনকে আন্দামানে চালান দেওয়া হয়। এঁদের অনেককেই আবার পরিবার সহ আন্দামানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে চাষাবাদের কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে ১৯২৫-এর এক সরকারি রিপোর্ট মোতাবেক মোপলাদের মধ্যে যারা ফিরতে ইচ্ছুক ছিলেন তাদের দেশের মাটিতে বিভিন্ন জেলে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়।
১৯২২–২৪ – অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী ও বিশাখাপত্তনম এলাকার রূম্পা সম্প্রদায়ভুক্ত কৃষকরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। আল্লুরি সীতারাম রাজুর নেতৃত্বে রূম্পা কৃষকরা প্রথমে আন্দোলন শুরু করলেও পরে তা বিদ্রোহের আকার নেয়। এই কৃষকদের উদ্দেশ্য ছিল তাদের এলাকা থেকে ব্রিটিশ শাসনকে উৎখাত করা। এই রূম্পা কৃষক বিদ্রোহ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে বড়োসড়ো আঘাত হানতে পেরেছিল কিন্তু অবশেষে তা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কাছে হার মানতে বাধ্য হয়। কঠোরভাবে বিদ্রোহ দমন করা হয় এবং তাঁদের নেতা সীতারাম রাজুকে ৭ মে ১৯২৪ ফাঁদে ফেলে গুলি করে মারে। রূম্পা বিদ্রোহের বহু কৃষক বিপ্লবীকে আন্দামানে সেলুলার জেলে পাঠানো হয়।
১৯২৬–৩১ – এই সময়ে বাব্বর আকালি ষড়যন্ত্র মামলার দণ্ডিতদের আন্দামানে পাঠানো হয় এবং তাঁদেরও সেলুলার জেলে তাঁদের পূর্ববর্তী রাজবন্দিদের মতো বর্বরতার সম্মুখীন হতে হয়। ১৯২০–২৫ – পাঞ্জাবে গুরুদ্বারগুলিকে দুর্নীতিগ্রস্ত ‘মোহান্ত’দের হাত থেকে বাঁচাবার জন্য আন্দোলন শুরু করে আকালিরা। মোহান্তরা ওইসময় শুধুমাত্র যে গুরুদ্বারগুলিকে পরিচালনা করত তাই নয়, তারা গুরুদ্বারের আয়কে নিজস্ব আয় ভাবতে শুরু করেছিল আর অনেকেই বিলাসবহুল জীবন যাপন করছিল। তাছাড়া গদর বিপ্লবের পরবর্তী অধ্যায়ে ব্রিটিশ সরকার এদের শিখ ধর্মাবলম্বীদের ওপর প্রভাব খাটিয়ে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে যাতে সরিয়ে রাখা যায় তার জন্যে কাজে লাগায়। অন্যদিকে শুধু মোহান্তদের জীবনযাত্রাই নয়, জাতীয়তাবাদী শিখেরা মোহান্তদের ওপর ক্ষেপে যায় আর একটি কারণে, সেটা হল অমৃতসর স্বর্ণ মন্দিরের মোহান্তরা একটা হুকুমনামা বের করে বলে যে গদর বিপ্লবীরা হলেন ধর্মত্যাগী এবং তারপর স্বর্ণ মন্দির থেকে জালিয়ানওয়ালাবাগ নরহত্যার কুখ্যাত খলনায়ক জেনারেল ডায়ারকে যখন শিরোপা দিয়ে ভূষিত করে ‘শিখ’ হিসাবে মান্যতা দেয় তখন জাতীয়তাবাদী শিখেরা গুরুদ্বারগুলির অধিকারের দাবিতে সরব হয়। ১৯২০-তে শিখ স্বেচ্ছাসেবকরা জাঠা বের করে এই মোহান্তদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে এবং নভেম্বর মাসে স্বর্ণ মন্দির ও অকাল তখত-এর দখল নেয়। প্রায় ১০,০০০ পরিবর্তনকামী শিখেদের দল নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে ১৭৫ জনের একটা কমিটি গড়ে ‘শিরোমণি গুরদ্বার প্রবন্ধক কমিটি’ গঠন করে। একই সময় এটা মনে করা হয় যে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে চালিয়ে নিয়ে যেতে হলে একটা দল গঠন করা জরুরি, গঠিত হয় ‘শিরোমণি আকালি দল’। এর নেতৃত্ব থাকে মূলত জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবীদের হাতে যদিও মূল লড়াইয়ের অংশীদার ছিলেন শিখ কৃষকরা।
আকালিরা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন শুরু করলেও তারা অহিংস পথের পথিক ছিলেন। ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯২১ শেখরপুরা জেলায় (বর্তমানে পাকিস্তানে) নানকানা সাহিব (গুরু নানকের জন্মস্থান) গুরুদ্বারের উদ্দেশ্যে ভাই লক্ষ্মণ সিং ধারোওয়ালিয়ার নেতৃত্বে ১৫০ জন শিখের একটি জাঠা বেরোলে মোহান্ত নারায়ণ দাসের প্রায় ৫০০ অনুগামী তাদের ওপর ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। লক্ষ্মণ সিংকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা সেদিন দর্শকের ভূমিকায় ছিল। এই ঘটনা শিখদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং ‘বাব্বর আকালি’ আন্দোলনের জন্ম হয়।
আরও পড়ুন
বিরামকাল
মার্চ ১৯২১ – অহিংস পথ ছেড়ে যারা ব্রিটিশদের প্রতি অনুগত এবং টাকা ধার দেবার মহাজন ছিল তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার কথা যারা বললেন তারাই ‘বাব্বর আকালি’ নামে পরিচিত।। জলন্ধর এবং হোসিয়ারপুরে কিষাণ সিং এবং মোটা সিংয়ের নেতৃত্বে কর-বর্জন আন্দোলন শুরু হয়। এরপর ১৯ মার্চ ১৯২২ ব্রিটিশ চর ও পুলিশের ওপর প্রতিশোধ নেবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয় ‘চক্রবর্তী জাঠা’। ফেব্রুয়ারি–মার্চ ১৯২৩ নাগাদ প্রচুর পরিমাণে পুলিশের চর এঁদের হাতে মারা পড়ে। এবার ধরপাকড় শুরু হয় এবং ১৫ আগস্ট ১৯২৩-এ ৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। মামলা চলাকালীন দু’জন মারা যান, পাঁচজনকে প্রমাণাভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে আরো ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শেষ পর্যন্ত ৮ এপ্রিল ১৯২৪-এ ৯১ জনের বিরুদ্ধে লাহোরে মামলা শুরু হয়। মামলার রায় বের হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২৫। রায়ে পাঁচজনের ফাঁসির আদেশ হয়, এগারোজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৩৮ জনের নানা সময়ের মেয়াদে কারাদণ্ড হয়। মামলা চলাকালীন আরো তিনজন মারা যান। এই রায়ের আপিল মামলার ফলে হাইকোর্টের রায়ে ছয়জন বাব্বর আকালির ফাঁসি হয়, সতেরোজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একত্রিশজনের নানা সময়ের মেয়দি কারাদণ্ড ঘোষিত হয়। আবার আর একটি অতিরিক্ত বাব্বর আকালি মামলায় আরো ছয়জনের ফাঁসির আদেশ হয় এবং তেরোজনের যাবজ্জীবনের শাস্তি হয়। যাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তাঁদের সকলকেই আন্দামানে সেলুলার জেলে স্থানান্তরিত করা হয়।
আরও পড়ুন
মাফিনামা
মার্চ ১৯২৭-এ সরকারের তরফ থেকে ‘কালাপানি’তে দণ্ডিতদের প্রস্তাব দেওয়া হয় যাঁরা ইচ্ছুক তাঁরা তাঁদের পরিবারকে আন্দামানে নিয়ে যেতে পারে। বাব্বর আকালিরা ঘৃণাভরে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং প্রত্যেকেই আন্দামানে যেতে তাঁদের আপত্তির কথা জানান। কিন্তু এরপরে জোর করে তাঁদের আন্দামানে পাঠানো হয় এবং তাঁদের স্থান হয় কুখ্যাত সেলুলার জেলে। সেলুলার জেলে আবারও ফিরে আসে পুরনো ভারী কাজের দায়িত্ব বন্টন থেকে পুরনো অত্যাচারের দিনগুলি। রাজবন্দিদের জেলের বাইরে জঙ্গল পরিষ্কার, জমি সমান করার কাজে পাঠানো হয়। এঁদের অধিকাংশ কৃষক হলেও আন্দামানের চরম আবহাওয়া সহ্য করার ক্ষমতা এঁদের ছিল না। তাছাড়া খাটনি অনু্যায়ী পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা কম পরিমাণে খাবার দেওয়া হত যে কারণে অচিরেই রোগব্যাধি অবধারিত ছিল। বাইরে রোদে-জলে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন। এই কাজ করতে অস্বীকার করলে তাঁদের ওপর নেমে আসতে থাকে নির্জন কারাবাসের শাস্তি। এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দু’জন শিখ তাঁদের পরিবারকে এখানে আনিয়ে নিয়ে চাষবাস করতে রাজি হলেও অন্যান্যরা জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামেন। তাঁরা এই বলে হুঁশিয়ারি দেন যে বর্তমান আইন অনু্যায়ী একমাত্র যারা এখানে আসতে ইচ্ছুক, তাদেরই শুধুমাত্র নিয়ে আসা যায় এবং তাঁরা কেউই এখানে স্বেচ্ছায় আসেননি। তাই তাঁদের ভারতীয় জেলে ফেরত পাঠানো হোক।
আরও পড়ুন
মুক্তি এল অবশেষে
জেল কর্তৃপক্ষ কয়েদিদের কোনো কথা শুনতে রাজি নন। না তাঁরা রাজবন্দিদের আন্দামান থেকে ফেরাবেন, না তাঁরা ভালো ব্যবহার করবেন। আবারও জেলের মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দিল। বাব্বররা এবার সকলে মিলে ভুখা হরতাল শুরু করল। ২৮ দিন ধরে ধর্মঘট চলার পর কর্তৃপক্ষ তঁদের দাবি মেনে নিয়ে বাইরে কাজ করতে যাবার সময় রোদ ও বৃষ্টি থেকে বাঁচতে কাপড় বা কম্বল সঙ্গে করে নিয়ে যাবার অনুমোদন দিলেন এবং স্নানের জন্য মাথার তেল, চুল ও গা পরিষ্কার করার জন্য সাবান দিতে সম্মত হলেন। আর আশ্বাস দিলেন যে তাঁদের দেশের মাটিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করা হবে। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁদের সকলকে কলকাতায় আলিপুর জেলে ফিরিয়ে আনা হল। যে দু’জন শিখ তাঁদের পরিবারকে ওখানে আনিয়ে নিয়ে চাষবাস করছিলেন, ইতিমধ্যে তাঁরা মারা যাওয়াতে এই শিখ দলের সঙ্গে ফিরে আসলেন তাঁদের পরিবারও।
আরও পড়ুন
সাহসী প্রতিরোধ
১৯৩০। বর্মাতে শুরু হয় কৃষক আন্দোলন। সেইসময় বর্মা ভারতের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বার্মিজ কৃষকরা স্থানীয় জমিদার ও ইংরেজ সরকার ও তাদের দালালদের দ্বারা শোঁষিত হতে হতে সর্বহারায় পরিণত হয়েছিল। এদের অনেকেই কৃষিক্ষেত্র থেকে উৎখাত হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি বা শহরে গিয়ে মজুরের কাজ করতে বাধ্য হয়। মেয়েরা দাসীবৃত্তি বা পতিতাবৃত্তিতে নাম লেখায়। প্রথমে ১৯২৮ সালে ডাঃ সয়াসনের নেতৃত্বে নবগঠিত বর্মার একমাত্র রাজনৈতিক সংগঠন ‘জেনারেল কাউন্সিল অফ বার্মিজ অ্যাসোসিয়েশন’এর মাধ্যমে আবেদন-নিবেদনের মাধ্যমে কিছু সু্যোগ-সুবিধা আদায়ের জন্য চেষ্টা করা হয়। পরে এই সংগঠন বৈপ্লবিক দিকে মোড় নিল। ডাঃ সয়াসেন দাবি করলেন – বর্মার জনসাধারণের পূর্ণ স্বাধীনতা, কৃষকদের বন্ধকি জমি ফেরত ও সমস্ত রকমের কৃষি ঋণ মকুবের নিশ্চয়তা এবং রেল ও জাহাজে স্থানীয় যুবকদের চাকরিতে সংরক্ষণ। তিনি ও তাঁর সংগঠন বার্মাতে থারাওয়ারডি নামক বনাঞ্চলে ঘাঁটি তৈরি করে গেরিলাযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকলেন। ওই বছর ডিসেম্বরে সয়াসেন বিপ্লবী সরকারের পতাকা তুললেন। বর্মার এই কৃষক বিদ্রোহ ‘থারাওয়ারডি বিদ্রোহ’ নামে খ্যাত। কৃষকরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ যুদ্ধ ঘোষণা করে থারাওয়ারডি শহর সাতদিন নিজেদের দখলে রেখেছিল। থারাওয়ারডির কৃষকরা শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে ইংরেজ সেনাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। সারা ব্রহ্মদেশ জুড়ে বিপ্লবের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে দেখে ইংরেজ সেনাবাহিনী গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিল, কামানের মুখে উড়িয়ে দেওয়া হল ঘরবাড়ি। খুন, ধর্ষণ, লুঠতরাজ আর বিপ্লবীদের ধরতে পারলে তাদের মাথা কেটে সদর রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখার মতো নৃশংস ঘটনাও ঘটাতে লাগল বীর ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। চার বছর পরে ডাঃ সয়াসেনকে বন্দি করে বিচারের প্রহসন শেষে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হল। এরপর ২৭৪ জন বিপ্লবীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫৩৫ জনকে দ্বীপান্তরের সাজা শুনিয়ে আন্দামানে চালান করা হয়।
Powered by Froala Editor