আজ থেকে প্রায় ৩৮ বছর আগের কথা। ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রকি মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্কে তিন রাতের পর্যটন সফরে বেরিয়েছিলেন কলোরাডোর বাসিন্দা রুডি মোডার। কিন্তু সপ্তাহ খানেক পেরিয়ে যাওয়ার পরেও, তাঁর হদিশ না পেয়ে পুলিশের কাছে দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর রুমমেট। সন্ধান চলেছিল গোটা কলোরাডো প্রদেশজুড়ে। রুডির তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ, প্যাকেটজাত খাবারের হদিশ মিললেও, খোঁজ মেলেনি তাঁর দেহাবশেষের। শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে তাঁকে ‘নিখোঁজ’ বলে ঘোষণা করেছিল মার্কিন পুলিশ। এবার প্রায় চার দশক পর রকি মাউন্টেনেই (Rocky Mountain) খুঁজে পাওয়া গেল রুডি মোডারের (Rudi Moder) দেহাবশেষ। নেপথ্যে অস্বাভাবিক তুষারপাত এবং ভয়াবহ দাবানল।
হ্যাঁ, অবাক লাগলেও সত্যি। প্রাকৃতিক দুর্যোগই খুঁজে দিল এক যুগ পুরনো রহস্যের সূত্র। গত বছর তুষারাবৃত রকি মাউন্টেন থেকেই প্রথম একদল অভিযাত্রী খুঁজে পেয়েছিলেন মানবকঙ্কাল। কিন্তু তখন চিহ্নিতকরণ সম্ভব হয়নি সেটির। এবার দাবানলবিধ্বস্ত অরণ্য পরিদর্শনে গিয়ে ফরেস্ট রেঞ্জাররা হদিশ পেলেন রুডি মোডারের ব্যবহৃত বেশ কিছু সামগ্রীর। যা পরোক্ষাভাবে প্রমাণ দিল বছর খানেক আগে খুঁজে পাওয়া দেহাবশেষটি আসলে তাঁরই।
২৭ বছর বয়সী রুডি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা হলেও, আদতে ছিলেন জার্মান নাগরিক। কর্মসূত্রে তাঁর চলে আসা কলোরাডো প্রদেশে। পর্বতারোহন ছিল তাঁর নেশার মতোই। কম ছিল না অভিজ্ঞতাও। কিন্তু কার সাধ্য আছে দুর্ঘটনাকে এড়ানোর? ফরেস্ট রেঞ্জারদের অনুমান, স্কি করার সময় ভয়াবহ তুষারধ্বস বা আইস অ্যাভাল্যাঞ্চের সম্মুখীন হয়েছিলেন রুডি। চাপা পড়ে যান কয়েক ফুট পুরু তুষারের চাদরে। সেখান থেকে ফিরে আসা আর সম্ভব হয়নি তাঁর।
সম্প্রতি, রকি মাউন্টেনেই রুডির একাধিক সামগ্রী খুঁজে পান বনদপ্তরের আধিকারিকরা। তার মধ্যে রয়েছে তাঁর এক পায়ের বুটজুতো, স্কি বোর্ড। ইতিমধ্যেই সেগুলি পাঠানো হয়েছে এফবিআই দপ্তরে। সেখান থেকে ডিএনএ-র নমুনা সংগ্রহ করে তা মিলিয়ে দেখা হবে বছর খানেক আগে খুঁজে পাওয়া নরকঙ্কালের সঙ্গে। এর আগে সেটিরও বিস্তারিত পরীক্ষা করেছিলেন এফবিআই এজেন্টরা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিকের সঙ্গেই সেই ডিএনএ-র মিল পাওয়া যায়নি। এবার যেন হারানো পাজলের নিরুদ্দেশ হওয়া ছকটাই জুটিয়ে দিল সাম্প্রতিক আবিষ্কার…
আরও পড়ুন
সন্ধানে ধন্ধায় সকলে!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বয়স ২ লক্ষ বছর; পৃথিবীর প্রাচীনতম শিল্পকীর্তির সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা?