শোনা যায় একসময় নাকি এই বাংলাতেই শুষ্ক অঞ্চলে মজে যাওয়া পুকুরে ধানচাষের প্রচলন ছিল। কিন্তু তা বলে ধানের জমিতেই মাছচাষ? তাও কি সম্ভব? এই প্রশ্নটাই এসেছিল স্বপন বাউড়ির মনেও। কিন্তু ক্রমশ কাজ শুরু হতেই তাঁর মনে আত্মবিশ্বাস এসে গিয়েছে। এবং এখন যথেষ্ট লাভের আশাই করছেন তিনি। পুরুলিয়া জেলার নিতুরিয়া ব্লকের কৃষক স্বপন বাউড়ি এই প্রথম এমন উদ্যোগ নিলেন। যদিও পশ্চিমবঙ্গে এই উদ্যোগ প্রথম নয়। এর আগেও দুই জেলায় সাফল্য মিলেছে।
মাছ চাষের জন্য যদিও সাধারণভাবে গভীর জলাশয়ের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে তেমনই জমির পাশে ১০ ফুট চওড়া এবং ৬ ফুট গভীর হাপা খনন করা হয়েছে। সকালে রোদের তেজ বাড়লে মাছ এখানেই শীতলতার জন্য আসবে। কিন্তু বিকেলের পর মাছের চরে বেড়ানোর ক্ষেত্র হবে ধানের জমিই। এমনকি ধানের গোড়ায় বাসা বাঁধা ফাইটো ও জুপ্ল্যাংকটন থেকেই মাছের খাবারের জোগানও হবে। আর এর ফলে জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে ধানের চাড়াও। যদিও এই জমিতে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না। তবে সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ জৈব সার এবং কীটনাশক দিতে হবে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের অনুরোধে পুরুলিয়া জেলায় এই কাজ প্রথম শুরু করেছেন স্বপন বাউড়ি। তবে কৃষি দপ্তরের অধিকর্তারা জানিয়েছেন ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা এবং মালদা জেলায় অনুরূপ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে লাভ পাওয়া গিয়েছে। রাজ্য সরকারের আত্মা প্রকল্পের আওতায় এভাবেই কৃষিকাজে বিপ্লব ঘটবে বলে আশা করছেন আধিকারিকরা।
পুরুলিয়ার শুষ্ক আবহাওয়ায় এতদিন মাছচাষ প্রায় সম্ভব হত না। ধান চাষেও লাভ সামান্যই হত। এই প্রকল্প সাফল্য পেলে আগামী দিনে যে আরও অনেক কৃষক লাভের মুখ দেখবেন, সেকথা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন
বিস্মৃতির অতলে সিরাজউদ্দৌলার প্রাসাদ; নদীগর্ভে বিলীন, না লুকিয়ে আছে চাষের জমিতেই?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বন্ধ্যা জমিতে জীবনদান, ৩৫০০ গাছ লাগিয়েছেন ৮০ বছরের বৃদ্ধ