পুজো আসছে। নদীপাড়ে দুলে উঠবে কাশফুল। এ দৃশ্য গোটা বাংলায় পরিচিত। অথচ সে নদীর যদি পাড়ই না থাকে, তাহলে কোথায় জন্মাবে কাশফুল! ক্রমশ হারিয়ে যাবে নয়নাভিরাম এই দৃশ্য। তবুও মানুষের শেষ ভরসা হলেন ভগবান, আর এই ভগবানের ওপর আস্থা রেখেই নদীভাঙন আটকাবার জন্য পাড়ে অস্থায়ী মণ্ডপ বানিয়ে দেবীর আরাধনা করেন গ্রামবাসীরা।
সেচ দপ্তর, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ কোচবিহার জেলাত মেখলিগঞ্জ ব্লকের সারোহাটি এলাকার গ্রামবাসীদের। গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে জলঢাকা নদী। এই নদীতে সারাবছর জল না থাকলেও বর্ষায় ফুলে ফেঁপে ওঠে। আর জল সরে যেতেই ভাঙতে থাকে নদীর পাড়। বর্ষার পরেই আসে শরৎ। ভাঙন ঠেকাতে পাড়েই মণ্ডপ বানিয়ে প্রতি বছর পুজোয় মেতে ওঠেন এলাকাবাসীরা।
একরাশ চিন্তা নিয়েই পুজো কাটান সারোহাটি, ধুলিয়া খালিসা, উছলপুকুরি, রানিরহাট সহ অনান্য গ্রামের বাসিন্দারা। প্রত্যেক বছরেই ব্যাপক আতঙ্কে ভোগেন এলাকার লোকজন। তাঁদের আশঙ্কা, বর্ষা পেরিয়ে যাওয়ায় নদীর জলস্তর কমছে। জলস্তর কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভাঙনের তীব্রতা। তাদের অভিযোগ, ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে বেশ কিছু বসতবাড়ি নদীগর্ভে চলে যেতে পারে।
প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি বলে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের কথায় প্রশাসন কবে গুরুত্ব দেবে, তা অজানা। তাই এলাকার মানুষজনের কাছে আগামীদিনে দেবতাই ভরসা। মণ্ডপে মণ্ডপে যখন ভিড় উপচে পড়বে শহরগুলিতে, তখন এরকমই এক অন্যরকম পুজো কাটাবেন কয়েকশো মানুষ।