কলকাতায় গত সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে অ্যান্টিজেন টেস্ট। এখনও অবধি এক সপ্তাহও হয়নি। তার মধ্যেই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে দিল এই ক’দিনের অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট। মহানগরীর ৭০ শতাংশ করোনা রোগীর মধ্যে করোনার উপসর্গ অনুপস্থিত। এমনকি অনেকে আক্রান্ত হয়ে টেস্টও করাচ্ছেন না বলেই দাবি করেছেন স্বাস্থকর্মীদের একাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭১৬ জন মানুষ। এদিন মারা গেছেন ৫৩ জন। ফলে অব্যহত দৈনিক মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ। তবে আক্রান্তের সংখ্যার এই বৃদ্ধির পিছনে একদিকে শাপে বরের মত কাজ করছে অ্যান্টিজেন টেস্ট। অ্যান্টিজেন টেস্টে দ্রুত রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে বলেই অনেকে মৃদু উপসর্গ দেখা দিলেও টেস্ট করাচ্ছেন। তাতে ধরা পড়ছে ভাইরাস। চিহ্নিত করা সহজ হচ্ছে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও। উপসর্গহীনদের মাধ্যমে দৃষ্টির অগোচরে নীরবেই করোনার সংক্রমণ হয়েছে এতদিন। অ্যান্টিজেন টেস্টে এখন রুখে দেওয়া গেছে সংক্রমণের সেই পথ।
সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে অ্যান্টিজেন টেস্টে ১০০ জনের মধ্যে ১৯ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। যার মধ্যে উপসর্গহীন ১৬ জন। এছাড়াও স্বাস্থ্য আধিকারিকদের আশঙ্কা, নেগেটিভ আসা ব্যক্তিদেরও আরটিপিসিআর টেস্ট করলে পজিটিভ আসতে পারে রিপোর্ট। পরিসংখ্যানের নিরিখে উত্তর কলকাতার থেকে দক্ষিণ কলকাতাতেই বেশি মিলছে উপসর্গহীন রোগী।
স্বাস্থ্যপ্রশাসকের দাবি, যাঁরা অন্যরোগেও আক্রান্ত তাঁদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়ছে জীবনের। অনেকক্ষেত্রেই বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না এই ধরণের রোগীদের। তাছাড়া রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি মোটামুটি স্থিতিশীল। গত কয়েকদিনের রিপোর্টের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একটি সমীক্ষা থেকে উঠে আসে অনেকে আক্রান্ত হয়েও টেস্ট করাচ্ছেন না। বরং বাড়িতেই সাধারণ ফ্লু-য়ের ওষুধ বা অন্যান্য আক্রান্তদের প্রেসকিপশনের ওষুধ খেয়েই সেরে উঠছেন বিশ্রামের মাধ্যমে। বিষয়টি নজরেই আসছে না অনেকক্ষেত্রে।
গত কয়েকদিনে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বেশ খানিকটা বাড়ানো হয়েছে। সোমবারও টেস্ট করানো হয় ২২ হাজার মানুষের। পুরসভার বিভিন্ন প্রান্তেই করা হয়েছে অ্যান্টিজেন টেস্টের ক্যাম্প। পাশাপাশি ব্যবস্থা করা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ অ্যাম্বুলেন্সেরও। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হচ্ছে হাসপাতালে। এর মধ্যে পজিটিভ আসা ব্যক্তিদের ৬০-৭০ শতাংশই উপসর্গহীন। যাঁদের চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছিল না আগে। অন্যদিকে এই ঘটনা আরও একটি ব্যাপারের সূচক। উপসর্গহীনদের আধিক্য প্রমাণ করছে শহরের বেশিরভাগ মানুষই ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন। এবং তাঁদের মধ্যে তৈরি হয়েছে প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাই দ্রুত বাড়ছে সুস্থতার হারও...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
করোনা সংক্রমণ লাগামহীন রাজ্যে, সাপ্তাহিক দু’দিন লকডাউনের সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত?