করোনার প্রভাবে বদলাচ্ছে হস্তাক্ষর, প্রায় সকলের লেখাই যেন আঁকাবাঁকা; জানাচ্ছে সমীক্ষা

অনেকদিন পর আবার ক্রমশ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে মানুষের জীবন। এমন সময় জরুরি নানা কাজ, মানে যেখানে সই করে মেলাতে হয়; সেইসব কাজে যাওয়ার আগে একটু মিলিয়ে নেবেন আপনার হাতের লেখাটা ঠিক আগের মতো আছে তো? নাকি অনেকটা বদলে গিয়েছে? অবাক হচ্ছেন নিশ্চই! কিন্তু সমীক্ষা বলছে এই লকডাউনের সময়ে বেশিরভাগ মানুষের হাতের লেখাই বদলে গিয়েছে। আর এক্ষেত্রেও সৌজন্যে সেই করোনা ভাইরাস।

ঠিক ভাইরাসের সংক্রমণের কোনো উপসর্গ না হলেও, বদলাচ্ছে মানুষের হস্তাক্ষর। অন্তত তেমনটাই জানাচ্ছেন গ্রাফোলজিস্টরা। গ্রাফোলজিস্ট মোহন বসুর নেতৃত্বাধীন দলটি জানিয়েছে, ২২ থেকে ৬২ বছর বয়সের অন্তত ২০০ জন মানুষের করোনা-পূর্ববর্তী হস্তাক্ষরের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা গেছে সামগ্রিকভাবে একটা দিশাহীন মানসিকতাই যেন ফুটে উঠছে সব ক্ষেত্রে। কিন্তু এর কারণ কী? মোহন বসুর মতে, যে আতঙ্কের পরিবেশ আমাদের সবসময় ঘিরে রাখছে, তার প্রভাব পড়ছে মনঃস্তত্ত্বে। আর আসলে আমরা যাকে ‘হ্যান্ড রাইটিং’ বলি, সেটা কিন্তু ‘ব্রেইন রাইটিং’। অর্থাৎ মস্তিষ্ক তার নানান জটিলতার ছাপ রাখে হাতের লেখাতেও। মনের মধ্যে যখন একাধিক দুশ্চিন্তা ভিড় করে তখন হাতের লেখাও দিশাহীন আঁকাবাঁকা হয়ে পড়ে।

ক্লিনিক্যাল গ্রাফোলজিস্ট স্বপনকুমার চন্দ্র জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতির অস্থিরতা এবং অবসাদ মানুষের হাতের লেখাতেও ছাপ ফেলতেই পারে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে কেবলমাত্র হাতে গোনা কিছু মানুষের হস্তাক্ষর বদলায়নি। তাঁরা হয় ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত নিশ্চিন্ত, অথবা মনের দিক থেকে অনেকটাই শক্ত। তবে এখন প্রশ্ন থেকে যায়, এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কি আবারও পুরোন ছন্দে ফিরে আসবে হস্তাক্ষর? এই প্রশ্নের অবশ্য সঠিক কোনো উত্তর নেই বিষেষজ্ঞদের কাছে। সাধারণ দুশ্চিন্তা হলে দ্রুত আবার স্বাভাবিক হস্তাক্ষর ফিরে আসাই স্বাভাবিক। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী ট্রমায় পরিণত হলে তার প্রভাব অনেকদিন থেকে যেতে পারে বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা। তবে তার জন্য আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া প্রয়োজন। আর সেদিনের অপেক্ষাতেই তাকিয়ে আছেন সবাই।

Powered by Froala Editor