ব্যাঙ্গালোরের ফার্মাসিউটিক্যাল ও পেস্টিসাইড কোম্পানিগুলির রিসার্চ সেন্টার। কী থাকে সেই রিসার্চ সেন্টারগুলিতে? খুব মৃদু আলোর ছোট-ছোট খাঁচা। তার ভিতরেই থাকে অগুনতি কুকুর। ওইটুকু খাঁচাতেই তাদের খাওয়া দাওয়া ও মলমূত্র ত্যাগের ব্যবস্থা। শুধু মানুষই নয়, অন্য কোনো প্রাণীরও সংস্পর্শ পায় না তারা। রিসার্চের জন্য প্রথমে ব্যবহৃত হয় খরগোশ বা অন্য কোনো ছোট আকৃতির প্রাণী। তাদের ওপর প্রয়োগ করা পেষ্টিসাইড সফল হলে তা প্রয়োগ করা হয় কুকুরদের ওপর। যেহেতু এই শিকারি কুকুরের প্রজাতিগুলি অনুগত ও নিরীহ ও প্রায় ১০-১২ কেজি ওজনের হয়, তাই এরাই পেস্টিসাইড প্রয়োগের জন্য আদর্শ। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পেস্টিসাইড প্রয়োগ সফল হলেও তারা পরবর্তীতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের যন্ত্রণাহীন পদ্ধতিতে মেরে ফেলা হয়।
হ্যাঁ, এমনই অবস্থা হয় আমাদের সবার প্রিয় এই পশুগুলির।
২০১৫ সালে একটি আইন পাস করানো হয়। সেখানে বলা হয়, একটি রিসার্চ পরীক্ষার পরে অথবা একটি কুকুরের তিন বছর হওয়ার পরে তাকে পুনর্বাসন দিতে হবে।
২০১২ সালে চিন্তানা গোপীনাথ একটি শিকারি কুকুরকে দত্তক নেন কম্পেশন আনলিমিটেড প্লাস অ্যাকশনের (CUPA) মাধ্যমে। এরপর যখন ২০১৬-তে ব্যাঙ্গালোরের আরেকটি রিসার্চ কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায় তখন চিন্তানা ২৫০টি শিকারি কুকুরের দায়িত্ব নেন। এরপর তিনি শুরু করেন ‘ফ্রিগেলস অব ইন্ডিয়া’ প্রতিষ্ঠান যা শুধু রিসার্চের কাজে ব্যবহৃত কুকুরদের পুনর্বাসনই দেয় না, তাদের দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থাও করে। এই কাজে তার চিন্তানার সঙ্গে যুক্ত হযন অবন্তী আগরওয়াল।
এখন অবধি প্রায় ৪৬৫টি কুকুরকে পুনর্বাসন দিয়েছে এই প্রতিষ্ঠান। ব্যাঙ্গালোরের পর পুনে, হায়দ্রাবাদ, আহমেদাবাদ ও বদোদরাতেও শাখা খুলেছে ফ্রিগেলস অব ইন্ডিয়া। এভাবেই নিজেদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন চিন্তানা আর অবন্তী। এগোচ্ছে মানবতাও।